ঝুঁকিতে মানবদেহের স্বাভাবিক গঠন - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

ঝুঁকিতে মানবদেহের স্বাভাবিক গঠন


বর্তমান সময় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগ। প্রযুক্তির সহায়তায় অনেক অসাধ্য সাধন করা গেলেও এর কারণে ঝুঁকিতে রয়েছে সমগ্র মানবজাতি। অত্যধিক প্রযুক্তিনির্ভরতার কারণে মানবদেহের স্বাভাবিক গঠন ঝুঁকিতে রয়েছে। বাড়ছে অস্বাভাবিক গঠনের হার। সম্প্রতি পরিচালিত এক গবেষণার পরিপ্রেক্ষিতে এ তথ্য জানা গিয়েছে। টোলফ্রিফরওয়ার্ডিং এ জরিপে অর্থায়ন করেছে। খবর টেকটাইমস ও ইন্টারেস্টিং ইঞ্জিনিয়ারিং।


গবেষকরা একজন থ্রিডি ডিজাইনারের সঙ্গে ভবিষ্যতে মানবদেহের গঠন কেমন হবে এবং অত্যধিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে কী কী সমস্যা থাকবে সেটি ফুটিয়ে তুলতে কাজ করেছেন। বিজ্ঞানীরা মানবদেহের এ থ্রিডি মডেলকে মাইন্ডি নাম দিয়েছে। এ বিষয়ে প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করে ইন্টারেন্টিং ইঞ্জিনিয়ারিং। দলটি এ বিষয়ে পরিচালিত বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা ও পেশাদারদের মতামত পর্যালোচনা করেছেন। দলটি মূলত দীর্ঘমেয়াদে প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে মানবদেহে কী ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে সে বিষয়টিতে গুরুত্বারোপ করেছেন।


ল্যাপটপ, স্মার্টফোনসহ ও অন্যান্য প্রযুক্তিগত ডিভাইসের দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার থেকে থ্রিডি মানবদেহ তৈরির তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। গবেষকদের তথ্যানুযায়ী, মাইন্ডির পিঠ অনেকটাই বাঁকানো থাকবে। মূলত প্রযুক্তি পণ্যের বা ডিভাইসের অত্যধিক ব্যবহারের কারণে এ প্রভাব পড়বে। কেননা ডিভাইস ও প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার কারণে মানুষের স্বাভাবিক হাঁটা-চলা ও বসার ভঙ্গিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। তাদের দাবি, দীর্ঘ সময় নিচের দিকে বা স্মার্টফোনের ডিসপ্লে বা কম্পিউটারের মনিটরের দিকে তাকিয়ে থাকার কারণে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে প্রভাবিত করবে। ফলে মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক গঠন ব্যাহত হবে।


এক বিবৃতিতে ম্যাপল হলিস্টিকসের স্বাস্থ্য ও সুস্থতাবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ক্যালেব ব্যাক জানান, ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্মার্টফোনের দিকে তাকিয়ে থাকলে তা স্নায়ুতন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলে এবং ঘাড়ে চাপ তৈরি করে। ফলে মাথাকে স্থির রাখতে ও স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনায় ঘাড়ের পেশিগুলোকে আরো বেশি শক্তি ব্যয় করতে হবে। এছাড়া দীর্ঘ সময় কম্পিউটার ব্যবহার করলে সেটি শরীর থেকে ঘাড়ের অংশ ভবিষ্যতে অনেকটাই স্বাভাবিক অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসবে।


প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে মানবদেহে আরো এক ধরনের অসংগতি তৈরি হবে। এটি কিউবিটাল টানেল সিনড্রোম বা টেক্সট ক্ল নামে পরিচিত। এটি মূলত হাতের কনুইয়ে থাকা স্নায়ুর অকার্যকারিতা। যেটির কারণে হাতের আঙুল অসার হয়ে যায়। গবেষকরা তাদের থ্রিডি ইমেজে এটি দেখিয়েছেন। দীর্ঘ সময় স্মার্টফোন ব্যবহারের কারণে এ সমস্যা তৈরি হয়। দীর্ঘ সময় স্মার্টফোন ব্যবহারের কারণে হাতের আঙুল যে থাবার মতো আকার ধারণ করবে সে বিষয়ে জানানোর জন্য নতুন এ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।



মেড অ্যালার্ট হেল্পের একজন ডাক্তার ও সহপ্রতিষ্ঠাতা নিকোলা জর্ডজেভিচের দাবি, স্মার্টফোন বা সেলফোন যেভাবে হাতে ধরা হয়, সেটি নির্দিষ্ট যোগাযোগ প্রক্রিয়ার চাপ প্রয়োগ করবে, যা টেক্সট ক্ল তৈরি করবে। প্রযুক্তি বা ডিভাইসের অত্যধিক ব্যবহার ভবিষ্যতে কনুইয়ের অবস্থান ৯০ ডিগ্রিতে পরিবর্তিত হয়ে যাবে। টেক্সট ক্ল ও কিউবিটাল টানেল সিনড্রোমে আরো একধাপ পরের অবস্থা হচ্ছে এটি।


জর্ডজেভিচের তথ্যানুযায়ী, আলনার স্নায়ু মূলত কনুইয়ের ভেতর একটি ভাঁজের মধ্যে থেকে পরিচালিত হয়। অত্যধিক স্মার্টফোন ব্যবহারের কারণে এটি সংকুচিত হয় ও চাপের মধ্যে থাকে। যে কারণে ধীরে ধীরে এর অবস্থান পরিবর্তন হবে এবং মানবদেহের স্বাভাবিক গঠনকে প্রভাবিত করবে। গবেষকরা আরো দাবি করেন, ভবিষ্যতে স্মার্টফোনের ক্ষতিকর তরঙ্গ থেকে ব্রেনকে সুরক্ষিত রাখতে মানুষের মাথার খুলি আরো মজবুত হবে। সেই সঙ্গে চোখের ওপর চাপ কমাতে ও নীল আলোর প্রভাব থেকে সুরক্ষিত রাখতে দুই স্তরে পাপড়ি তৈরি হবে।


বিবৃতিতে ইউনিভার্সিটি অব টলেডোর এক গবেষক কাসুন রত্নায়েক বলেন, প্রযুক্তিনির্ভরতার কারণে ভবিষ্যতে মানুষের চোখের ভেতরের পাতা বড় আকার ধারণ করতে পারে। মূলত অত্যধিক আলো থেকে চোখকে বাঁচাতে এটি হবে। এছাড়া বিচ্ছুরিত নীল আলোর প্রবেশ রোধে মানুষের চোখের যে মণি থাকে সেটির গঠনেও পরিবর্তন আসবে।

কোন মন্তব্য নেই