বেইজিংকে বোকা বানিয়েছেন পুতিন: রুশ হামলা নিয়ে চীনা ইতিহাসবিদ
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের নিন্দা জানিয়েছেন চীনের পাঁচজন প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ। এক খোলা চিঠিতে তারা রাশিয়ার হামলা প্রত্যাখ্যান করে শান্তির আহ্বান জানিয়েছেন। লেখকরা চিঠিতে আশা করেছেন বেইজিং নিজের অবস্থান স্পষ্ট করবে: রাশিয়া যা করছে ভুল এবং চীনের উচিত জোর গলায় তা বলা। এই ইতিহাসবিদদের একজন জু গউকি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে তিনি বলেছেন, পুতিন হয়তো চীনকে বোকা বানিয়েছেন।
প্রকাশ্যে চীন যে কোনও আঞ্চলিক অখণ্ডতা লঙ্ঘনের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানায়। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ি শুক্রবার একই অবস্থানের কথা পুনরায় তুলে ধরেছেন। কিন্তু গত সপ্তাহজুড়ে ইউক্রেনে রুশ হামলায় বেসামরিক প্রাণহানি ও পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা জোরদার হওয়ার সময় বেইজিং হামলার জন্য পুতিনের যুক্তিকে তুলে ধরছে। যেখানে পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর সম্প্রসারণকে হামলার ন্যায্যতা দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এই বিষয়ে ইতিহাসবিদ জু গউকি বলেন, তারা সত্যি এটা বিশ্বাস করে? অরক্ষিতকে রক্ষা করতে চীনের নিজের গ্রহণযোগ্যতা খাটো করে দেখার তুলনায় এটা কি মূল্যবান? আমি আশঙ্কা করছি পুতিন তাদের বোকা বানিয়েছেন।
তিনি জানান, তারা এই চিঠি লিখেছেন কারণ দেশকে ভালোবাসেন। তারা চান না সম্ভাব্য বিশ্বব্যাপী কোনও দুঃখজনক ঘটনায় চীনের ভবিষ্যৎ স্থবির হয়ে পড়ুক।
তার মতে, এটি একেবারে সাদা-কলো বিষয়। এটি একটি আক্রমণ। চীনারা যেমন বলে থাকে: হরিণকে ঘোড়া বলা যায় না। চীনা ইতিহাসবিদ হিসেবে আমরা চাই না চীনকে এমন কিছুতে জড়ানো হোক যাতে করে বিশ্বের বর্তমান শৃঙ্খলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মানবতার প্রতি ভালোবাসা, বিশ্বের শান্তি ও উন্নতির জন্য, আমাদের এটি স্পষ্ট করা প্রয়োজন।
চীনা ইতিহাসবিদ আরও বলেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের একজন ইতিহাসবিদ আমি। ১০০ বছর আগে ইউরোপ চোখ বুজে একটি বড় যুদ্ধে জড়িয়েছে। যেটির ভয়াবহ পরিণতি চীনকে ভোগ করতে হয়েছে। এই যুদ্ধ কোথায় গড়াবে? এটি কি বড় আকারের যুদ্ধে পরিণত হবে? ইতিহাসের বড় বড় বিপর্যয়গুলো প্রায়ই স্থানীয় সংঘাতে শুরু হয়েছে। আমরা ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের দৃঢ় বিরোধিতা করি। শক্তির জোরে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রে আক্রমণ জাতিসংঘের চার্টার অনুসারে আন্তর্জাতিক রীতির লঙ্ঘণ এবং বিদ্যমান আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভঙ্গ করা।
অনলাইনে তাদের এই খোলা চিঠিতে প্রকাশের১ ঘণ্টা ৪০ মিনিটের মাথায় নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই যুদ্ধপন্থী চীনারা এই ইতিহাসবিদদের নিয়ে হাসি-তামাশায় মেতেছে। এটিকে তারা লজ্জাজনক ও বিশ্বাসঘাতকতামূলক হিসেবে উল্লেখ করছে।
কোন মন্তব্য নেই