অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত পাকিস্তান ও আফগানিস্তান, কাতার-তুরস্কের মধ্যস্থতায় সমঝোতা
অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত পাকিস্তান ও আফগানিস্তান, কাতার-তুরস্কের মধ্যস্থতায় সমঝোতা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
দীর্ঘ উত্তেজনা ও সংঘাতের পর অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সমঝোতায় পৌঁছান।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে পাকিস্তানের সরকারি সংবাদমাধ্যম পিটিআই জানায়, কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় ১৩ ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
বৈঠকে পাকিস্তানের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। অন্যদিকে আফগানিস্তানের পক্ষ থেকে অংশ নেন তালেবান সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা। আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিল সীমান্তে চলমান উত্তেজনা প্রশমিত করা এবং পাকিস্তানের নিরাপত্তা উদ্বেগ দূর করা।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়,
“দোহায় অনুষ্ঠিত আলোচনায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তান অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে সম্মত হয়েছে। উভয় পক্ষ ভবিষ্যতে স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে যৌথভাবে কাজ করবে।”
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, ইসলামাবাদ যুদ্ধ বাড়াতে চায় না বরং সীমান্তের স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে চায়। তবে আফগান তালেবান প্রশাসনকে আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি রক্ষা ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে,
“কাতারের উদ্যোগে এই মধ্যস্থতা আঞ্চলিক শান্তি ও সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আমরা আশা করছি।”
প্রসঙ্গত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে প্রায় ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে, যা দীর্ঘদিন ধরেই সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু। গত সপ্তাহে পাকিস্তানের বিমান হামলায় আফগানিস্তানের বেশ কয়েকটি স্থানে হতাহতের ঘটনা ঘটে। পাল্টা হামলায় তালেবান যোদ্ধারা পাকিস্তানি সেনাদের লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায়, যাতে ৫৮ পাকিস্তানি সেনা নিহত হয় বলে জানায় স্থানীয় গণমাধ্যম।
সর্বশেষ বুধবার দুই দেশের সীমান্তে ফের সংঘর্ষে অন্তত ১২ জন আফগান বেসামরিক নাগরিক নিহত হন বলে দাবি করেছে কাবুল প্রশাসন।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় এই যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন হলে দক্ষিণ এশিয়ায় স্থায়ী শান্তির পথ প্রশস্ত হতে পারে।
কোন মন্তব্য নেই