আজ ১২ রবিউল আউয়াল শনিবার, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

আজ ১২ রবিউল আউয়াল শনিবার, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)।



টাইমস এক্সপ্রেস ডেস্ক:হিজরি ১২ রবিউল আউয়াল আজ। বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সা:-এর জন্ম ও ওফাত দিবস। প্রায় ১ হাজার ৪০০ বছর আগে ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের এ দিনে মক্কার কুরাইশ বংশে মা আমেনার ঘরে জন্মলাভ করেন তিনি।আবার এই দিনে তিনি পৃথিবী ছেড়ে চলে যান।

 একটা সময় গোটা আরব জাহান ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। মানুষ হয়ে পড়েছিল বেদীন। তারা আল্লাহকে ভুলে গিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়েছিল। সর্বত্র দেখা দিয়েছিল অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা।এ যুগকে বলা হতো আইয়ামে জাহেলিয়াত। তখন মানুষ মারামারি আর হানাহানিতে লিপ্ত ছিল এবং মূর্তিপূজা করত। এ থেকে মানুষকে মুক্তিসহ তাদের আলোর পথ দেখাতে মহান আল্লাহতায়ালা হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে এই ধরাধামে পাঠান।

আইয়ামে জাহেলিয়াতের অন্ধকার দূর করে তৌহিদের মহান বাণী নিয়ে এসেছিলেন এই মহামানব। প্রচার করেছেন শান্তির ধর্ম ইসলাম। তাঁর আবির্ভাব এবং ইসলামের শান্তির ললিত বাণীর প্রচার সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে।

ইসলাম ধর্মমতে, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হজরত মুহাম্মদ (সা.) নবুওয়াতের সিলসিলায় শেষ নবী। তাঁর জন্ম ও ওফাত দিবস ১২ রবিউল আউয়াল মুসলমানদের কাছে এক পবিত্র দিন। মুসলমান সম্প্রদায় দিনটি পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) হিসেবে পালন করেন। বছর ঘুরে এল আবার সেই দিন।

ঈদে মিলাদুন্নবীর গুরুত্ব ও তাৎপর্য : ঈদ, মিলাদ আর নবী তিনটি শব্দ যোগে দিবসটির নামকরণ হয়েছে। ঈদ অর্থ আনন্দোৎসব, মিলাদ অর্থ জন্মদিন আর নবী অর্থ ঐশী বার্তাবাহক। তাহলে ঈদে মিলাদুন্নবীর অর্থ দাঁড়ায় নবীর জন্মদিনের আনন্দোৎসব। ১২ রবিউল আউওয়াল একই সাথে মহানবীর জন্ম ও মৃত্যু দিবস হলেও তা শুধু জন্মোৎসব হিসেবেই পালিত হয়। পৃথিবীর যেকোনো মানুষের মৃত্যুই তার পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্য বিরাট শূন্যতা সৃষ্টি করে। কিন্তু মহানবীর মৃত্যু মানবসমাজ ও সভ্যতার কোনো পর্যায়ে কোনো শূন্যতার সৃষ্টি করেনি। যদিও তাঁর মৃত্যুর চেয়ে অধিক বেদনাদায়ক কোনো বিষয় উম্মতের জন্য হতে পারে না। তিনি প্রেরিত হয়েছিলেন সমগ্র পৃথিবীর জন্য আল্লাহর রহমত হিসেবে। চল্লিশ বছর বয়সে নবুওয়াত লাভের পর দীর্ঘ ২৩ বছর হজরত মুহাম্মদ সা: কঠোর পরিশ্রম ও শত বাধাবিপত্তি মোকাবেলা করে ইসলামের সুমহান আদর্শ প্রচার করে গেছেন। তার প্রতিটি কাজ ও কথা আমাদের জন্য আদর্শ। তার দেখানো পথেই পৃথিবীতে আসতে পারে শান্তি ও মানবতার মুক্তি। এরশাদ হয়েছে, আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছি। (সূরা আল-আম্বিয়া : ১০৭)

মহান আল্লাহ রাসূলুল্লাহ স:-এর আদর্শকে জীবনে ধারণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এরশাদ হয়েছে, ‘হে রাসূল! আপনি বলে দিন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবেসে থাক তাহলে আমাকে অনুসরণ করো, আল্লাহ তায়ালা তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গুনাহগুলো মা করে দেবেন। আর আল্লাহ পরম মাশীল, অসীম দয়ালু। (সূরা আল-মায়িদা : ৩১) রাসূলুল্লাহ সা: চারিত্রিক শ্রেষ্ঠত্বের মাধ্যমেই একটি শ্রেষ্ঠ জাতি গঠন করেছিলেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা: বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, নিশ্চয়ই আমি সর্বোত্তম চরিত্রের পূর্ণাঙ্গতা সাধনের জন্য প্রেরিত হয়েছি। (ইবনে মাজা) রাসূলুল্লাহ সা:-এর আদর্শ ধারণ করেই সাহাবায়ে কেরাম রা: যুগের সর্বোত্তম মানুষ হতে পেরেছিলেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা: বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, সর্বোত্তম মানুষ হলো আমার যুগের মানুষ, অতঃপর তাদের পরবর্তী যুগের মানুষ, তারপর তাদের পরবর্তী যুগের মানুষ। (সহীহ বোখারি)


পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পক্ষকালব্যাপী অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়েছে।
ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান শুক্রবার বাদ আসর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে প্রধান অতিথি হিসেবে এ অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বজলুল হক হারুন এ অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজাল। উদ্বোধন শেষে বাদ মাগরিব ওয়াজ করেন তেজগাঁওস্থ মদীনাতুল উলুম কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুর রাজ্জাক আল আযহারী।
ইফার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঈদে মিলাদুন্নবীর অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে, ১-১৫ ডিসেম্বর প্রতিদিন বাদ মাগরিব বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে ওয়াজ ও মিলাদ মাহফিল। দেশবরেণ্য পীর-মাশায়েখ ও ওলামায়ে কেরামরা উক্ত মাহফিলে বয়ান করবেন।
এ ছাড়া বাংলাদেশ বেতারের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী মহানবী (সা.) জীবন ও কর্মের ওপর সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম মিলনায়তনে বাদ আসর অনুষ্ঠিতব্য সেমিনার রেকর্ডিং করে বাংলাদেশ বেতারের এফএম ১০৬ মেগাহার্টজে প্রতিদিন রাত সোয়া ১০টায় প্রচার করা হবে।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আলোচনা সভা , মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিয়ায় বাদ জোহর আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।




কোন মন্তব্য নেই