বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমেছে পুঁজিবাজারে
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) শীর্ষ কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে তারা বিনিয়োগকারীদের হাউজে এসে লেনদেন করার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করছেন। যদিও গতকাল বেশকিছু বিনিয়োগকারী ব্রোকারেজ হাউজে এসে লেনদেন করেছেন। তবে অন্যান্য দিনের সঙ্গে তুলনা করলে এর হার ২০ থেকে ৩০ শতাংশের মতো হবে। বেশির ভাগ বিনিয়োগকারীই টেলিফোন, ই-মেইল ও মোবাইল অ্যাপের মতো ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে পুঁজিবাজারে লেনদেনে অংশ নিয়েছেন। অবশ্য অনেক বিনিয়োগকারী সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, সেদিকে নজর রাখছেন এবং তারা আপাতত বাজারে বিনিয়োগ থেকে দূরে থাকছেন। এর ফলে গতকাল পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ ও লেনদেনের পরিমাণ তুলনামূলক কম ছিল।
বাজার পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. রেজাউল করিম বণিক বার্তাকে বলেন, লকডাউনের প্রথম দিন হিসেবে গতকাল বাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ ছিল আশাব্যঞ্জক। লেনদেনের সময়সীমা কমে আসায় আনুপাতিক হারে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। তবে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দৈনিক গড়ে ৩০০ কোটি টাকার লেনদেন হলে সেটি সন্তোষজনক হিসেবে গণ্য করা যায়। বর্তমানে যেসব বিনিয়োগকারী সাইডলাইনে রয়েছেন আশা করছি সামনের দিনগুলোতে তারা বাজারে সক্রিয় হবেন।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল লেনদেনের শুরুতেই ঊর্ধ্বমুখী ছিল সূচক। মাঝে কিছুটা নিম্নমুখিতা দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়। গতকাল সূচকের উত্থানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো লিমিটেড, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস ও অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের। গতকাল দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৮৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৭৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা আগের দিন ছিল ৫ হাজার ৮৯ পয়েন্টে। ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল প্রায় ১৭ পয়েন্ট বেড়ে দিন শেষে ১ হাজার ১৮৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা আগের দিন ছিল ১ হাজার ১৬৬ পয়েন্টে। ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ দিনের ব্যবধানে প্রায় ৪৪ পয়েন্ট বেড়ে গতকাল ১ হাজার ৯৪৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের দিন শেষে যা ছিল ১ হাজার ৯০১ পয়েন্টে।
গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে ২ ঘণ্টায় মোট ২৩৬ কোটি ৬০ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে সাড়ে ৪ ঘণ্টার লেনদেনে যা ছিল ৫২১ কোটি ২০ লাখ টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩২১টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ২৩১টির, কমেছে ১৪টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৭৬টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।
খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৮ দশমিক ৩ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে সাধারণ বীমা খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ দখলে নিয়েছে বিবিধ খাত। ১৩ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্যাংক খাত। আর ১২ দশমিক ৯ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, রবি আজিয়াটা, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটক্যালস, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্স, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, গ্রামীণফোন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ও প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স।
দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সিএসসিএক্স সূচক দিনের ব্যবধানে ১৫০ পয়েন্ট বেড়ে ৯ হাজার ২৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ৮ হাজার ৮৭৮ পয়েন্টে।
কোন মন্তব্য নেই