শীত আসার আগেই চলনবিলে অতিথি পাখির ঢল”

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শীত আসার আগেই চলনবিলে অতিথি পাখির ঢল”
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি | টাইমস এক্সপ্রেস ২৪
শীত পুরোপুরি শুরু হওয়ার আগেই সিরাজগঞ্জের চলনবিলে ভিড় করছে নানা প্রজাতির অতিথি পাখি। দেশের বৃহত্তম বিল অধ্যুষিত এই অঞ্চলের নদী-নালা, খাল-বিল, জলাশয় ও পুকুরে এখন ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির আনাগোনা দেখা যাচ্ছে।
প্রকৃতিপ্রেমী ও স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন, নিরাপদ আবাসস্থল এবং খাদ্যের প্রাচুর্যের কারণে এবার আগাম এসেছে এই পরিযায়ী পাখিরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও অতিথি পাখিদের নিরাপদে রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চলনবিলের তাড়াশ উপজেলার বস্তুল, উলিপুর, পঁওতা, সোলাপাড়া, দিঘীসগুনা, কুন্দইল, সগুনা, লালুয়া মাঝিরা, মালশিনসহ ২০–২৫টি গ্রামে এখন অতিথি পাখির সমারোহ। বালিহাঁস, নীলশির, শামুকখোল, ত্রিশূল বক, রাতচরা, কোড়া, লালশির, বড় সরালি, ছোট সরালি, ডাহুক, পানকৌড়ি, গাঙচিল, চখাচখি, মাছরাঙাসহ অসংখ্য প্রজাতির পাখি উড়ে বেড়াচ্ছে বিলজুড়ে।
তাড়াশের উলিপুর গ্রামের শিক্ষক বাবুল আকতার বলেন, “গত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর পাখির সংখ্যা অনেক বেশি। খাদ্যের সহজলভ্যতা এবং শীতের আগমনেই চলনবিল এখন পাখির স্বর্গে পরিণত হয়েছে।”
চলনবিল রক্ষা আন্দোলন কমিটির আহবায়ক আব্দুর রাজ্জাক রাজু বলেন, “শিকারি ও ক্রেতাদের মধ্যে এখনও পর্যাপ্ত ভয় নেই। পাখি বাঁচাতে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি ব্যাপক সচেতনতামূলক প্রচারণা দরকার।”
তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, “পাখি শিকার রোধে প্রশাসন সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে বিশাল এই বিল এলাকায় শিকারিদের ধরতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়।”
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এম নজরুল ইসলাম বলেন, “এ বছর চলনবিলে স্বাভাবিক বন্যা হওয়ায় জলাশয়ে প্রচুর খাবার তৈরি হয়েছে। এ কারণেই পরিযায়ী পাখিদের আগমন বেড়েছে।”
তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান বলেন, “অতিথি পাখি সংরক্ষণে প্রশাসনের পাশাপাশি জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে যৌথ অভিযান চালিয়ে শিকারিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
চলনবিলের প্রকৃতি এখন অতিথি পাখির কলতানে মুখর। স্থানীয়রা বলছেন, সচেতনতা ও আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত হলে এ অঞ্চলটি দেশের অন্যতম পাখির অভয়ারণ্যে পরিণত হতে পারে।
কোন মন্তব্য নেই