করোনায় পাসপোর্ট তৈরি ও বিতরণে ধীরগতি, অপেক্ষায় লাখো আবেনকারী - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

করোনায় পাসপোর্ট তৈরি ও বিতরণে ধীরগতি, অপেক্ষায় লাখো আবেনকারী














কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে পাসপোর্ট অধিদফতরের কার্যক্রম থেমে না থাকলেও চলছে ধীর গতিতে। শুধু নবায়নকারীদের পাসপোর্ট আবেদন গ্রহণ ও তৈরির কাজ চললেও নেওয়া হচ্ছে না নতুন পাসপোর্টের আবেদন। এছাড়া সাধারণ ছুটি ঘোষণার আগে নেওয়া প্রায় ২ লাখ নতুন আবেদনকারীর পাসপোর্ট সরবরাহ করা হবে কি না সে ব্যাপারেও কোনো সমাধানে আসতে পারেনি পাসপোর্ট অধিদফতর।

ইমিগ্রেশন অ্যান্ড পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ জানান, করোনাভাইরাসের কারণে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভাগাভাগি করে অফিস করতে বলা হলেও পাসপোর্ট অফিসের সবাই একসঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। তারপরও কাজ শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি আরও জানান, এরই মধ্যে বিমান ও সাগরপথে প্রায় ৪ লাখ এমআরপি পার্সপোর্ট বই আনা হয়েছে। পাসপোর্ট ইস্যু ও বিতরণের কাজ অব্যাহত রয়েছে। সারাদেশেই এসব পাসপোর্ট বিতরণের কাজ চলছে। এমনকি মালদ্বীপ, কুয়েত ও মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে পাসপোর্ট পাঠানো হয়েছে।

সাকিল আহমেদ বলেন, ‘করোনা শুরুর পর (এপ্রিলের শুরু থেকে) আর কোনো নতুন পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ করা হয়নি। যেগুলো নেওয়া হয়েছে পাসপোর্ট নবায়নের জন্য। সেগুলোই মূলত তৈরি ও বিতরণ করা হচ্ছে। কবে নাগাদ নতুন পাসপোর্ট বিতরণ ও নতুন আবেদন গ্রহণ করা হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। সবকিছু নির্ভর করবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া ও সরকারি নির্দেশের ওপর।’

পাসপোর্ট অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, নতুন পাসপোর্ট আবেদন গ্রহণের পর বেশির ভাগেরই ছবি তোলা ও আঙুলের ছাপ নেওয়া সম্ভব হয়নি। আবার যাদের ছবি ও আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া হয়েছে তাদের পুলিশ ভেরিফিকেশন করা হয়নি। এসব কারণে পাসপোর্ট তৈরির কাজ আটকে আছে। আর সেজন্যই প্রায় ২ লাখ আবেদনকারীর পাসপোর্ট তৈরি ও বিতরণ সম্পর্কে কর্মকর্তারা কিছুই বলতে চাইছেন না।’

পাসপোর্ট অফিস সূত্র জানায়, রি-ইস্যু বিশেষ করে হারানো পাসপোর্ট, মেয়াদ শেষ ও ভুল সংশোধনের জন্য আবেদন গ্রহণ করা হলেও পাসপোর্ট তৈরি ও বিতরণে অনেকটা ধীর গতি রয়েছে। করোনা আতঙ্কের কারণে মূলত এমনটা হচ্ছে। সবকিছু সতর্কতার সাথে করতে হচ্ছে। এতকিছুর পরও অধিদফতরের বেশ কয়েকজন কর্মকতার করোনাভাইরাস পজিটিভ ধরা পড়েছিল। চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে আবার তারা কাজে যোগ দিয়েছেন। এরপর থেকে সবাই আতঙ্কের মধ্যে থেকেই কাজ করছে। আগে একদিনে যা কাজ হতো এখন কয়েকদিন লাগে সেই কাজ শেষ করতে।

এ ব্যাপারে পাসপোর্ট আবেদনকারী আব্দুল হামিদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর আগের সপ্তাহে সংশোধনী চেয়ে যাত্রাবাড়ী অফিসে পাসপোর্টের আবেদন করা হয়। এর এক সপ্তাহের মধ্যে পাসপোর্ট দেবে বলে স্লিপে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু প্রায় তিন মাস হলেও পাসপোর্ট হাতে পাইনি। আমার ছবি তোলা ও আঙুলের ছাপ কিছুই লাগেনি। শুধু সংশোধন করে পাসপোর্ট রিইস্যু হবে, সেটাই হচ্ছে না। আমার জরুরি দরকার। চায়নিজ অ্যাম্বাসিতে পাসপোর্ট শো করাতে হবে।’

অন্যদিকে, দীর্ঘ অপেক্ষার পর ই-পাসপোর্ট চালু হলেও করোনার কারণে সেটিও বন্ধ রয়েছে। এমনকি যারা করোনার আগে ই-পাসপোর্টের আবেদন করেছিলেন তাদের বেশিরভাগই পাসপোর্ট হাতে পাননি। তারাও অপেক্ষায় আছেন সেই স্বপ্নের পাসপোর্ট কবে হাতে পাবেন।







জানতে চাইলে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক (প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল মদমুন বলেন, ‘যেখানে নিয়মিত এমআরপি পাসপোর্ট আবেদন গ্রহণ, তৈরি ও বিতরণ বন্ধ আছে সেখানে ই-পাসপোর্টের চিন্তাই আসে না। সব কিছু আবার আগের মতো স্বাভাবিক চলবে যদি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এর বাইরে সরকার নতুন করে কোনো নির্দেশনা জারি করলে নতুন পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ করা হবে।

তবে জানা গেছে, আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে কিছুটা কার্যক্রম চললেও আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস বিশেষ করে যাত্রাবাড়ী, সচিবালয়, ক্যান্টনমেন্ট ও উত্তরা অফিসে তেমন কোনো কার্যক্রম নেই। দুই একজন রিইস্যু আবেদন জমা দিলেও দীর্ঘ সময়ের জন্য ডেলিভারি ডেট দেওয়া হচ্ছে। আবার অনেকে উল্লেখিত তারিখে গিয়েও পাসপোর্ট হাতে পায়নি।

উত্তরা পাসপোর্ট অফিসে গত রোববার (২১ জুন) সকালে পাসপোর্ট প্রত্যাশি শমসের উদ্দিনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘গত ১৬ এপ্রিল পাসপোর্ট রি-ইস্যুর আবেদন করেন। ৩০ এপ্রিল পাসপোর্ট পাওয়ার কথা থাকলেও ২১ জুনে এসেও তাকে পাসপোর্ট না পেয়ে ফিরতে হচ্ছে।

কোন মন্তব্য নেই