রাজশাহী নগরীতে পূজামন্ডপে ‘বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট’ - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

রাজশাহী নগরীতে পূজামন্ডপে ‘বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট’



রাজশাহী নগরীতে শারদীয় দুর্গোৎসবের মন্ডপ তৈরী করা হয়েছে সম্পূর্ণ বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের আদলে। বাঁশ আর কাপড় দিয়ে তৈরী করা হয়েছে এ পুজা মন্ডপ। স্যাটেলাইটের নিচে গ্রাউন্ড স্টেশনের গ্রেট দিয়ে প্রবেশ করলেই দৃশ্যমান হবে এটি শারদীয় দুর্গোৎসবের একটি বিশাল পুজা মন্ডপ। সেখানে থরে থরে সাজানো দুর্গাতিনাশিনী দেবী দুর্গা ও অন্যান্য প্রতীমা।




জেলার বাইরে রাজশাহী নগরীজুড়েই শুধু ৮০ টি মন্ডপ তৈরি করা হয়েছে এবার। এর মধ্যে নগরীর রাণীবাজার মোড়ের টাইগার সংঘের মন্ডপটি অন্যন্য। এখানেই তৈরি মন্ডপই করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের আদলে। তাই সবার দৃষ্টি সেখানেই। এটি নির্মাণের পর থেকে মানুষের ভীড় বাড়ছেই।
প্রতিবারই বিশেষ কিছু করার সুনাম রয়েছে এই মন্ডপের। কখনো বাহুবলী, কখনো বা বাঘের বিশাল বড় মস্তক আকৃতির মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের গর্বিত সাফল্য তুলে ধরেন তারা। দেশের অর্জনগুলো নিয়েই পূজা মন্ডপ তৈরীতে পারদর্শী টাইগার সংঘ। ফলে প্রতিবছরই নগরবাসী উৎসুক হয়ে থাকেন নতুন কি নিয়ে আসছে টাইগার সংঘ।
গতবার ছিলো বাহুবলি। তার আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাফল্যগাথা বাঘের মুখাকৃতি সমৃদ্ধ মন্ডপ। তবে এবারের চমকটা যেন একটু বেশিই বড়। রাণীবাজার মোড় অতিক্রম করতে গেলেই চোখ আটকে যায় মন্ডপটিতে। যারা টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ দেখতে পারেননি, তাদের সেই অপূর্ণ ইচ্ছেটা হয়তো এখানে পূরণ হতে পারে। হ্যাঁ, বাঙালীর অনন্য অর্জন বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট এর হুবহু আদলে তৈরী করা হয়েছে এবারের মন্ডপ।
এখানে যে কারো চোখে পড়বে মহাকাশে বঙ্গবন্ধু-১ সাটেলাইট উৎক্ষেপণকারী স্পেস-এক্স এর রকেটটি। মনে হতে পারে রকেটটি প্রস্তুতি নিচ্ছে মহাকাশে উড্ডয়নের জন্য। সাদা রঙের সুবিশাল রকেটটি মাথা উচু করে দাড়িয়ে জানান দিচ্ছে বাংলাদেশের মহাকাশ জয়ের ইতিহাস। রকেটটির গায়ে লেখা “বঙ্গবন্ধু-১”। তার গাঁয়ে রয়েছে বাঙালীর রক্তে অর্জিত লাল সবুজের পতাকা।

রকেটটির নিচের দিকে লাল কাপড়ের কুচিগুলো রকেট থেকে নির্গত অগ্নি ধোঁয়ার স্মারক। মনে হতে পারে এই বুঝি মহাকাশে উড়াল দেবে।

পাশেই কালো কাপড়ের তৈরী সুবিশাল মহাকাশ দৃশ্য। আর এতে ভেসে রয়েছে সবুজ-ধূসর পৃথিবী। তার চারদিকে আবর্তমান বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট কিছুক্ষণের জন্য নিয়ে যাবে মহাকাশে। রাতের আলোকসজ্জায় মন্ডপটির সামনে দাড়িয়ে হয়তো কিছুক্ষনের জন্য ঘুরে আসা যেতে পারে বিস্তৃত মহাকাশের হাজারো গ্রহ নক্ষত্রের জগৎ থেকে। অনুভব করলেই যে কেউ হয়ে যেতে পারেন নাসার দুর্দান্ত মহাকাশচারী। রাতের বর্ণিল আলোয় দেখা যাবে মহাকাশ থেকে পৃথিবীর রুপ।
বাশ আর কাপড়ের তৈরী বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের দিকে নজর দিলেই মনে হবে আসল স্যাটেলাইট। টেলিভিশনের পর্দায় দেখা দৃশ্যের সঙ্গে পার্থক্য খুঁজে পাওয়াটা মুশকিলই বটে। স্যাটেলাইটের দুই ডানায় রয়েছে বাংলাদেশের পতাকা। লাল সবুজের পতাকা বিশিষ্ট দুই ডানা নিয়ে বঙ্গবন্ধু-১ যেন বর্ণিল প্রজাপতি।
সন্ধ্যার আলোকসজ্জার ঝলকানিতে যেন জীবন্ত হয়ে ওঠছে বঙ্গবন্ধু-১। উড়ন্ত বঙ্গবন্ধু-১ পৃথিবী ঘুরে এসে সংকেত পাঠাচ্ছে এমনটা অনুভব করতে চাইলে সন্ধ্যার আলো আধারীতে ঘুরে দেখতে হবে মন্ডপটি। সঙ্গে দেখা যাবে সূদুর আমেরিকায় অবস্থিত ন্যাশনাল অ্যারোনটিকস এন্ড স্পেস এ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা) সেন্টারের প্রতিকৃতি। এ মন্ডপ ঘিরে তাই শুরু থেকেই কৌতুহলী মানুষের ভীড় বাড়ছেই। সন্ধ্যার পর লোকে লোকারণ্য হচ্ছে এখন রাজশাহী নগরীর রাণীবাজার এলাকায় অবস্থিত টাইগার সংঘের মন্ডপ। তাদের প্রতীমাতেও এবার নিয়ে আসা হয়েছে বৈচিত্র্য। সাধারণ প্রতীমার চেয়ে খানিকটা আলাদা। মনে হতে পারে বিশাল রঙিন ক্যানভাসে গা ভাসিয়ে আছে দুর্গতিনাশিনী দুর্গা থেকে শুরু করে গনেশ, কর্তিক, স্বরসতি ও লক্ষী।
আয়োজক টাইগার সংঘের সাধারণ সম্পাদক পার্থ পাল চৌধুরী জানান, প্রতিবছরই ব্যতিক্রমী কিছু করার প্রয়াস চালায় টাইগার সংঘ। এবার তাদের পুজামন্ডপ তৈরি করা হয়েছে দেশের বড় অর্জন বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের আদলে। এটি বাংলাদেশের অনন্য অর্জন। এ অর্জনকে তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতেই এবারের আয়োজন।

কোন মন্তব্য নেই