দুই ইস্যুতে নতুন করে নাকাল শেয়ারবাজার
বড় আশা দিয়ে সপ্তাহের শুরুতে শেয়ারবাজারের লেনদেন আরম্ভ হয়েছিল। প্রথম কর্মদিবস রোববার শেয়ারবাজারের সূচক বেড়েছিল ৩৫ পয়েন্টের বেশি। এদিন বিকালে খবর আসে দেশের রিজার্ভ ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে।
এই খবরে শুরু হয় শেয়ারবাজারে ধারাবাহিক পতন। তারপর বুধবার যোগ হয় কেপিট্যাল গেইন ট্যাক্স আরোপের খবর।নতুন এইদুই ইস্যুতে পতনের শেয়ারবাজার আরও নাকাল হয়ে পড়ে। যার ফলে চার কর্মদিবসে শেয়ারবাজারের সূচক ১৭৯ পয়েন্ট উধাও হয়ে যায়। আর বিনিয়োগকারীরা হারায় প্রায় ৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকার মূলধন।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার শেয়ারবাজার উত্থানে ফিরে। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক বৃদ্ধি পায় ৩৫ পয়েন্টের বেশি। এদিন বিকালে বাজারে খবর আসে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে।
রিজার্ভ কমার খবরে পরের দিন সোমবার শুরুথেকেই দেখা যায় বাজারে পতনের তান্ডব। সোমবার ও মঙ্গলবার দুই দিনের তান্ডবে সূচক কমে যায় ১১১ পয়েন্ট।
এরপর মঙ্গলবার বিকালে খবর আসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সভায় ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স আরোপ অনুমোদন। যার ফলে বুধবার বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা থাকলেও ওইদিন সূচক পড়ে যায় ৫৮ পয়েন্ট।অর্থাৎ উত্থানের বাজারে ফের পতনের চাপ।
আজ বৃহস্পতিবার শুরুতেই উভয় বাজারে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা গেলেও কিছুক্ষণ পরই শুরু হয় পতনের মাতম। তারপর দিনভর আতঙ্ক ছাড়িয়ে শেষ বেলায় কিছুটা স্বস্তিতেফিরে উভয় বাজার। এদিন লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর সূচক ২৫ পয়েন্টের বেশি পড়ে যায়। যা শেষ বেলায় স্থির হয় ১০ পয়েন্টের নিচে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত চার কর্মদিবসে পতনের বাজারকে নতুনকরে নাকাল করে ছেড়েছে। তবে আশার কথা হলো, শেষ দিনের শেষ ভাগে বাজারে কিছুটা স্ট্রেনথ দেখা যায়। এতে বুঝা যায়, বাজার যা পড়ার পড়েছে। এখন বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর পালা। আশা করা যায় রোববার থেকে বাজার ভালো হবে।
বৃহস্পতিবারের বাজার পর্যালোচনা
আজ সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৯.৯৮ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৫১৭ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরীয়াহ সূচক ০.৮০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ২১২ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৩.৭৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯৭৩ পয়েন্টে।
আজ ডিএসইতে ৫৭৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কর্মদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫২৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকার। যা আগের দিনের চেয়ে ৪৯ কোটি ৫৪ টাকা বেশি।
আজ ডিএসইতে ৩৯৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১২২ টির, কমেছে ২১৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৭টির।
অপর শেয়ারবাজার চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএই) আজ লেনদেন হয়েছে ৫৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৩ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
এদিন সিএসইতে ২৫১টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৫৮টির, কমেছে ১৬৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৮টি প্রতিষ্ঠানের।
আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২৩৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। এরমধ্যে দাম বেড়েছিল ৩২টির, কমেছিল ১৭৪টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট।
কোন মন্তব্য নেই