পরিত্যক্তের আশঙ্কায় যুক্তরাজ্যের বহু শহর
![]() |
| পরিত্যক্তের আশঙ্কায় যুক্তরাজ্যের বহু শহর |
জলবায়ু
পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে যুক্তরাজ্যের
বহু শহর পরিত্যক্ত হবে
বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে
ব্রিটেনের পরিবেশ সংস্থা।
সংস্থাটি
সতর্ক করে বলেছে, আগামী
কয়েক বছরের মধ্যে যুক্তরাজ্যের
সমুদ্র এবং নদী উপকূলীয়
শহরগুলোতে যারা বসবাস করছেন
তাদের সবাইকে অন্যত্র সরিয়ে
নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
বৈশ্বিক তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস
বেড়ে চলার প্রেক্ষাপটে এই
সতর্কতা জারি করা হলো।
যেকোনো
জরুরি পরিস্থিতি সামাল দিতে যুক্তরাজ্যের
প্রস্তুত থাকার কথা উল্লেখ করে সংস্থা
বলছে, আগামী কয়েক বছর
তথা কয়েক দশকের মধ্যে
এই সংকটপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করতে হবে যে,
বড় কোনো বন্যা মোকাবিলার
সক্ষমতা ব্রিটেনের নিশ্চয়ই রয়েছে। তবে
এজন্য বহুতল বিশিষ্ট ভবনকে
প্রতিরক্ষা হিসেবে বিবেচনা করা
যাবে না।
বৈশ্বিক
পরিমণ্ডলে বিশ্বাসযোগ্য এই পরিবেশ সংস্থার
চেয়ারম্যান এমা হাওয়ার্ড
বলেছেন, উপকূলীয় অঞ্চলের পরিবর্তন এবং প্লাবন ঠেকাতে
দীর্ঘমেয়াদী কৌশল গ্রহণ করা
প্রয়োজন। বৈশ্বিক
তাপমাত্রা ৪
ডিগ্রি সেলসিয়াস কিংবা তার চেয়েও
বেশি তাপমাত্রা চিন্তা করেই এই
কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।
প্যারিস সম্মেলনের সময়ে সব দেশ
একত্রে যে চুক্তিতে
স্বাক্ষর করেছে তাতে এরকমই
বলা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, উপকূলীয়ও
অঞ্চল কখনোই একই জায়গায়
থাকে না এবং সর্বদাই
প্লাবিত হয়ে থাকে।কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন
দিন দিন বেড়ে চলায়
এর হুমকি আরো জোরদার
হচ্ছে। আমাদের
সামনে অসীম উচ্চতার প্লাবনের
যে প্রতিবন্ধকতা আসছে তা মাথায়
না রেখে আমরা ভবন
নির্মাণ করেই পানির বিরুদ্ধে
যুদ্ধে জয়ী হতে পারি
না। ইংল্যান্ডে
খাপ খাওয়ানো উপকূলীয় এলাকা এবং বন্যার
জন্য সঙ্গতিপূর্ণ মানসম্মত উন্নয়ন প্রয়োজন।
তাহলেই উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের সুরক্ষা
দেওয়া সম্ভব। এসব
এলাকার লোকজনের ঝুঁকিগুলোকে ভালো করে বুঝতে
হবে এবং তাদের কী
ধরনের সহায়তা প্রয়োজন তা
নিশ্চিত করতে হবে।
এমা হাওয়ার্ড জোর দিয়ে বলেন,
জলবায়ু সম্পর্কে আমরা আগে যে
ধরনের ঝুঁকির কথা ভেবেছিলাম,
এখন ক্রমেই তার চেয়েও
ভয়াবহতার দিকে যাচ্ছে।
অতএব এখনই সময় যে,
আমাদের আর দেরি না
করেই কৌশল পরিবর্তন করতে
হবে এবং এ দুর্যোগ
মোকাবিলায় ভিন্ন
এক নতুন দর্শনের কথা
ভাবতে হবে।
সাম্প্রতিক
জলবায়ুবিষয়ক কমিটির এক প্রতিবেদনে
বলা হয়েছে, ২০৮০ সাল
নাগাদ ইংল্যান্ডের প্রায় ১৫ লাখের
বেশি ঘর-বাড়ি পানির
নিচে তলিয়ে যেতে পারে। এই
ঝুঁকি খুবই তাৎপর্যপূর্ণভাবে দেখা
যাচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ
করা হয়েছে। ইংল্যান্ডের
পূর্ব উপকূলীয়ও এলাকায় সমুদ্রপৃষ্ঠ উচ্চতায়
এবং নদীর পানি ফুলে
ওঠায় ২০১৩ সালে মারাত্মক
বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল।
এতে ৫৫ হাজারের বেশি
ঘর-বাড়ি পানির নিচে
তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছিল।১৯৫৩
সালেও উত্তরাঞ্চলীয় এলাকায় এমনই পরিস্থিতি
হয়। এমনকি
২০১৪ সালে বানের পানিতে রেল
যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটে।
বন্যা ও ঝড়ে ব্রিটেনের
অনেক এলাকা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত
হয়েছিল।
জলবায়ুবিষয়ক
কমিটির সুপারিশে বলা হয়, একের
পর এক বন্যা আসার
পর ওই এলাকা ছেড়ে
দিয়ে অন্য এলাকায় গিয়ে
শুধু উঁচু উঁচু বিল্ডিং
তৈরি করলেই এর সমাধান
কখনো সম্ভব নয়।
বরং জলবায়ু স্থিতিস্থাপক বা
খাপ খাওয়ানো কমিউনিটি গড়তে হবে।
#মোঃ রায়হান চৌধুরী

কোন মন্তব্য নেই