আবারও দিল্লির বিষাক্ত বাতাসে বিপর্যস্ত নগরজীবন: দূষণে শ্বাস নিতে কষ্ট, আতশবাজি ও নাড়া পোড়ানোকে দায় - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

আবারও দিল্লির বিষাক্ত বাতাসে বিপর্যস্ত নগরজীবন: দূষণে শ্বাস নিতে কষ্ট, আতশবাজি ও নাড়া পোড়ানোকে দায়

 

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

আবারও দিল্লির বিষাক্ত বাতাসে বিপর্যস্ত নগরজীবন: দূষণে শ্বাস নিতে কষ্ট, আতশবাজি ও নাড়া পোড়ানোকে দায়


টাইমস এক্সপ্রেস ২৪ ডেস্ক:
প্রতি বছরের মতো এবারও বিষাক্ত ধোঁয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। শীতের শুরুতেই শহরজুড়ে দেখা দিয়েছে তীব্র বায়ুদূষণ, চোখ জ্বালা ও শ্বাসকষ্টে বিপর্যস্ত নগরবাসী। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাতাসের গুণমান সূচক (AQI) এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য “অত্যন্ত বিপজ্জনক”।

দীপাবলির পর থেকেই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। আতশবাজির ধোঁয়া, যানবাহনের ধোঁয়া এবং ফসলের নাড়া পোড়ানো মিলিয়ে বাতাসে জমেছে ঘন বিষাক্ত কুয়াশা। ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, এটি গত চার বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ দীপাবলি-পরবর্তী বায়ু পরিস্থিতি

শীত নামার সঙ্গে সঙ্গে বাতাসের গতি কমে যাওয়ায় দূষণকারী উপাদানগুলো মাটির কাছেই আটকে যাচ্ছে। ফলে শহরজুড়ে ধোঁয়াশার ঘন আস্তরণ তৈরি হয়েছে। চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলেছেন, এই দূষিত বাতাসে দীর্ঘমেয়াদে বসবাস করলে শ্বাসযন্ত্র ও হৃদরোগের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়ে।

বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছর বন্যায় ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় নাড়া পোড়ানোর ঘটনা কমেছে বললেও, পাঞ্জাবে বাস্তবে তিনগুণ বেড়েছে। স্থানীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের তথ্যমতে, ১০ দিনে সাড়ে তিনশোর বেশি নাড়া পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে।

অন্যদিকে, দীপাবলির আগে ভারতের শীর্ষ আদালত দিল্লি ও আশপাশে পাঁচ বছরের আতশবাজি নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে, দুই দিনের জন্য ‘সবুজ আতশবাজি’ ব্যবহারের অনুমতি দেয়। কিন্তু বাস্তবে সেই সীমা মানা হয়নি—বাজারে নিষিদ্ধ আতশবাজিও অবাধে বিক্রি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বায়ুদূষণের কারণে দিল্লির হাসপাতালগুলোতে কাশি, গলা ব্যথা ও চোখ জ্বালাপোড়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, “এই বিষাক্ত বাতাস শরীরের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা ভেঙে দেয়, যা শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য বিশেষভাবে বিপজ্জনক।”

এদিকে দিল্লি ও পাঞ্জাবের সরকার পরস্পরের ওপর দায় চাপাচ্ছে। দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, পাঞ্জাবের কৃষকরা নাড়া পোড়াতে বাধ্য হচ্ছেন, অন্যদিকে পাঞ্জাব সরকার দাবি করেছে, দিল্লি সরকার দূষণ ইস্যুতে “রাজনৈতিক নাটক” করছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবছর এমন দোষারোপের রাজনীতি নয়, প্রয়োজন সম্মিলিত, দীর্ঘমেয়াদি সমাধান—যেখানে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার মিলে দূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, শুধু শীতকালীন সাময়িক উদ্যোগ নয়।

কোন মন্তব্য নেই