মাছের আড়ৎ থেকে ভাগ্য বদলের গল্প - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

মাছের আড়ৎ থেকে ভাগ্য বদলের গল্প




পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি বাজারের মাছের আড়ৎ বদলে দিয়েছে এলাকার মাছ চাষিদের ভাগ্য। প্রতিদিন ভোর থেকে মুলাডুলি মৎস্য আড়তে শুরু হয় মাছের বেচাকেনা। মাছ চাষি ও ব্যাপারিদের পদচারণায় আড়ৎ এলাকায় উৎসব মুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এলাকার ও আশপাশের মৎস্য চাষিরা বিক্রির জন্য তাদের উৎপাদিত মাছ এই আড়তে নিয়ে আসেন কারণ খাজনা লাগে না, চাঁদা বা কমিশন দিতে হয় না। স্থানীয় মাছের আড়ৎদারেরা ব্যাপারিদের কাছে মাছ বিক্রি করে মাছ চাষিদের নগদ টাকা বুঝিয়ে দেন। এখন আর তাদের মাছ বিক্রির টাকার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধর্ণা দিয়ে আড়তে বসে থাকতে হয় না।

মাছ চাষি আব্দুল কাদের মৃধা বলেন, তার ২২ বিঘা মাছের পুকুর রয়েছে। প্রতিদিন আড়তে বিক্রির জন্য মাছ নিয়ে আসি।

মুলাডুলির আড়তে মাছ বিক্রি করলে খাজনা নেয় না। সঠিক ওজন ও চলমান বাজার মূল্যে দাম পাওয়া যায়। অন্যান্য এলাকার আড়তের চেয়ে কমিশনও অনেক কম নেয় এখাকার আড়তদারেরা।

চাষি রফিকুল ইসলাম মন্ডল বলেন, ছোট বড় মিলিয়ে ৭০ বিঘা পুকুরে মাছের চাষ করেছি। রাজাপুর আড়তে মাছ বিক্রির জন্য গেলে আমাদের বড় মাছটা আড়তের লোকজন নিয়ে যেতো। এছাড়া শতকরা ৪ টাকা কমিশন কেটে নিতো। কিন্তু মুলাডুলি আড়তে তার অর্ধেক কমিশনে আমাদের ইচ্ছে ও সুবিধা মত মাছ বিক্রি করতে পারি। এখানে মাছ বিক্রি করতে কোনো চাঁদা দিতে হয় না।

মাছ বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, এখানে মাছের গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য বড় জায়গা রয়েছে। আড়তদারেরা বাড়তি মাছ নেয় না, কমিশন কম কাটে। মাছ বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের টাকা পরিশোধ করে দেয়।





গাড়ির চালক আক্তার মন্ডল বলেন, এখানে গাড়ি পার্কিংয়ের সুন্দর জায়গা রয়েছে। গাড়ি থেকে কেউ চাঁদা দাবি করে না। আমরা ভালোভাবে মাছ নামাতে ও উঠাতে পারি।

আড়ৎদার মহসিন আলী বলেন, আমাদের এলাকায় ও আশপাশে শত শত মাছ চাষি রয়েছে। তাদের উৎপাদিত মাছ বিক্রির জন্য অন্যান্য এলাকার আড়তে নিয়ে গেলে নানা সমস্যা পোহাতে হতো। মুলাডুলি আড়তে মাছ বিক্রি করলে খাজনা নেই, চাঁদাবাজি নেই। মাছ বিক্রেতাদের কাছ থেকে অন্য এলাকার আড়তে যে কমিশন নেয় তার অর্ধেক কমিশন আমরা নিয়ে থাকি।

হাট মালিক আব্দুল মতিন বলেন, চাষিদের সুবিধা বিবেচনা করে মুলাডুলিতে মাছের আড়ৎ করা হয়েছে। এখানে যারা মাছ বিক্রি করেন তাদের কাছ থেকে কোনো খাজনা নেয়া হয় না। ঈশ্বরদীর বাইরে থেকে যারা মাছ কিনতে আসেন তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থাসহ মাছের গাড়ি রাখার জন্য সুবিধা রয়েছে।



মুলাডুলি ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম মালিথা বলেন, আমার ইউনিয়নে ও আশেপাশে কয়েকশ মাছের পুকুর রয়েছে। এসব পুকুর থেকে প্রচুর পরিমাণে মাছ উৎপাদন হয়। অন্যান্য এলাকায় মাছ বিক্রি করতে গিয়ে নাজেহাল হয় এসব মাছ চাষিরা। মাছ চাষিদের স্বার্থের কথা ভেবেই মুলাডুলিতে আড়ৎ খোলা হয়েছে। এখানে সকল ধরনের সুযোগ-সু্বিধা রয়েছে। মুলাডুলি বাজারের মাছের আড়ৎ বদলে দিয়েছে এলাকার মৎস্য চাষিদের ভাগ্য।


TE

কোন মন্তব্য নেই