চিপ উৎপাদনে আরো এক ধাপ এগোল ইউরোপ - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

চিপ উৎপাদনে আরো এক ধাপ এগোল ইউরোপ


চিপ বা সেমিকন্ডাক্টর নিয়ে বর্তমানে বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের টানাপোড়েন চলছে। চীনকে পেছনে ফেলতে যুক্তরাষ্ট্র সব ধরনের প্রযুক্তি ও যন্ত্রাংশ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পশ্চিমা দেশগুলো নিজস্ব উৎপাদন বাড়াতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। চীন ও তাইওয়ানের মধ্যেও বিরোধ চলমান। এর অংশ হিসেবে অনেক দেশই এশিয়ানির্ভরতা কমাতে নিজ অঞ্চলে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনে ঝুঁকছে।


সর্বশেষ নিজ অঞ্চলে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনে ৪ হাজার ৪ কোটি ডলারের প্রকল্প পরিচালনায় সম্মতি দিয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ)। এর মাধ্যমে ইইউর অন্তর্গত ২৭টি দেশ সেমিকন্ডাক্টরের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও এশিয়ার ওপর নির্ভরতা কমাবে। খবর টেকটাইমস।


পরিকল্পনাটিকে আইনে পরিণত করার আগে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে বিতর্কের জন্য ডিসেম্বরে বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে ইইউর অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে একটি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। যেখানে নিজ অঞ্চলে চিপ উৎপাদনে ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বা ৪ হাজার ৩০০ কোটি ইউরো তহবিল বরাদ্দের কথা জানানো হয়।


বার্তা সংস্থা রয়টার্স প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, বিভিন্ন রাষ্ট্রদূত এরই মধ্যে ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে। ফলে অঞ্চলটি চিপ উৎপাদনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও এশিয়ার চীনের ওপর কম নির্ভরশীল হবে। এছাড়া কোনো জরুরি অবস্থা তৈরি হলে ও সরবরাহ চেইনে সমস্যা হলে নিজস্ব উৎপাদনের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলেও উল্লেখ করা হয়। প্রকল্পটি কার্যকরে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মন্ত্রীরা আগামী ১ ডিসেম্বর বৈঠকে বসবেন। তবে আইনে পরিণত হতে হলে আগামী বছর ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে এ বিষয়ে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হতে হবে।


বিশ্বজুড়ে চিপের সংকট তৈরি হলে এতে গাড়ি উৎপাদনকারী থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ও টেলিযোগাযোগ পরিষেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়। সে সময়ই এ প্রকল্পের প্রস্তাব দেয়া হয়। আট বছরের মধ্যে বৈশ্বিক চিপ উৎপাদন সক্ষমতার ২০ শতাংশ অর্জনের ব্যাপারে আশাবাদী ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ)। চলতি বছরের শুরুতে এ কারণে ইইউ চিপ অ্যাক্ট চালু করেছে। যার অধীনে সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের বিকাশে বিনিয়োগ করা হবে। গবেষণা ও উৎপাদন দুই খাতেই এ অর্থ ব্যয় করা হবে।


ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু সদস্য বরাদ্দের যে পরিকল্পনার সেখানে তহবিলের ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সম্প্রতি ব্লুমবার্গ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইইউর সদস্যরা সেমিকন্ডাক্টরের গবেষণায় নির্ধারিত ৪০ কোটি ডলার পুনর্বরাদ্দে সম্মতি দিয়েছে। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, এ বিনিয়োগের কারণে জার্মানির মতো দেশ লাভবান হবে। কেননা এসব দেশ সেমিকন্ডাক্টর খাতে ভালো অবস্থানে আছে।


নতুন প্রকল্পটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি এবং আগামী বছরের আগে কার্যকর হবে না। কিন্তু তার আগেই অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে একাধিক নতুন সেমিকন্ডাক্টর কারখানায় উৎপাদন শুরুর ঘোষণা দিয়েছে। এদের মধ্যে ইনটেল, গ্লোবাল ফাউন্ড্রিজ, এসটিমাইক্রোইলেকট্রনিকস ও ইনফিনিওন টেকনোলজিসের মতো প্রতিষ্ঠান রয়েছে।


অন্যদিকে চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) চিপ শিল্পে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে তাইওয়ান। এর মধ্য দিয়ে ব্লকটির সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের ইচ্ছা পোষণ করেছে অঞ্চলটি। তথ্য বলছে, চীনের সার্বভৌমত্ব মেনে নিতে দেশটি রাজনৈতিক ও সামরিকভাবে তাইওয়ানকে অব্যাহত চাপের মুখে রেখেছে। এ পরিস্থিতিতে কাগজে-কলমে কূটনৈতিক সম্পর্কের অনুপস্থিতিতেই বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার প্রতি বেশি মনোযোগী তাইপে।


উপ-অর্থমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যেভাবে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করেছে, ঠিক তেমনিভাবেই ইইউর সঙ্গেও মৈত্রী স্থাপন করতে চায় তাইপে। দেশের চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো অঞ্চলটিতে বিনিয়োগ করলে দুই পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের পথ অনেকটাই সহজ হবে।

কোন মন্তব্য নেই