সঞ্চয়পত্র কেনার পর যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকবেন
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
সঞ্চয়পত্র কেনার পর যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকবেন
টাইমস এক্সপ্রেস ২৪
আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৩
সম্প্রতি পাসওয়ার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে একজনের সঞ্চয়পত্রের টাকা অন্য একজন তুলে নেওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এ ঘটনায় সঞ্চয়পত্র–গ্রাহকদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঞ্চয়পত্র কেনার পর বিনিয়োগ সুরক্ষিত রাখাও গ্রাহকের দায়িত্ব। নিচে জানুন সঞ্চয়পত্র কেনার পর কোন বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি 👇
১️⃣ নথিপত্র যত্নে রাখুন
সঞ্চয়পত্র কেনার সময় ব্যাংক বা সঞ্চয় অফিস থেকে পাওয়া মূল নথিতে একটি কিউআর কোড থাকে। সেটি আছে কি না যাচাই করুন।
এই নথিগুলো যত্নে সংরক্ষণ করুন, কারণ যেকোনো প্রয়োজনে (যেমন প্রতারণা বা ভাঙানোর সময়) এগুলোই প্রমাণ হিসেবে কাজে লাগবে।
২️⃣ ব্যাংক হিসাব সক্রিয় রাখুন
সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ও আসল টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাংক হিসাবে জমা হয়। তাই আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সবসময় সক্রিয় আছে কি না নিশ্চিত করুন।
যদি অ্যাকাউন্ট বন্ধ বা নিষ্ক্রিয় থাকে, দ্রুত ব্যাংকে যোগাযোগ করে পুনরায় চালু করুন।
প্রয়োজনে নতুন অ্যাকাউন্ট যুক্ত করার জন্য আবেদন করে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।
৩️⃣ মুঠোফোন নম্বর পরিবর্তন করলে জানান
সঞ্চয়পত্রের সঙ্গে যুক্ত মোবাইল নম্বর বা ব্যাংক হিসাব নম্বর তাৎক্ষণিকভাবে পরিবর্তন করা যায় না।
মোবাইল নম্বর বদলালে অবশ্যই সঞ্চয় অধিদপ্তরে আবেদন করে জানাতে হবে।
কারণ, আপনার লেনদেনের ওটিপি ও বার্তা সেই নম্বরেই আসে।
৪️⃣ প্রতারণা থেকে সতর্ক থাকুন
সঞ্চয়পত্র–সংক্রান্ত কোনো তথ্য পরিবর্তন বা টাকা তোলার জন্য শুধুমাত্র যেখান থেকে সঞ্চয়পত্র কিনেছেন, সেই অফিসেই আবেদন করুন।
মনে রাখবেন, আপনার মুঠোফোনে আসা ওটিপি বা পাসওয়ার্ড কখনো কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না।
সম্প্রতি দেখা গেছে, পাসওয়ার্ড জালিয়াতির মাধ্যমেই অর্থ উত্তোলনের ঘটনা ঘটেছে।
৫️⃣ নমিনির তথ্য সঠিক রাখুন
নমিনির নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ও অন্যান্য তথ্য সঠিকভাবে নথিভুক্ত আছে কি না যাচাই করুন।
কারণ, গ্রাহক মারা গেলে নমিনির জন্য সঞ্চয়পত্র নগদায়ন প্রক্রিয়া সহজ করতে সঠিক তথ্য অপরিহার্য।
৬️⃣ মেয়াদপূর্তির আগে নগদায়নের নিয়ম জানুন
জরুরি প্রয়োজনে সঞ্চয়পত্র মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ভাঙানো সম্ভব, তবে এতে মুনাফার হার কমে যেতে পারে বা জরিমানা কাটা হতে পারে।
তাই নিয়ম–কানুন জেনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ, না হলে অর্থ উত্তোলনের সময় বিভ্রান্তি ও ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন।
🔍 সাম্প্রতিক প্রতারণার উদাহরণ
- 
এক ব্যক্তি বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কেনেন।
 - 
কয়েক দিনের মধ্যেই সেই সঞ্চয়পত্র ভাঙিয়ে অন্য এক ব্যক্তির হিসাবে টাকা তুলে নেওয়া হয়।
 - 
আরও দুটি ঘটনায় ৩০ লাখ ও ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ভাঙানোর চেষ্টা হয়, যা শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশ ব্যাংক আটকে দেয়।
 
🧭 সারসংক্ষেপে পরামর্শ
| বিষয় | করণীয় | 
|---|---|
| মূল নথি | কিউআর কোডসহ নথি সংরক্ষণ | 
| ব্যাংক হিসাব | সক্রিয় রাখা ও প্রয়োজনে হালনাগাদ | 
| মোবাইল নম্বর | পরিবর্তন হলে আবেদনপত্রের মাধ্যমে জানানো | 
| নিরাপত্তা | ওটিপি বা পাসওয়ার্ড কাউকে না দেওয়া | 
| নমিনি | তথ্য সঠিক ও হালনাগাদ রাখা | 
| নগদায়ন | নিয়ম জেনে মেয়াদপূর্তির আগে ভাঙানো | 
কোন মন্তব্য নেই