প্রতিবাদের মাঝেও ধর্ষণের শিকার ৬ শিশুসহ ১৪ জন
সাভার ও আশুলিয়ায় চার শিশু ও এক নারীকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৭
ঢাকার সাভার ও আশুলিয়ায় পৃথক স্থানে চারটি শিশু ও এক গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আশুলিয়ায় গত ৬ অক্টোবর তিন শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে হেলাল উদ্দিন শেখ (৫৭) নামের এক ব্যক্তিকে, আশুলিয়ায় এক গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে পাঁচজনকে এবং সাভারের নামা গেণ্ডায় ১২ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে জিয়ারুল নামের এক ব্যক্তিকে বৃহস্পতিবার রাতে আটক করেছে পুলিশ।
ভুক্তভোগী পরিবারের বরাতে আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক জয়ন্ত কুমার সাহা জানান, আশুলিয়ার তৈয়বপুরের উত্তর মোল্লাপাড়ায় বাড়িওয়ালা হেলাল উদ্দিন শেখ ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের ছয়ানী রসুলপুর গ্রামের মৃত ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে। তৈয়বপুরে তাঁর বসবাস। গত ৬ অক্টোবর তিনি এক শ্রমিক দম্পতির দুই মেয়েশিশু ও আরেক শিশুকে মজাদার খাবার কিনে দেওয়ার কথা বলে তাঁর ঘরে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে হেলাল ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালান।
আশুলিয়ায় গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে আটককৃতরা হলেন রাজশাহীর রাজপাড়া থানার শ্রীরামপুর গ্রামের মোহাম্মদ শেখের ছেলে সাইফুল ইসলাম (১৮), আশুলিয়ার রুস্তমপুরের কৃষ্ণ সাহার ছেলে পাপ্পু সাহা (১৯), একই এলাকার মনোরঞ্জন সাহার ছেলে মিলন (২২), সনাতন সাহার ছেলে জ্যোতির্ময় সাহা (১৯) এবং অদম সরকারের ছেলে অন্তর (২০)।
পুলিশ জানায়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর এক পূর্বপরিচিত গৃহবধূকে ঢাকার মিরপুর থেকে রুস্তমপুরে ডেকে আনেন সাইফুল। পরে তাঁকে এলাকার জঙ্গলে নিয়ে সাইফুলসহ সাত বন্ধু ধর্ষণ করেন। গৃহবধূ প্রথমে রাজধানীর দারুস সালাম থানায় ও পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আশুলিয়া থানায় অভিযোগ করেন। আটককৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। নির্যাতিত পাঁচজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ও আটককৃতদের গতকাল শুক্রবার আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
চট্টগ্রামে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ৮
চট্টগ্রাম নগরের মৌলভী পুকুরপাড় এলাকায় এক নারীকে (২২) রিকশা থেকে নামিয়ে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের অভিযোগে এক নারীসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এলাকার এক গলিতে এ ঘটনা ঘটে।
নগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন জাহাঙ্গীর আলম, ইউসুফ, রিপন, সুজন, দেবু বড়ুয়া প্রকাশ জোবায়ের, শাহেদ, রিন্টু দত্ত প্রকাশ বিপ্লব ও মনোয়ারা বেগম। জাহাঙ্গীর, ইউসুফ, বিপ্লব ও দেবু পেশায় অটোরিকশাচালক।
বিজয় বসাক বলেন, ‘ভিকটিম নারী বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে রাঙ্গুনিয়ার গ্রামের বাড়ি থেকে চট্টগ্রাম শহরে নিজ বাসার উদ্দেশে সিএনজি অটোরিকশাযোগে রওনা হন। রাত ১১টার দিকে কাপ্তাই রাস্তার মাথায় অটোরিকশা থেকে নেমে বাসার উদ্দেশে রিকশায় ওঠেন। পথে মৌলভী পুকুর এলাকায় ৮-১০ জন তাঁকে রিকশা থেকে নামিয়ে টেনেহিঁচড়ে আরকান সড়কের মৌলভী পুকুর পারের একটি গলিতে ডাস্টবিনের পাশে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে ভিকটিমকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখান থেকে চান্দগাঁও থানায় ঘটনাটি জানানো হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী থানায় মামলা করেছেন।’
গ্রেপ্তার দেবু বড়ুয়া বলেন, ‘পুলিশের সোর্স সুমন এই ঘটনার হোতা। আমরা একই স্ট্যান্ডে সিএনজি চালাই। করোনার সময় গত দুই মাস আগে ওই নারী আমাদের এক বন্ধুর কাছ থেকে দুই হাজার টাকা নিয়ে যান। বৃহস্পতিবার রাতে কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় ওই নারীকে দেখে সুমন আমাদের ডাক দেয়। পরে আমরা তার সঙ্গে আসি। মৌলভী পুকুর পার এলাকায় আমরা ওই নারীকে আটকিয়ে সেই টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করি। তখন তাঁর সঙ্গে একটি ছেলে ছিল। টাকার জন্য আমরা তাদের মারধর করে বাসায় চলে যাই। সকালে সুমন রাতের বিষয়ে কথা বলবে বলে বাসায় পুলিশ নিয়ে আসে। এরপর পুলিশ এসে আমাকে ধরে নিয়ে যায়।’
তবে বিজয় বসাক বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত হয়েই তাদের গ্রেপ্তার করেছি। ভিকটিম মহিলাকে আমরা ছবিগুলো দেখিয়েছি।’
বাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ
যশোর সদর উপজেলার বকচর এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে এমকে পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে এক তরুণী যাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মনিরকে আটক করা হয়েছে। একইসঙ্গে পাঁচ পরিবহন শ্রমিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পুলিশ বলছে, এটি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা নয়। তবে বাসটি জব্দ ও ভুক্তভোগী তরুণীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
তরুণী সাংবাদিকদের জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী থেকে যশোরে আসার উদ্দেশে তিনি বাসে ওঠেন। এরপর ঘুমিয়ে পড়েন। পরে তাঁকে বাসে তিনজন ধর্ষণ করেন।
নলছিটিতে অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগ
ঝালকাঠির নলছিটিতে এক তরুণীকে অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে পাঁচ যুবকের নামে মামলা করেছেন মেয়েটির মা। পুলিশ জানায়, নলছিটি শহরের ফেরিঘাট এলাকার নাসির হাওলাদারের ছেলে হাসান হাওলাদারের সঙ্গে ওই তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত বুধবার সন্ধ্যায় হাসানের কথায় মেয়েটি দেখা করতে বাসার সামনে বের হন। তখন হাসান তাঁকে জোর করে কপালবেড়া গ্রামে আত্মীয় জনি সিকদারের বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এতে সহযোগিতা করেন জনি সিকদার, রাব্বি, নাঈম ফকির ও সাব্বির।
বন্ধুকে দিয়ে স্ত্রীকে ধর্ষণ! স্বামী গ্রেপ্তার
জামালপুরের বকশীগঞ্জের নিলাক্ষিয়া ইউনিয়নের বিনোদের চর গ্রামে গত বুধবার রাতে বন্ধুকে দিয়ে নিজের স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার আসামিকে গতকাল গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রধান আসামি গ্রেপ্তারকৃতের বন্ধু মোশারফ পলাতক। ভুক্তভোগী বৃহস্পতিবার রাতে বকশীগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন।
ভুক্তভোগী আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই