পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাচ্ছে মতিন স্পিনিংয়ের স্পেশাল ইয়ার্ন ইউনিট
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি মতিন স্পিনিং মিলস পিএলসির ‘স্পেশাল ইয়ার্ন ইউনিট’ প্রকল্পের বাণিজ্যিক উৎপাদন আগামী ১ আগস্ট থেকে পূর্ণাঙ্গ শুরু হতে যাচ্ছে। ইউনিটটির বাণিজ্যিক উৎপাদন পূর্ণাঙ্গ শুরুর ফলে কোম্পানিটির দৈনিক উৎপাদন সক্ষমতা আরো ১০ টন বাড়ানো সম্ভব হবে।
গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির ১৩১তম পরিচালনা পর্ষদের সভা থেকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মূল্যসংবেদনশীল তথ্যের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে কোম্পানিটি।
বর্তমানে কোম্পানিটির দৈনিক উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে ৫১ টন। এর মধ্যে ২৫ টন কার্ড অ্যান্ড কম্পেড ইয়ার্ন, ১০ টন মেলাঞ্জ ইয়ার্ন ও বাকি ১৬ টন হলো সিনথেটিক ইয়ার্ন। নতুন এ ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হলে কোম্পানিটির দৈনিক মোট উৎপাদন সক্ষমতা দাঁড়াবে ৬১ টনে। নতুন এ প্রকল্পের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে জার্মানির বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ডিইজির কাছ থেকে ১২৫ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার কথা জানিয়েছিল কোম্পানিটি। আর বাকি ৬১ কোটি টাকা কোম্পানিটির নিজস্ব অর্থায়ন থেকে বিনিয়োগ করা হবে।
নতুন এ প্রকল্প সম্পর্কে কোম্পানিটি আগে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে আরো জানিয়েছিল, এটি বাস্তবায়ন হলে তাদের বার্ষিক উৎপাদন সক্ষমতা দৈনিক গড়ে সাড়ে ৮ থেকে ৯ টন বাড়বে। আর বার্ষিক টার্নওভার বাড়বে প্রায় ৯৫ থেকে ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত।
সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) মতিন স্পিনিং মিলসের আয় হয়েছে ৪৫১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে আয় ছিল ৩৪৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে বস্ত্র খাতের কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ১০৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা বা ৩১ দশমিক ২৯ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কর-পরবর্তী নিট মুনাফা প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকায়। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৩৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ৩৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৭ টাকা ৯৮ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৪ টাকা ৩ পয়সা। পুনর্মূল্যায়ন সঞ্চিতিসহ ৩১ মার্চ ২০২২ শেষে এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৫৭ টাকা ৮৪ পয়সায়।
এদিকে আলোচ্য হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) মতিন স্পিনিং মিলসের আয় হয়েছে ১৪৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে আয় ছিল ১২৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। আলোচ্য প্রান্তিকে কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ২৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১৮ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ৪৩ পয়সা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৯২ পয়সা।
৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরের জন্য ৪০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে মতিন স্পিনিং মিলস। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৬ টাকা ৩১ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা ছিল ২ টাকা ১৬ পয়সা। ৩০ জুন ২০২১ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ৫৩ টাকা ৮৪ পয়সায়। আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ৪৯ টাকা ২৯ পয়সা।
২০২০ হিসাব বছরের জন্য কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১৮ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ২ টাকা ১৬ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৯৭ পয়সা। ৩০ জুন কোম্পানিটির পুনর্মূল্যায়ন সঞ্চিতিসহ এনএভিপিএস দাঁড়ায় ৪৯ টাকা ২৯ পয়সা।

কোন মন্তব্য নেই