তিমি রক্ষায় জাহাজের গতিসীমা নিয়ে নতুন খসড়া যুক্তরাষ্ট্রের - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

তিমি রক্ষায় জাহাজের গতিসীমা নিয়ে নতুন খসড়া যুক্তরাষ্ট্রের


যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলে যাওয়া সব জাহাজকে অবশ্যই তাদের গতি ধীর করতে হবে। বিলুপ্তির মুখে থাকা তিমির একটি প্রজাতি রক্ষা করতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ফেডারেল সরকার। খবর গার্ডিয়ান।


দেশটির ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নতুন প্রস্তাবিত নিয়মের ভিত্তিতে এ ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছে, উত্তর আটলান্টিকে রাইট তিমির সঙ্গে জাহাজের সংঘর্ষ রোধ করতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।


জাহাজের আঘাত ও মাছ ধরার গিয়ারে আটকে যাওয়াই বড় এ প্রাণীটির জন্য সর্বোচ্চ ঝুঁকির বিষয়। বর্তমানে মোট ৩৪০টিরও কম রাইট তিমি রয়েছে এবং সেটা সংখ্যায় ধীরে ধীরে আরো কমছে। তিমি বাঁচানোর জন্য এতদিন যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তার মধ্যে মূল নজর দেয়া হয়েছে ফিশিং গিয়ারের ওপরেই, যেটা সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেন পূর্ব উপকূলের লবস্টার জেলেরা। প্রস্তাবিত জাহাজের গতিসংক্রান্ত নতুন নিয়ম থেকে বোঝা যায়, সরকার চায় শিপিং শিল্প আরো বেশি দায়িত্বশীল হয়ে উঠুক।


ক্রমাগত কমতে থাকা রাইট তিমির সংখ্যাকে কিছুটা স্থিতিশীল করার জন্য এবং এ প্রজাতিকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বিদ্যমান জাহাজের গতি নীতির পরিবর্তন দরকার ছিল। এ নতুন নিয়ম সিজনাল স্লো জোনে বিস্তৃত করা হবে, যার ফলে নাবিকদের ১০ নট (ঘণ্টায় ১১ মাইল বা ১৯ কিলোমিটার) গতি কমাতে হবে। নীতিনির্ধারকরা চান আরো বেশি বেশি জাহাজ এসব নিয়ম মেনে চলবে। নিয়মে এও উল্লেখ করা হয়েছে যে যখন মৌসুমি স্লো জোনের বাইরেও তিমি আছে বলে ধারণা করা হবে তখন যেন বাধ্যতামূলক গতি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় সেজন্য নোয়া একটি ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করবে।


ফেডারেল কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েক বছর ধরে তিমি সংরক্ষণ করার জন্য গতি নীতির বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করেছে। এর আগের শিপিং নীতিতে স্লো জোনের জোড়াতালির দিকেই বেশি মনোযোগ দিয়েছিল। সেখানেও নাবিকদের তিমির জন্য গতি ধীর করতে বলা হয়েছিল। কিছু কিছু জোন ছিল বাধ্যতামূলক আর অন্যগুলো ছিল স্বেচ্ছামূলক।


যদিও পরিবেশবাদীরা মামলা করেছেন এই অভিযোগে যে অনেক নৌকা গতি নিষেধাজ্ঞা মেনে চলছে না। তাই এই নিয়ম আরো কঠোর করার কথা বলেন তারা। পরিবেশবাদী সংগঠন ওশেনার ২০২১ সালের একটি প্রতিবেদনে বলছে, বাধ্যতামূলক অঞ্চলে নিয়ম ভঙ্গের হার ৯০ শতাংশ, এমনকি স্বেচ্ছামূলক অংশেও নিয়ম মানার প্রবণতা বেশ কমে এসেছে (৮৫ শতাংশ)।


একসময় রাইট হোয়েলের সংখ্যা প্রচুর ছিল, কিন্তু কয়েক প্রজন্ম আগে বাণিজ্যিকভাবে তিমি শিকারের কারণে তাদের সংখ্যা অনেক কমে যায়। কয়েক দশক ধরে প্রাণীটিকে এনডেঞ্জারড স্পেসিস অ্যাক্টের অধীনে সুরক্ষা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু তাতেও তাদের পুনরুদ্ধার খুব ধীর। নোয়ার তথ্য বলছে, ১৯৯৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৫০টিরও বেশি তিমি জাহাজে আটকা পড়ে।


বিজ্ঞানীরা এও বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তিমিগুলো সুরক্ষিত এলাকা থেকে বেরিয়ে জাহাজ চলাচলের লেনে চলে আসছে খাবারের খোঁজে। সাধারণত এসব তিমি জর্জিয়া ও ফ্লোরিডা উপকূলে বাচ্চা জন্ম দেয়, পরে খাওয়ানোর জন্য উত্তর দিকে চলে যায়।

কোন মন্তব্য নেই