‘মৃত’ থেকে ‘জীবিত’ হচ্ছেন ১৬৪১ ভোটার - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

‘মৃত’ থেকে ‘জীবিত’ হচ্ছেন ১৬৪১ ভোটার

 

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ডাটাবেইজে 'মৃত' দেখানোয় অনেকে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দিয়ে কোনো কাজ করতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে এসব নাগরিক ইসি'র শরণাপন্ন হচ্ছেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে ইসি তদন্ত করে তাঁদের পুনরায় ভোটার তালিকাভুক্ত করছে। সম্প্রতি এমন আরও ১ হাজার ৬৪১ জন 'মৃত' দেখানো নাগরিককে পুনরায় ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে যাচ্ছে ইসি। ইসি'র সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।


সূত্র জানায়, এসব নাগরিকেদর নাম রোলব্যাক করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। মৃত ভোটার হিসাবে এদের নাম কর্তন করা হয়েছিলো। 


সূত্র জানায়, জীবিত ভোটারের নাম যেকোনো কারণে কর্তনের তালিকায় (ভোটার মারা গেলে তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়) চলে যায়। অনেক সময় জীবিত ভোটারের নামও চলে যাচ্ছে মৃতদের তালিকায়। পরে এসব ভোটার যখন তাঁদের এনআইডি দিয়ে কোনো কাজ করতে পারেন না, তখন তাঁরা কমিশনের শরণাপন্ন হন। আবেদনের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে সত্যতা পেলে পুনরায় তাঁদের নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।


জীবিত ভোটারের নাম মৃতদের তালিকায় চলে যাওয়ায় দায়ীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কি না জানতে চাইলে এর আগে ইসি'র উপ-সচিব মো. আব্দুল হালিম খান জানিয়েছিলেন, যার দোষে জীবিত ভোটার 'মারা' হচ্ছে বা যদি দেখা যায়, কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে জীবিত ভোটারকে মৃতের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করছেন তাঁর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।


ইসি সূত্র জানায়, অনেক সময় যাঁরা মৃত ভোটার কর্তনের দায়িত্বে থাকেন তাঁদের ভুলে জীবিত ভোটাররা মৃতদের তালিকায় চলে যান। অনেক সময় এনআইডি নম্বরের একটি সংখ্যা এদিক সেদিক বা একই নামের একজন মারা গেলে ভুল করে জীবিত আরেকজনের নাম কর্তন তালিকায় চলে যায়। মৃত ভোটার কর্তনের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টরা বেশিরভাগ সময় এমন ব্যাখ্যা দেন।


সূত্র আরও জানায়, ভোটার মারা গেলে তাঁর ছেলে-মেয়ে প্রত্যয়নপত্র দেবেন। ভোটার তালিকা থেকে কারো নাম বাদ দেওয়ার জন্য মৃত্যু সনদের সাপোর্টিং ডকুমেন্টসহ নির্ধারিত ফরমে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধির স্বাক্ষর থাকতে হয়। ভোটারের নাম কর্তনের তালিকায় চলে যাওয়ার বিষয়ে ভোটারকে দায়ী করা হয় না। এই কাজের জন্য দায়ী করা হয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। কারো বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলকভাবে জীবিত ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার প্রমাণ পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে থাকে কমিশন।


গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সকল আঞ্চলিক, সিনিয়র জেলা/জেলা ও উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসারের কাছে পাঠানো জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ থেকে এই সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, কোনো কোনো উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিস থেকে জানানো হচ্ছে যে, ভোটার জীবিত কিন্তু ডাটাবেইজে মৃত দেখাচ্ছে। এতে করে ভোটার বা ব্যক্তি জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে কোনো কাজ করতে পারছেন না।


এক্ষেত্রে করণীয় সম্পর্কে ওই চিঠিতে জীবিত কিন্তু ডাটাবেইজে মৃত স্ট্যাটাসে রয়েছে এমন ভোটারদের তথ্য উপজেলা অফিস চিঠি দিয়ে জেলা নির্বাচন অফিসকে জানাবে এবং জেলা অফিস জানাবে আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসকে। আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস তথ্যগুলো সমন্বয় করে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে পাঠাবে। আইসিটি বিভাগ এমন আবেদন পাওয়ার সংগে সংগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া এই ধরনের সকল আবেদন নিষ্পন্ন করার জন্য তখন ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।


ইসি'র দেওয়া সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১১ কোটি ১৭ লাখ ২০ হাজার ৬৬৯ ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৮ হাজার ৫ জন, নারী ভোটার ৫ কোটি ৫১ লাখ ২২ হাজার ২২৩ জন ও ৪৪১ জন হিজড়া ভোটার রয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই