মামলায় হেরে গিয়ে আদালত চত্বরে যুবকের আত্মহত্যা - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

মামলায় হেরে গিয়ে আদালত চত্বরে যুবকের আত্মহত্যা


 স্ত্রী-সন্তানকে অনেক বেশি ভালোবাসতেন হবিগঞ্জ শহরের কামড়াপুর এলাকার হাফিজুর। ৮ মাসের ফুটফুটে সন্তান আরফিনকে নিয়ে ভালোই চলছিল তাদের সংসার। কিন্তু এরই মাঝে সংসারে দেখা দেয় মনোমালিন্য। একপর্যায়ে স্ত্রী বুশরা চলে যান বানিয়াচংয়ে বাবার বাড়িতে । আত্মীয়স্বজনদের দ্বারস্থ হয়ে অনেক চেষ্টায়ও ফেরাতে পারেননি তাকে। একপর্যায়ে স্ত্রী-সন্তানকে ফিরে পেতে আদালতে মামলা করেন হাফিজুর। এতেও শেষ রক্ষা হয়নি তার। আদালতে হাজির হয়ে স্ত্রী বুশরা জানালেন তিনি স্বামীর বাড়িতে আর ফিরবেন না।

এ প্রেক্ষিতে আদালত রায় নির্দেশ প্রদান করেন বুশরা তার বাবার জিম্মায় থাকবেন। স্ত্রী-সন্তান হারানোর কষ্ট সইতে না পেরে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তিনি। মামলার রায় ঘোষণার পর আদালতের বারান্দায়ই নিজের বুকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেন হাফিজুর। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান হাফিজুর। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে গতকাল দুপুরে হবিগঞ্জের আদালত পাড়ায়।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কামড়াপুর গ্রামের নুর মিয়ার ছেলে হাফিজুর কয়েক বছর পূর্বে বানিয়াচং উপজেলার খাগাউড়া গ্রামের আব্দুল খালেকের মেয়ে বুশরা বেগম (২৫) কে বিয়ে করেন। তাদের একটি সন্তানও রয়েছে। এরইমধ্যে তাদের মধ্যে পারিবারিক বিষয়াদি নিয়ে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে তা প্রকট আকার ধারণ করলে বুশরা বাবার বাড়ি চলে যান। এরপর থেকে অনেকটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন হাফিজুর। স্ত্রীকে মোবাইলে বারবার জানিয়েছেন সে যদি তার সংসারে না আসে তবে তিনি নিজেকে শেষ করে দেবেন। অনন্যোপায় হয়ে স্ত্রী-সন্তানকে পাওয়ার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হন হাফিজুর। আদালতে তার স্ত্রী না আসার কথা বললে নিজেকে শেষ করে দেয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি। নিজেই পকেটে ছুরি নিয়ে আদালতে হাজির হন। মামলার রায়ও তার বিপক্ষে চলে গেলে অনেকটা বেসামাল হয়ে যান তিনি। এরপরই নিজেকে শেষ করতে ছুরি দিয়ে বুকে কয়েকটি আঘাত করেন। একপর্যায়ে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি।

হবিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুক আলী  জানান, খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। লাশের গায়ে একাধিক ধারালো অস্ত্রের আঘাত পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই