রাজশাহীতে ৫ নারী ছিনতাইকারী, ছিনতাই করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা
বাইরে থেকে এসে রাজশাহী নগরীতে ছিনতাই করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছে ছিনতাই চক্রের ৫জন নারী সদস্য। এদের প্রত্যেকের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একই গ্রামে। মঙ্গলবার নগরীর হড়গ্রাম বাজার এলাকায় ছিনতাইয়ের সময় তাদের হাতে-নাতে ধরা হয়। এসময় তাদের নামে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এদের প্রত্যেকেই সংঘবদ্ধ ছিনাতাই চক্রের সদস্য উল্লেখ করে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে বিভিন্ন থানায় তাদের নামে ছিনতাইয়ের একাধিক মামলা রয়েছে।
এই পাঁচ নারীর নামে অস্ত্রের মুখে ছিনতাইয়ের চেষ্টার অভিযোগে নগরীর রাজপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার বাদী রাজশাহী মহিলা কলেজের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক রায়হানা আক্তার জাহান। তার বাড়ি নগরীর মহিষবাথান এলাকায়।
অভিযুক্ত ছিনতাইকারীরা হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কোকন মিয়ার স্ত্রী সোলেমা খাতুন (২৫), নাসির মিয়ার স্ত্রী লাভলী আক্তার (২২), মনির মিয়ার স্ত্রী রিনা খাতুন (২০), এহিয়ার স্ত্রী রিফুজা খাতুন (২০) ও কামরুল ইসলামের স্ত্রী শামসুন্নাহার বেগম (২৬)। এদের প্রত্যেকের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থানার ধরমন্ডল গ্রামে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানাযায়, ভুক্তভোগী অধ্যাপক রায়হানা প্রতিদিনের মতো কর্মস্থলে উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার সময় নগরীর হড়গ্রাম বাজারের দিগন্তপ্রসারী ক্লাবের মোড়ে আসেন। সেখান থেকে তিনি একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় ওঠেন। তাকে রিকশায় উঠতে দেখে সেখানে অপেক্ষমান আরও পাঁচজন নারী যাত্রী রিকশায় ওঠেন। তখন তিনি এত যাত্রীর সঙ্গে যেতে আপত্তি করেন। তিনি সাধারণত একাই একটি রিকশা নিয়ে যান। আপত্তি করতে দেখে ৫নরী অনুরোধের সুরে বলে, ‘চলেন এইটুকু রাস্তা একসঙ্গেই যাই।’ এসময় তিনি তাদের মিষ্ট কথায় বসে চলে আসেন ও তাদেরকে অটোতে নিতে সম্মত হন।
অটো রিকশাটি ক্লাবের মোড় থেকে প্রায় ১০০ গজ দক্ষিণে উকিলবারের মেইন গেটের সামনে যেতেই এই পাঁচ নারীর মধ্যে তার পাশে বসা একজন নারী তার পিঠের দিকে হাত দেন গলায় থাকা সোনার চেন খুলে নেবার উদ্দেশ্যে। পথমে বুঝতে না পারলেও পরক্ষণেই তিনি ছিনতাইকারী বলে চিৎকার করে রিকশা থামাতে বলেন। চিৎকার করার সময় তাদের একজন তার গলা চেপে ধরেন। একজন চাকু বের করেন। রিকশা থামার সঙ্গে সঙ্গে তারা নেমে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সেখানে টহল পুলিশ ছিল। পুলিশের সন্দেহ হলে তারা ওই ৫জনকে চারিদিক থেকে ঘিরে ধরে।
এ সময় ওই নারীরা বলেন, তারা কেউ কাউকে চেনে না। তখন ভুক্তভোগী অধ্যাপক রায়হানা আক্তার পুলিশদেরকে জানান, এরা সকলেই সঙ্ঘবদ্ধ। একই সঙ্গে রিকশায় উঠেছেন। পরে পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়।
নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, এরা দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারী। মঙ্গলবার এরা সকালেই ব্রাহ্মনবাড়িয়া থেকে রাজশাহী এসেছিলেন। রাজশাহীতে নেমেই তারা ছিনতাইয়ে লিপ্ত হয়েছিলেন। ওসি আরও জানান, খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি তাদের প্রত্যেকের নামেই বিভিন্ন থানায় ছিনতাইয়ের একাধিক মামলা রয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই