মামলায় ঝুলে গেছে এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
মামলায় ঝুলে গেছে এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন, অনিশ্চয়তায় ব্যবসায়ীদের নেতৃত্ব
দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই (ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি)–এর নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। একাধিক রিট মামলার কারণে সংস্থাটির নির্বাচন ঝুলে গেছে, ফলে প্রতিষ্ঠানটি এক বছরেরও বেশি সময় ধরে নেতৃত্বশূন্য অবস্থায় রয়েছে।
সরকার প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু মেয়াদ শেষ হলেও তিনি ভোট আয়োজন করতে পারেননি। এখন নতুন করে একজন অতিরিক্ত সচিবকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, তবে তিনি এখনও দায়িত্ব গ্রহণ করেননি।
চারটি রিটে আটকে নির্বাচন
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক নেতারা বলছেন,
“বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা সংশোধন ছাড়া এই অচলাবস্থা কাটবে না। নতুন প্রশাসক এলেও তাতে খুব একটা পরিবর্তন হবে না।”
প্রশাসকহীন দেড় মাসে ফেডারেশনের মতিঝিল কার্যালয়ে ব্যবসায়ীদের উপস্থিতিও কমে গেছে।
সভাপতি পদে সক্রিয় কয়েকজন
নির্বাচনের তারিখ অনিশ্চিত হলেও সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী ইতিমধ্যে প্রচার শুরু করেছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন—
-
শওকত আজিজ, সভাপতি, বিটিএমএ
-
মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ, সাবেক সহসভাপতি, এফবিসিসিআই
-
মোহাম্মদ আলী, সাবেক প্রথম সহসভাপতি
-
পারভেজ সাজ্জাদ আক্তার, সাবেক পরিচালক
-
জাকির হোসেন, সভাপতি, সিএনজি যন্ত্রপাতি আমদানিকারক সমিতি
দীর্ঘসূত্রতার শুরু
কিন্তু বিধিমালা সংশোধন ও মামলা জটের কারণে নির্বাচন সম্ভব হয়নি। পর্ষদ বাতিলের পর ফেডারেশনের ভেতরে “বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ” গঠিত হয়, যারা মনোনীত পরিচালক প্রথা বাতিলসহ ১২টি সংস্কার প্রস্তাব দেয়।
বিতর্কিত বিধান ও মামলার বিষয়
নতুন বিধিমালায় বলা হয়,
-
টানা দুই মেয়াদ পর্ষদে থাকা যাবে না,
-
সদস্য নিবন্ধন ফি ২ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা,
-
নির্বাচনী বোর্ড ও আপিল বোর্ড বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গঠন করবে।
এই বিধানগুলো নিয়েই শুরু হয় আইনি লড়াই।
রিট মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে:
-
আলাউদ্দিন আল মাসুম: নির্বাচন বোর্ড ও আপিল বোর্ড গঠন বেআইনি।
-
আবদুল্লাহ আল মামুদ: সদস্য নিবন্ধন ফি বাড়ানোর বিরুদ্ধে রিট।
-
মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ: টানা দুই মেয়াদ পর বিরতির বিধান চ্যালেঞ্জ।
-
মনজুর আহমেদ: মনোনীত পরিচালক নির্বাচন পদ্ধতির বিরুদ্ধে রিট।
মন্ত্রণালয়ের অবস্থান
সদ্য সাবেক প্রশাসক হাফিজুর রহমান বলেন,
“মামলা চলমান থাকলেও নির্বাচন করা নিয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। নতুন প্রশাসক চাইলে নির্বাচন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে পারবেন।”
ব্যবসায়ীদের দাবি
সাবেক সহসভাপতি মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন,
“ব্যবসায়ীরা নানা সমস্যায় আছেন, কিন্তু তাঁদের কথা বলার কেউ নেই। বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা সংশোধন করে দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে।”
সারসংক্ষেপ
-
এক বছরের বেশি সময় নেতৃত্বশূন্য এফবিসিসিআই
-
চারটি রিট মামলায় নির্বাচন ঝুলে গেছে
-
নতুন প্রশাসক নিয়োগ পেলেও দায়িত্ব নেননি
-
বিধিমালা সংশোধন ছাড়া অচলাবস্থা কাটবে না
-
ব্যবসায়ীরা দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন
কোন মন্তব্য নেই