রাজশাহীতে চলছে পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘট
রাজশাহীতে সকাল থেকে শুরু হয়েছে ৪৮ ঘণ্টার শ্রমিক ধর্মঘট। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে সারা দেশের ন্যায় রাজশাহীতেও এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
রাজশাহী জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সূত্রে জানা যায়, সংসদের পাসকৃত সড়ক পরিবহন আইনের কিছু ধারা শ্রমিক পরিপন্থি মনে হওয়ায় এই আইন মেনে শ্রমিকরা সড়কে গাড়ি চালাতে চাচ্ছে না। সড়ক পরিবহন আইনের ধারা সংশোধনের দাবিতে শ্রমিকরা সকাল ৬টা থেকে সকল ধরনের কাজ বন্ধ রেখেছে। ফলে সড়কে বাস, ট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বাস-ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে কর্মরত মানুষদের। আসলাম সরদার ঢাকা থেকে রাজশাহী এসেছিলে ব্যবসায়িক কাজে। রবিবার সকালে তার ঢাকায় ফিরে যাবার কথা ছিল। হঠাৎ পরিবহন ঘর্মঘটে তাকে বিপাকে পড়তে হয়েছে। একই অবস্থা উপশহর নিবাসী সাজিদা সরকারের। তিনি জানান, কাল (সোমবার) তার ঢাকায় চাকরির একটি ভাইভা ছিল। হাঠাৎ বাস চলাচল বন্ধা করে দেয়ায় তার ইন্টারভিউ দেয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়তে হলো। ট্রেনেও সিট নেই।
এর আগে শনিবার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি সংসদ সদস্য ওয়াজিউদ্দিন খান ও সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ৪৮ঘন্টা শ্রমিক ধর্মঘটের কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে পরিবহন শ্রমিকদের ৮দফা তুলে ধরা হয়।
পরিবহন শ্রমিকদের ঘোষিত আট দফ দাবি হলো, সড়ক দুর্ঘটনায় মামলা জামিনযোগ্য করতে হবে, শ্রমিকদের অর্থদণ্ড পাঁচ লাখ টাকা করা যাবে না, সড়ক দুর্ঘটনা তদন্ত কমিটিতে শ্রমিক প্রতিনিধি রাখতে হবে, ড্রাইভিং লাইসেন্সে শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণী করতে হবে, ওয়েস্কেলে (ট্রাক ওজন স্কেল) জরিমানা কমানোসহ শাস্তি বাতিল করতে হবে, সড়কে পুলিশের হয়রানি বন্ধ করতে হবে, গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের সময় শ্রমিকদের নিয়োগপত্র সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সত্যায়িত স্বাক্ষর থাকার ব্যবস্থা করতে হবে, সব জেলায় শ্রমিকদের ব্যাপক হারে প্রশিক্ষণ দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করতে হবে এবং লাইসেন্স ইস্যুর ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধ করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। ফেডারেশনের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন যুগোপযোগী আধুনিক ও উন্নত সড়ক পরিবহন আইন প্রণয়নের দাবি করে আসছে।
সেই দাবিকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান সরকার আইন পাস করলেও বেশকিছু ধারা শ্রমিকস্বার্থের বিরুদ্ধে করা হয়েছে। যে কারণে পরিবহন শ্রমিকদের চরম অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে।
এছাড়া আইনে সড়ক দুর্ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসেবে গণ্য না করে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে জামিন অযোগ্য করা হয়েছে। আমরা জানি দুর্ঘটনা পরিকল্পিতভাবে ঘটে না কিন্তু অপরাধ পরিকল্পিতভাবেই ঘটে।

কোন মন্তব্য নেই