তুরস্কে আবার ভূমিকম্প নিহত আরও ৬
বাতাসে এখনো লাশের গন্ধ। স্বজনদের আর্তনাদ। চারদিকে বিষাদরেখা। তারই মধ্যে আবার ভূমিকম্প হয়েছে তুরস্কে। এতে কমপক্ষে ছয় জন নিহত হয়েছেন। সিরিয়া সীমান্তের কাছে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে দুই দফা ভূমিকম্প হয়েছে সোমবার দিবাগত রাতে। এর মাত্রা ৬.৪ এবং ৫.৮। ৬ই ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে তুরস্কে এবং সিরিয়ায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪৬,০০০ মানুষ। লাখ লাখ মানুষ গৃহহীন। আহত হয়েছেন অসংখ্য।
ওই ভূমিকম্পে দুই দেশেই যেসব ভবন দুর্বল হয়ে পড়েছিল, তা সোমবারের ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়েছে। তুরস্কের দুর্যোগ ও ইমার্জেন্সি এজেন্সি বলেছে, স্থানীয় সময় সোমবার রাত ৮টা ৪ মিনিটে ৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর তিন মিনিট পরে ৫.৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলাইমান সোইলু বলেছেন, এতে আন্তাকিয়া, ডেফনে এবং সামানদাগে নিহত হয়েছেন ছয় জন। লোকজনকে বিপজ্জনক ভবনে প্রবেশ না করতে অনুরোধ করা হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন ২১৩ জন। আন্তাকিয়া থেকে রিপোর্টে বলা হয়েছে, সেখানকার মানুষজন এ সময় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তারা রাস্তায় অবস্থান নেন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় এম্বুলেন্স এবং উদ্ধারকর্মীরা উপস্থিত হন। স্থানীয় বাসিন্দা মুনা আল ওমর সাত বছরের ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে কাঁদছিলেন। তিনি বলেছেন, মনে হচ্ছিল আমার পায়ের নিচে মাটি ফেটে দুই ভাগ হয়ে যাচ্ছে। ১৮ বছর বয়সী আলী মাজলুম বলেছেন, ৬ই ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে নিহত স্বজনদের সন্ধান করছিলেন ধ্বংসস্তূপের নিচে। এ সময় তীব্র ভূমিকম্প হয়। বলেন, কি করতে হবে কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। এ সময় আমরা একে-অন্যকে জড়িয়ে ধরলাম। আমাদের ঠিক সামনেই দেয়ালগুলো ধসে পড়ছিল। ওদিকে সিরিয়ায় সোমবারের ভূমিকম্পে আহত হয়েছেন ৪৭০ জন। তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বা নিচ্ছেন। খবরে বলা হয়েছে, সোমবারের এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে মিশর এবং লেবানন থেকেও। আদানা শহরে সর্বশেষ এই ভূমিকম্পের শিকার মানুষগুলো আশ্রয় নেন একটি ভলিবল সেন্টারে। প্রথমবার ভূমিকম্পের পর এই সেন্টারটিকে রেসক্যু সেন্টারে পরিণত করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলেছেন, ওই রাতেই সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ৬০০ মানুষ। কম্পন শুরু হতেই লোকজন দৌড়ে রাস্তায় চলে যায়। সোমবারই তুরস্ক সফর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। তিনি সেখানে ১০ কোটি ডলারের মানবিক সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বলেছেন, যতদিন প্রয়োজন ভূমিকম্প থেকে আগের অবস্থায় ফিরে যেতে সহায়তা করবে যুক্তরাষ্ট্র।

কোন মন্তব্য নেই