হংকংয়ে রানওয়ে থেকে ছিটকে সাগরে পড়ল কার্গো উড়োজাহাজ, নিহত ২ জন

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
হংকংয়ে রানওয়ে থেকে ছিটকে সাগরে পড়ল কার্গো উড়োজাহাজ, নিহত ২ জন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || টাইমস এক্সপ্রেস ২৪
প্রকাশিত: ২০ অক্টোবর ২০২৫, সকাল ১০:২৫
হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন দুইজন গ্রাউন্ড স্টাফ। সোমবার স্থানীয় সময় ভোরে এমিরেটসের একটি কার্গো উড়োজাহাজ রানওয়ে থেকে ছিটকে সাগরে পড়ে যায়।
বিবিসি জানিয়েছে, এমিরেটস স্কাইকার্গোর ফ্লাইট ইকে৯৭৮৮ দুবাই থেকে হংকংয়ে অবতরণের সময় উত্তর দিকের রানওয়েতে একটি বিমানবন্দরের নিরাপত্তা টহল গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খায়।
দুর্ঘটনার সময় গাড়িটিতে থাকা দুই গ্রাউন্ড স্টাফ সাগরে পড়ে যান। তাদের উদ্ধার করা হলেও পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয়। মৃতদের বয়স যথাক্রমে ৩০ ও ৪১ বছর, জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম আরটিএইচকে।
বিমানে থাকা চারজন ক্রু সদস্য সবাই জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছেন, নিশ্চিত করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
দ্বিতীয় প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা হংকং বিমানবন্দরে
১৯৯৮ সালে কাই টাক থেকে চেক ল্যাপ ককে স্থানান্তরের পর এটি বিমানবন্দরের দ্বিতীয় প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা। এর আগে ১৯৯৯ সালের আগস্টে টাইফুনের সময় চায়না এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট বিধ্বস্তে তিনজন নিহত হন।
দুর্ঘটনার পর বিমানবন্দরের উত্তর রানওয়েটি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ও দক্ষিণ রানওয়ে সচল রয়েছে বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
অপারেশন প্রধানের বক্তব্য
বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক (অপারেশন্স) স্টিভেন ইয়ু সিউ-চাং বলেন,
“অবতরণের সময় উড়োজাহাজটি রানওয়ে থেকে ছিটকে বেড়া ভেঙে ফেলে। দুর্ভাগ্যবশত তখন একটি টহল গাড়ি সেখানে ছিল এবং সংঘর্ষে সেটি সাগরে পড়ে যায়।”
তিনি আরও জানান, “দুর্ঘটনার সময় আবহাওয়া উড়োজাহাজ পরিচালনার জন্য উপযোগী ছিল, এবং এতে অন্য কোনো ফ্লাইট প্রভাবিত হয়নি।”
দ্রুত উদ্ধার অভিযান
দমকল বিভাগ জানায়, খবর পাওয়ার মাত্র দুই মিনিটের মধ্যেই ২১৩ জন কর্মী ও ৪৫টি যানবাহন নিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন, বিমানটি দুই ভাগে ভেঙে সাগরে ভাসছে।
চারজন এমিরেটস ক্রু নিজেরা দরজা ভেঙে বেরিয়ে আসেন, এরপর দ্রুত তাদের উদ্ধার করা হয়।
ব্ল্যাক বক্স খোঁজ চলছে
হংকং এয়ার অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন অথরিটি জানিয়েছে, ফ্লাইটের ডেটা রেকর্ডার ও ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (ব্ল্যাক বক্স) এখনো উদ্ধার করা যায়নি।
“তদন্তের গতি নির্ভর করছে ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার কবে সম্ভব হয় তার ওপর,” বলেন সংস্থার এক কর্মকর্তা।
৩০ বছরের পুরনো বোয়িং ৭৪৭
দুর্ঘটনাকবলিত বোয়িং ৭৪৭-৪৮১ (বিডিএসএফ) মডেলের উড়োজাহাজটি ১৯৯৩ সালে প্রথম উড়ে, অর্থাৎ এর বয়স ৩০ বছরেরও বেশি। এটি মূলত যাত্রীবাহী ছিল, পরে মালবাহী বিমানে রূপান্তর করা হয়।
ট্র্যাকিং সাইট এয়ারফ্লিটস জানায়, বিমানটি অতীতে জাপানের অল নিপ্পন এয়ারওয়েজ (এএনএ) ও সৌদিয়া এয়ারলাইন্স-এর অধীনে পরিচালিত হয়েছিল।
এমিরেটসের বিবৃতিতে বলা হয়, দুর্ঘটনাকবলিত ফ্লাইটটি ‘ওয়েট লিজ’ ব্যবস্থায় এয়ার এসিটি থেকে ভাড়া নেওয়া ছিল। উড়োজাহাজটিতে কোনো কার্গো (মালামাল) ছিল না, এবং সমস্ত ক্রু নিরাপদ রয়েছেন।
কোন মন্তব্য নেই