আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী স্ত্রী ভরণপোষণ চাইতে পারবেন না: দিল্লি হাইকোর্টের রায়
আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী স্ত্রী ভরণপোষণ চাইতে পারবেন না: দিল্লি হাইকোর্টের রায়
অনলাইন ডেস্ক || টাইমস এক্সপ্রেস ২৪
দিল্লি হাইকোর্ট রায়ে জানিয়েছেন, কোনো স্ত্রী যদি আর্থিকভাবে স্বনির্ভর বা স্বাবলম্বী হন, তবে তিনি স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ বা অ্যালিমনি দাবি করতে পারবেন না। আদালত মন্তব্য করেছে, “স্থায়ী ভরণপোষণ সামাজিক ন্যায়বিচারের একটি ব্যবস্থা—এটি বিত্তশালী বা আর্থিকভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য নয়।”
বিচারপতি অনিল ক্ষেত্রপাল এবং বিচারপতি হরিশ বৈদ্যনাথন শঙ্কর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। ভারতের আইনি সংবাদমাধ্যম বার অ্যান্ড বেঞ্চ–এর প্রতিবেদন অনুসারে, রায়ে বলা হয়েছে—যে ব্যক্তি ভরণপোষণ দাবি করবেন, তাকে অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে যে তিনি প্রকৃত অর্থে আর্থিক সহায়তা প্রাপ্য।
আদালত পর্যবেক্ষণ করে আরও জানায়, হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্ট–এর ধারা ২৫ অনুযায়ী ভরণপোষণ দেওয়ার ক্ষেত্রে বিচারিক ক্ষমতা প্রয়োগের সময় উভয় পক্ষের আর্থিক সামর্থ্য ও বাস্তবিক দুর্বলতা বিবেচনা করতে হবে।
ফ্যামিলি কোর্টের পূর্ববর্তী আদেশ বহাল রেখে হাইকোর্ট জানায়, সংশ্লিষ্ট মামলায় স্বামী একজন আইনজীবী এবং স্ত্রী ভারতীয় রেলওয়ে ট্রাফিক সার্ভিসের কর্মকর্তা। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে বিয়ে হওয়ার পর মাত্র ১৪ মাসের মধ্যেই তারা আলাদা হয়ে যান। দাম্পত্য জীবনে কোনো সন্তান ছিল না।
স্বামী অভিযোগ করেন, স্ত্রী মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন এবং সামাজিকভাবে অপমান করেছেন। তবে স্ত্রী এই অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ আনেন। শেষ পর্যন্ত ফ্যামিলি কোর্ট বিবাহবিচ্ছেদ মঞ্জুর করে, এবং স্ত্রী ৫০ লাখ রুপি আর্থিক সমঝোতা দাবি করেন, যা তিনি আদালতে স্বীকারও করেন।
দিল্লি হাইকোর্টের মতে, যেহেতু আবেদনকারী একজন সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা এবং আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী, তাই ভরণপোষণের দাবি যৌক্তিক নয়।
উল্লেখযোগ্যভাবে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতে উচ্চমূল্যের ভরণপোষণ দাবির প্রবণতা বেড়েছে। চলতি বছরের জুলাইয়ে মুম্বাইয়ে এক নারী ১২ কোটি টাকা ও একটি বিলাসবহুল গাড়ির ভরণপোষণ দাবি করেছিলেন। তখন ভারতের প্রধান বিচারপতি বি. আর. গাভাই মন্তব্য করেছিলেন, “যদি নারী উচ্চশিক্ষিত ও কর্মক্ষম হন, তবে তিনি নিজেই নিজের জীবিকা অর্জন করতে সক্ষম।”

কোন মন্তব্য নেই