সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে সূর্যমুখী - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে সূর্যমুখী

 

মাটি ও আবহাওয়া সূর্যমুখী চাষাবাদের জন্য উপযোগী। কম সময় ও অর্থ ব্যয় করে সূর্যমুখী চাষ করে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে অপার। আর তাই কৃষকরাও ঝুঁকেছেন সূর্যমুখী চাষে। 


বর্তমানে সূর্যমুখী ফুলের সমারোহে মেতে উঠেছে গাইবান্ধার বিভিন্ন উপজেলার কৃষি ক্ষেতগুলো। আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূলে থাকায় কৃষকরা সূর্যমুখী ফুলের বাম্পার ফলনের আশা করছেন। তেল জাতীয় অন্য ফসলের চেয়ে সূর্যমুখী চাষ সহজলভ্য ও উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় কৃষকেরা এই সফলটি উৎপাদনে বেশি উৎসাহী হয়ে উঠেছেন।


গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার হাসিলকান্দি গ্রামের মৃত আলহাজ মফিজ উদ্দিন সরকারের ছেলে আলতাফ হোসেন সরকার। এক সময়ে ছিলেন একটি কলেজের অধ্যক্ষ। চাকরি থেকে অবসর নিয়ে ঝুঁকে পড়েছেন কৃষি ফসল উৎপাদনে। নানা ফসল ফলানোর পাশাপাশি এ বছরে বানিজ্যিকভাবে তিনি যমুনার চরে আবাদ করেছেন সূর্যমুখী ফুল। 


সূর্যমুখীর দানা থেকে উৎপাদন হয় ভোজ্যতেল। এটির চাহিদা থাকায় ৫ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করেছেন তিনি। ইতোমধ্যেই তার ক্ষেতের গাছে ফুল এবং ফুলে বীজ আসতে শুরু হয়েছে। ক্ষেতের সূর্যমূখীর সবুজ গাছে বড় গোলাকারের হলুদ ফুল চারিদিকে যেন এক অপরূপ সৌন্দর্য ছড়িয়েছে। প্রতিদিন আশপাশের এলাকা থেকে প্রকৃতির এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসছেন হাজারো মানুষ।


আলতাফ হোসেন সরকারের সূর্যমূখীর ক্ষেত দেখতে আসা খাদিজা আক্তার, সালমান মিয়া ও নাজিয়া পারভীন বলেন, থোকা থোকা ফুলে ভরা সূর্যমূখীর সৌন্দর্যে আমরা মুগ্ধ হয়েছি। অপরূপ এই দৃশ্য ফোনের ক্যামারায় ধারণ করে রাখলাম। 


কৃষক আলতাফ হোসেন সরকার বলেন, লাভজনক ফসল হিসেবে সূর্যমূখীর আবাদ করেন তিনি। ৫ বিঘা জমিতে এটি চাষ করছেন। বীজ-সার- শ্রমিকসহ ব্যয় হবে ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা। ফলন ও বাজার দাম ভালো থাকলে প্রায় লাখ টাকা লাভ থাকবে তার।


গাইবান্ধা কৃষি বিভাগ জানায়, সূর্যমুখী সারা বছরে চাষ করা যায়। তবে রবি মৌসুমে ভালো হয়। সূর্যমুখী সাধারণত সব মাটিতে আবাদ করা যায়। এই ফসল চাষে কৃষকদের আগ্রহী করে তুলতে সহযোগীতা করছে কৃষি বিভাগ। কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়াসহ সার্বিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। তাই কৃষকরাও আগ্রহী হয়ে উঠেছে অনেকটাই। চলতি মৌসুমে সূর্যমুখীর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। 


কৃষি বিভাগ আরও জানায়, সূর্যমুখী চাষে হেক্টার প্রতি ৮-১০ কেজি বীজ লাগে। বীজ রোপণের প্রায় ১০০ দিন পর ফসল ঘরে তোলা সম্ভব। এ ফসল থেকে তেল উৎপাদন ছাড়াও গরু-মহিষের খাবার হিসেবে খৈল তৈরী হয়ে থাকে। এই ফুলের গাছ জ্বালানী হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।


জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বেলাল উদ্দিন বলেন, সূর্যমুখী তেল অনেকটাই স্বাস্থ্যসম্মত। সরিষা ও সোয়াবিন তেলের চেয়ে পুষ্টিগুণ বেশি রয়েছে। তাই সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের লাভবান করতে সার্বিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

কোন মন্তব্য নেই