মানবতাবিরোধী অপরাধের তিন মামলায় সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির, কড়া নিরাপত্তায় প্রাথমিক শুনানি আজ

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
মানবতাবিরোধী অপরাধের তিন মামলায় সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির, কড়া নিরাপত্তায় প্রাথমিক শুনানি আজ
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সংঘটিত গুম, খুন ও নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা তিনটি মামলায় সেনা হেফাজতে থাকা কর্মকর্তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সকাল ৭টার পর প্রিজনভ্যানে করে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাদের ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে আনা হয়। প্রত্যেকেই সাধারণ পোশাকে ছিলেন। আদালত প্রাঙ্গণে পৌঁছানোর পর পুলিশ সদস্যরা তাদের ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় নিয়ে যান।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এসব মামলায় মোট আসামি ২৮ জন, এর মধ্যে ১৫ জন সেনা কর্মকর্তা বর্তমানে সেনা হেফাজতে আছেন। মামলাগুলো আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সংঘটিত গুম–নির্যাতন এবং ২০২৫ সালের জুলাই মাসে রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানকালীন অপরাধ সম্পর্কিত।
প্রথম মামলায় আসামি করা হয়েছে র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন ও কর্নেল আনোয়ার লতিফ খানসহ মোট ১৭ জনকে। এর মধ্যে ১০ জন সেনা হেফাজতে রয়েছেন।
পলাতক আসামিদের মধ্যে রয়েছেন র্যাবের সাবেক তিন মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, এম খুরশিদ হোসেন ও মো. হারুন-অর-রশিদ। এ ছাড়াও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং র্যাবের সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ খায়রুল ইসলাম পলাতক আসামির তালিকায় আছেন।
দ্বিতীয় মামলায় শেখ হাসিনা ও তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ডিজিএফআইয়ের সাবেক তিন পরিচালক—মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী সেনা হেফাজতে রয়েছেন।
তৃতীয় মামলাটি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকালীন রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ সংক্রান্ত। এতে আসামি করা হয়েছে বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম, মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম, পুলিশের সাবেক এডিসি মো. রাশেদুল ইসলাম ও সাবেক ওসি মো. মশিউর রহমানকে। এর মধ্যে প্রথম দুইজন সেনা হেফাজতে আছেন, অন্য দুইজন পলাতক।
বুধবার সকাল থেকেই ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে ছিল কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেনা কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে এলাকা নিরাপত্তা বলয়ে পরিণত হয়।
আজ দুপুরে তিন মামলার প্রাথমিক শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই