কেনিয়ার নির্বাচনে সামাজিক মাধ্যমগুলো মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে
বিভিন্ন দেশের নির্বাচন সামনে রেখে মেটা মালিকানাধীন ফেসবুক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। এ বিষয়ে ব্যবহারকারীদেরও প্রতিনিয়ত জানিয়ে আসছে প্লাটফর্মটি। তবে কেনিয়ার নির্বাচনে ফেসবুক, টিকটক ও টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো মিথ্যা ও ভুয়া তথ্যের উৎস হিসেবে কাজ করেছে। সম্প্রতি মজিলা ফাউন্ডেশন পরিচালিত এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর টেকটাইমস।
কেনিয়ার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পরদিন অনলাইনে বড় পরিসরে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেয়ার বিষয়টি দেখতে পেয়েছে মজিলা ফাউন্ডেশন। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা থেকে বিরত রাখতে যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তাদের সমালোচনা করেছে সংগঠনটি।
প্রতিবেদনে ভুয়া ও মিথ্যা তথ্যের কারণে আগস্টে ফেডারেল নির্বাচনের সময় কেনিয়ার অধিবাসীরা কতটা প্রভাবিত হয়েছিল সেটিও বলা হয়। এর মধ্যে নির্বাচনে জয়ের মিথ্যা তথ্য, রাজনৈতিক অপহরণের অভিযোগ, ষড়যন্ত্র, পরিকল্পিত হামলাসহ আরো বিষয় ছিল। যারা সত্যতার বিষয় পর্যবেক্ষণ করে, তাদের জন্য এটি খুবই হতাশাজনক পরিস্থিতি। কেননা উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানগুলো কেনিয়ার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সমুন্নত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তার কিছু একেবারেই ভুয়া ছিল। মূলত নিজেদের বাজার বাড়াতে এ প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। সেখানে মূলত নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিতের কোনো বিষয়ই ছিল না। তবে ভুল তথ্য প্রচারের জন্য যে শুধু প্লাটফর্মগুলোই দায়ী তা নয়। আফ্রিকার রাজনৈতিক দলগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কনটেন্টে প্রভাব বিস্তারের জন্য অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞদের বিপুল অর্থ ব্যয়ে নিয়োগ দিয়েছিল। এসকল তথ্যের ভিত্তিতে একটি বিষয় পরিষ্কার, যাদের আর্থিক ও রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্য প্রচারে বট বা বিশেষজ্ঞ নিয়োগে সক্ষম। এমনকি তাদের পক্ষে তথ্যকে বিকৃত করে উপস্থাপন সম্ভব। এ দাবির সত্যতা প্রমাণে এএফপি এক প্রতিবেদনে জানায়, নির্বাচনের প্রচারণা চালানোর সময় শেষ হওয়ার পরেও অনলাইন তথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্যের বিস্তার বন্ধ হয়নি। তথাকথিত কি-বোর্ড যোদ্ধারা প্রতিপক্ষকে অসম্মানের জন্য মিথ্যা ও ভুয়া তথ্যের আশ্রয় নিয়েছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ডেপুটি প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ রাইলিয়া ওডিঙ্গা তাদের প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ভোট জালিয়াতির মতো অভিযোগ এনে একাধিক পোস্ট করেছেন। বেশকিছু ব্লগার এ অভিযোগ-সংশ্লিষ্ট ভুয়া ভিডিও শেয়ার করার মাধ্যমে অপপ্রচারে আগুন জ্বালিয়েছে।
জরিপে আরো দেখা যায়, টুইটার ও টিকটকে ভুয়া তথ্য প্রচার বন্ধ করা যায়নি। এছাড়া আনুষ্ঠানিকভাবে সরকার থেকে নির্বাচনের ঘোষণা দেয়ার আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শেয়ার করা পোস্টের কারণে নেতিবাচক প্রভাব বেশি ছিল। টুইটার ও টিকটকে রাজনৈতিক কোনো প্রচারণা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। তবে ফেসবুকে এর অনুমতি রয়েছে। অন্যদিকে নির্বাচনের ৪৮ ঘণ্টা আগে রাজনৈতিক প্রচারণার অনুমতি দিয়ে ফেসবুক কেনিয়ার আইন লঙ্ঘন করেছে। মজিলা ফাউন্ডেশন বর্তমান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে তাদের গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়টি উন্মুক্ত রাখার আহ্বান জানিয়েছে। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য প্রচার বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারবে বলে জানায়।

কোন মন্তব্য নেই