সবচেয়ে বেশি মুনাফা দেয় যেসব শেয়ার - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

সবচেয়ে বেশি মুনাফা দেয় যেসব শেয়ার



 


মার্কিন উদ্যোক্তা, স্টক ব্রোকার-রিসার্চার ও লেখক উইলিয়াম জে ও’নেইলের সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি ইনভেস্টর বিজনেস ডেইলির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। কর্মক্ষেত্রে তার সাফল্য বিনিয়োগ মহলে বেশি আলোচিত। বেস্ট সেলার ‘হাউ টু মেক মানি ইন স্টকস: এ উইনিং সিস্টেম ইন গুড টাইমস অর ব্যাড’ বইয়ে তিনি সেকেন্ডারি বাজারের ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করে টপ পারফর্মিং শেয়ারগুলোর কিছু কমন বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন। সবচেয়ে ভালো কথা হলো, এ বৈশিষ্ট্যগুলো চোখে পড়ার পর সিংহভাগ ক্ষেত্রেই শেয়ারদরে বড় ও শক্তিশালী ট্রেন্ড দেখা যায়। সাতটি বিষয়কে তালিকাভুক্ত করে তিনি সেগুলোর নামের আদ্যক্ষরকে একত্র করে স্টক পিকিংয়ের বহুল আলোচিত কৌশলটির নাম দিয়েছেন ‘ক্যান স্লিম স্ট্র্যাটেজি’(সিএএনএসএলআইএম)।


ইউরোপ-আমেরিকার পাশাপাশি মুম্বাইয়ের মতো উদীয়মান অর্থনীতির পুঁজিবাজারেও ব্যাকটেস্ট করে দেখা গেছে, বেঞ্চমার্ক সূচকের চেয়ে ক্যান স্লিম স্ক্রিনিংয়ে উঠে আসা শেয়ারগুলোর সূচক অনেক বেশি রিটার্ন দিয়ে যাচ্ছে। ভক্তদের দাবি, ক্যান স্লিম এখন পর্যন্ত এক নম্বর গ্রোথ ইনভেস্টমেন্ট স্ট্র্যাটেজি। তবে অন্য প্রতিটি স্ট্র্যাটেজির মতো ক্যান স্লিমও প্রায়োগিক চ্যালেঞ্জের ঊর্ধ্বে নয়। ও’নেইল ও তার অনুসারীরা সেগুলোর সমাধান নিয়েও কাজ করে চলেছেন। ও’নেইল ও তার ক্যান স্লিমের পরিচিতি পর্ব নিয়েই আজকের মূল আলোচনা..


টেক্সাসে বড় হওয়া উইলিয়াম জে ও’নেইল সাউদার্ন মেথডিস্ট ইউনিভার্সিটির বিজনেস স্কুল থেকে ১৯৫৫ সালে স্নাতক সম্পন্ন করে মার্কিন বিমান বাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৫৮ সালেই তিনি স্টক ব্রোকার হওয়ার জন্য চলে আসেন হেইডেন স্টোন অ্যান্ড কোম্পানিতে। সেখানে কম্পিউটার ব্যবহার করে ইনভেস্টমেন্ট স্ট্র্যাটেজি দাঁড় করানোর কাজ শুরু করেন।


দুই বছরের মাথায় হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল তার এ প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দিয়ে তাদের প্রোগ্রাম ফর ম্যানেজমেন্ট ডেভেলপমেন্টের (পিএমডি) প্রথম ব্যাচে তাকে নিয়ে নেয়। সেখানে গবেষণাধর্মী কাজ থেকেই বেরিয়ে আসে ক্যান স্লিম স্ট্র্যাটেজি। ও’নেইল তার ফার্মের টপ ব্রোকার হয়ে যান। মাত্র ৩০ বছর বয়সে নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে নিজের জন্য একটি আসন কিনে নেন তিনি।


বিনিয়োগ সহায়ক তথ্য-উপাত্তের শক্তি সম্পর্কে আগেই ধারণা হয়ে গিয়েছিল ভদ্রলোকের। প্রযুক্তির সহায়তায় এগুলোর সহজলভ্যতার জন্যও বিনিয়োগ বাড়াতে থাকেন তিনি। ১৯৬৩ সালেই গড়ে তোলেন উইলিয়াম ও’নেইল কোম্পানি ইনকরপোরেটেড। এ কোম্পানিটিই প্রথম কম্পিউটারাইজড ডেইলি সিকিউরিটিজ ডাটাবেজ গড়ে তোলে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ৭০ হাজারের বেশি কোম্পানি তাদের উপাত্ত ভান্ডারে চলে আসে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ও’নেইল কোম্পানির উপাত্ত ও রিসার্চ নোটগুলোর জন্য ভালো দাম দিতে শুরু করে। সত্তরের দশকে ও’নেইলের প্রিন্টেড ডেইলি গ্রাফ থেকে শুরু করে এখনকার সময়ের অনলাইন ডাটাবেজ, স্টক স্ক্রিনিং, চার্টিং সবকিছুই সমান জনপ্রিয়।


আশির দশকে এসে ও’নেইল তার রিসার্চ, পর্যবেক্ষণ, মতামত গণমানুষের সঙ্গে শেয়ার করার একটি তাগিদ অনুভব করলেন। ১৯৮৩ সালে উদ্যোগ নেন ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিযোগী ইনভেস্টরস ডেইলি গড়ে তোলার। ১৯৯১ সালে সাত বছরের মাথায় পত্রিকাটির নাম বদলে হয় ইনভেস্টরস বিজনেস ডেইলি (আইবিডি)। ২০১৫ সালে প্রতিদিন ১ লাখ ১৩ হাজারের মতো পত্রিকা ছাপা হচ্ছিল, অনলাইনে মাসে ভিজিটর ছিল আরো প্রায় ৩০ লাখ।


বাণিজ্যিক দিক বিবেচনা করে ২০১৬ সালে প্রিন্টিং শিডিউল বদলে সাপ্তাহিক করে দেয়া হয়, আর দৈনিক কনটেন্টগুলো অনলাইন সংস্করণে সীমিত করে দেয়া হয়। একদল পাঠক সাপ্তাহিক প্রিন্ট আর অনলাইন সংস্করণের জন্য মুখিয়ে থাকেন, ব্যক্তিগত জীবনে যাদের একটি বড় অংশই সফল বিনিয়োগকারী কিংবা ইনভেস্টমেন্ট প্রফেশনাল। আইবিডিকে ক্যান স্লিম প্র্যাকটিশনারদের একটি বৈশ্বিক প্লাটফর্ম বললেও ভুল হবে না। ওয়াল স্ট্রিটের বাইরে ভারতের মতো দেশগুলোয় সাবসিডিয়ারি খুলেও ডাটা, রিসার্চ, পাবলিকেশনের ব্যবসা করছে ও’নেইল এন্টারপ্রাইজগুলো। ব্রোকারেজ ব্যবসা, ইনভেস্টমেন্ট পারফরম্যান্স, বিনিয়োগের সঙ্গে তথ্যপ্রযুুক্তির সংযুক্তির বিবেচনায়ও ও’নেইলকে মানুষ মনে রাখবে। তবে অনুসারীদের চোখে তার সেরা কাজ ক্যান স্লিম স্ক্রিনিং।



কোন মন্তব্য নেই