পশ্চিমের পথেই হাঁটছে আসিয়ানভিত্তিক প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

পশ্চিমের পথেই হাঁটছে আসিয়ানভিত্তিক প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান


মার্কিন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানের কর্মী ছাঁটাইয়ের ঢেউ আছড়ে পড়ছে আসিয়ান কোম্পানিগুলোতেও। অ্যামাজন প্রায় ১০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে। মেটা চলতি মাসে ১১ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। টুইটার বিশ্বব্যাপী কর্মশক্তির ৫০ শতাংশ কমিয়েছে। পশ্চিমের অনুকরণে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ সিঙ্গাপুরের প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান সি থেকে শুরু করে ইন্দোনেশিয়ার গোটুর মতো কোম্পানিসহ অনেকেই ঝুঁকেছে কর্মী ছাঁটাইয়ের দিকে। খবর ফ্রিমালয়েশিয়াটুডে।


সিঙ্গাপুরের সি কিংবা ইন্দোনেশিয়ার গোটু এ অঞ্চলের অন্যতম বড় প্রযুক্তি প্লাটফর্ম হিসেবেই পরিচিত। চলতি বছর প্রতিষ্ঠান দুটি তাদের মোট শ্রমশক্তির ১০ শতাংশ কমিয়েছে। এর হার আরো বাড়তে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো কঠিন ব্যবসায়িক পরিবেশ মোকাবেলার প্রস্তুতি হিসেবে মার্কিন পদাঙ্ক অনুকরণ করে গণহারে বরখাস্তের পথেই হাঁটছে।


চলতি বছরের নভেম্বরে গোটুর পক্ষ থেকে এক ঘোষণায় বলা হয়, মুনাফা অর্জনের সংগ্রামের মধ্যে ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য ১ হাজার ৩০০ কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে, যা তাদের মোট কর্মশক্তির ১২ শতাংশ। সম্প্রতি প্রযুক্তি কোম্পানিটির পক্ষ থেকে আরো বলা হয়, চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে তাদের মোট লোকসানের পরিমাণ ১২৯ কোটি ডলার, যা ২০২১ সালের একই সময়ের তুলনায় ৭৫ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে বড় অংশ বিজ্ঞাপন বাবদ ব্যয়। গোটুর প্রধান নির্বাহী আন্দ্রে সোয়েলিস্তিও বলেছেন, ব্যবসার দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত রাখার জন্য ছাঁটাই অত্যাবশ্যক ছিল।


অঞ্চলটিতে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ছাঁটাই হয়েছে সিতে। প্রতিষ্ঠানটি গেমিং, ই-কমার্স থেকে শুরু করে আর্থিক পরিষেবা সরবরাহ করে। সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে সংস্থাটি গত ছয় মাসে সাত হাজারের বেশি কর্মচারী ছাঁটাই করে, যা তাদের মোট কর্মশক্তির প্রায় ১০ শতাংশ।


কিন্তু হঠাৎ কেন বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলো গণছাঁটাইয়ের মতো সিদ্ধান্তে যেতে বাধ্য হচ্ছে, এর অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, কভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন বেশিসংখ্যক কর্মী নিয়োগ। মূলত ডিজিটাল পরিষেবা ও পণ্যের অভূতপূর্ব চাহিদার বিপরীতে উচ্চপ্রবৃদ্ধির সুযোগগুলো কাজে লাগাতে প্রযুক্তি সংস্থাগুলো আগবাড়িয়ে নিয়োগ করেছিল। এখন ঠিক বিপরীত পথেই হাঁটতে বাধ্য হচ্ছে তারা।


র্যান্ডস্ট্যাড সিঙ্গাপুরের প্রযুক্তি মহাব্যবস্থাপক দলজিৎ সাল নিক্কেই এশিয়াকে বলেন, চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগের পরিবর্তে কোম্পানিগুলো মোটা বেতনে ক্ষতিপূরণ প্যাকেজসহ পূর্ণ সময়ের জন্য কর্মচারী নিয়োগের মাধ্যমে অতিরিক্ত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছিল।


সিঙ্গাপুরের সি কোম্পানিটি প্রকৌশলী নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পদের জন্য তার প্রতিযোগীদের তুলনায় দ্বিগুণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২১ সালের শেষ পর্যন্ত সিতে ৬৭ হাজার ৩০০ কর্মচারী ছিল, যা এক বছর আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।


চলমান বৈশ্বিক অস্থিরতা, মূল্যস্ফীতি—সব মিলিয়ে বৈশ্বিক প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলো এক ধরনের অস্থিতিশীলতার সম্মুখীন। এ অবস্থায় আয়ের সঙ্গে খরচের সামঞ্জস্য মেলাতে আমেরিকান অনেক প্রযুক্তি কোম্পানিই প্রাতিষ্ঠানিক খরচ কমিয়ে আনছে কিংবা পদক্ষেপ হিসেবে কর্মী ছাঁটাই করছে। পশ্চিমের ধারাবাহিকতায় ছাঁটাই বাড়ছে আসিয়ান প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানেও।

কোন মন্তব্য নেই