প্রথাগত ব্যাংকিংকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে ফিনটেক কোম্পানিগুলো
প্রতিষ্ঠিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এরই মধ্যে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো এমবেডেড ফাইন্যান্স নামে একটি অর্থনৈতিক টার্ম সামনে নিয়ে এসেছে। বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি এরই মধ্যে অনেক আর্থিক সেবা দেয়া শুরু করেছে। অ্যামাজন তার গ্রাহকদের ‘বাই নাউ পে লেটার’ বা বিএনপিএল (এখন কিনুন, পরে টাকা দিন) সুযোগ দিচ্ছে। মার্সিডিজ গাড়ির চালকরাও জ্বালানি ক্রয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে।
যদিও বিভিন্ন আর্থিক লেনদেনে এখনো প্রথাগত ব্যাংকের আধিপত্য রয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, আর্থিক চেইনের শেষ প্রান্তে চলে যেতে পারে তারা।
বর্তমানে এমবেডেড ফাইন্যান্স প্রথাগত ব্যাংকিংয়ে কিছুটা ধাক্কা দিতে সক্ষম হয়েছে। এমনকি বেশ কয়েকটি নয়া কোম্পানির ঋণ দেয়ার মতো লাইসেন্সও রয়েছে। সেগুলো হয়তো বৃহৎ ব্যাংকগুলোর তুলনায় অনেক কম কিন্তু নিকট ভবিষ্যতে এটা যে বেশ বড় জায়গা নেবে তা স্পষ্ট। ডিজিটাল লেনদেনে এ ফাইন্যান্সিয়াল টেকনোলজি প্রতিষ্ঠান কিংবা ফিনটেক প্রতিষ্ঠানগুলো সিংহভাগ শেয়ার নিজেদের করে নেবে। এর মাধ্যমে নিজেদের ভ্যালুয়েশনও বাড়িয়ে ফেলবে ফিনটেক কোম্পানিগুলো। উদাহরণস্বরূপ, গত মার্চে পেমেন্ট প্লাটফর্ম স্ট্রাইপের বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৯ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। অ্যামাজন ও গুগলের মতো প্রযুক্তি জায়ান্ট রয়েছে স্ট্রাইপের গ্রাহক তালিকায়। ২০১৯ সালে বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান অ্যাকসেনচার এক পূর্বাভাসে জানায়, পেমেন্ট মার্কেটে নতুন চরিত্রগুলো বৈশ্বিক আয়ের ৮ শতাংশ নিজেদের করে নিয়েছে।
গত বছর বৈশ্বিক মহামারীতে লেনদেনে প্রথাগত ব্যাংকিংয়ের বিপরীতে ডিজিটালনির্ভরতা বেড়েছে। পিচবুকের বরাতে রয়টার্স জানায়, এমবেডেড ফাইন্যান্স স্টার্টআপে চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৪২৫ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে বিনিয়োগকারীরা। ২০২০ সালের তুলনায় যা তিনগুণ বেশি। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছে সুইডিশ প্রতিষ্ঠান ক্লার্না, চলতি বছরে যারা ১৯০ কোটি ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে। গত মাসে অ্যামাজনের সঙ্গে অংশীদারিত্ব ঘোষণার পর ভ্যালুয়েশন বেড়েছে অ্যাফার্মের। এদিকে ২ হাজার ৯০০ কোটি ডলারে অস্ট্রেলীয় বিএনপিএল প্রতিষ্ঠান আফটারপে কিনে নেয় অ্যাফার্মের মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বী স্কয়ার। বর্তমানে স্কয়ারের বাজার মূল্য দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। যেখানে ইউরোপের সবচেয়ে বড় মূলধনি ব্যাংক এইচএসবিসির বাজার মূল্য ১০ হাজার ৫০০ কোটি ডলার।
চলতি বছরে আরো বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আর্থিক সেবা খাতে প্রবেশের ঘোষণা দিয়েছে। বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান রিব্বিটের সঙ্গে গত জানুয়ারিতে একটি স্টার্টআপ চালু করেছে ওয়ালমার্ট। গত মাসে বিএনপিএলের শেয়ার ক্রয় করেছে আইকিয়া। ফক্সওয়াগন, আউডি ও টাটার মতো গাড়ি কোম্পানিও এ সম্ভাবনাময় খাতে অনুপ্রবেশ করছে।

কোন মন্তব্য নেই