ভারতে ব্লাড ব্যাংকের রক্ত নিয়ে এইচআইভি আক্রান্ত ৫ শিশু
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
ভারতে রক্ত সঞ্চালনের পর এইচআইভি আক্রান্ত ৫ শিশু, তদন্তে বড় ধরনের অবহেলার ইঙ্গিত
টাইমস এক্সপ্রেস ২৪
শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫
ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের পশ্চিম সিংভূম জেলার একটি সরকারি সদর হাসপাতালে রক্ত সঞ্চালনের পর পাঁচজন শিশু এইচআইভি আক্রান্ত হয়েছে। সংক্রমিত রক্ত ব্যবহারের ফলেই এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর রাজ্যজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনার বিস্তারিত:
বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আক্রান্ত শিশুরা ওই সরকারি হাসপাতালের রক্তব্যাংক থেকে রক্ত নেওয়ার পর এইচআইভি পজিটিভ শনাক্ত হয়। ঘটনাটির পরপরই হাসপাতালের সিভিল সার্জন, এইচআইভি ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক এবং ল্যাব টেকনিশিয়ানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন জানিয়েছেন, ভুক্তভোগী প্রতিটি পরিবারের জন্য দুই লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
ভুক্তভোগীর মায়ের অভিযোগ:
আক্রান্ত এক শিশুর মা বলেন,
“গত সেপ্টেম্বর আমি মেয়েকে রক্ত দিতে নিয়ে যাই। পরে চিকিৎসকদের আচরণে সন্দেহ হয়। তখন এক স্বাস্থ্যকর্মী জানান, ভুল রক্ত দেওয়ার কারণে আমার মেয়ে এইচআইভি আক্রান্ত হয়েছে।”
রক্তদাতাদের বিষয়ে তদন্ত:
স্থানীয় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চন্দন কুমার জানান, ২০২৩ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ২৫৯ জন রক্তদাতা থেকে রক্ত নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ৪৪ জনের রক্তের নমুনা সন্দেহজনক বলে চিহ্নিত হয়েছে এবং চারজন দাতার এইচআইভি পজিটিভ নিশ্চিত করা গেছে।
তদন্ত চলছে বাকি দাতাদের নিয়েও।
স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া:
ঝাড়খণ্ডের বিশেষ স্বাস্থ্য সচিব ডা. নেহা অরোরা বলেন,
“বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন। তবে রক্ত পরীক্ষায় ‘প্রি-কিট’ ব্যবহারের কারণে রোগ শনাক্তে দেরি হচ্ছিল। এখন থেকে সব দাতার রক্ত ELISA বা NAT টেস্টের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হবে।”
অবহেলা ও কাঠামোগত সংকট:
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী রামচন্দ্র চন্দ্রবংশী বলেন, “এই ঘটনায় সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহেলাই দায়ী।”
অন্যদিকে স্বাস্থ্য অধিকারকর্মী অতুল গেরা অভিযোগ করেন,
“ঝাড়খণ্ডে পাঁচ হাজারেরও বেশি থ্যালাসেমিয়া রোগী থাকলেও পুরো রাজ্যে একজন মাত্র হেমাটোলজিস্ট আছেন — যা ভয়াবহ জনবল সংকটের ইঙ্গিত দেয়।”
কোন মন্তব্য নেই