আবরার হত্যাকান্ডের বিচারে যে কোন আইনী সহায়তা দিতে প্রস্তুত ব্যারিস্টার সুমন - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

আবরার হত্যাকান্ডের বিচারে যে কোন আইনী সহায়তা দিতে প্রস্তুত ব্যারিস্টার সুমন







বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে নৃশংসভাবে খুন করা আসামীদের দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে বিচার নিশ্চিত করে ভবিষ্যতে ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আহবান জানিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। সাথে সাথে এ এই নৃশংস হত্যাকান্ডের বিচার আদায়ে যে কোন আইনী সহায়তা দিতেও প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন তিনি।

আজ বুয়েটের সামনে থেকে এক ফেসবুক লাইভে ব্যারিস্টার সুমন এ দাবি করেন। এবং তিনি তার লাইভে বুয়েটের ছাত্রদের আটদফা দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করেন। সাথে সাথে তিনি বলেন, যেহেতু বিচারিক কার্যক্রম অনেক নিয়মের মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাই যারাই এই বিচার কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত আছেন তারা যেন অতিদ্রুত এই নৃশংস হত্যাকান্ডের বিচারটি করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। এবং আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে যেন কেহ বের হয়ে যেতে না পারে সেদিকে যেন সবার সজাগ দৃষ্টি থাকে এ ব্যাপারেও তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন। এছাড়াও আবরার ফাহাদ হত্যাকান্ড বিষয়ে যে কোন আইনী সহায়তা দিতে তিনি সদা প্রস্তুত থাকবেন বলেও জানিয়েছেন।

বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত সন্দেহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ। তিনি গত রোববার চকবাজার থানায় এ মামলা করেন। মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা প্রত্যকেই বুয়েটের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা হলেন মেহেদী হাসান, সিই বিভাগ (কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ১৩তম ব্যাচ), মুহতাসিম ফুয়াদ (১৪তম ব্যাচ, সিই বিভাগ), অনীক সরকার (১৫তম ব্যাচ), মেহেদী হাসান রবিন (কেমিক্যাল বিভাগ, ১৫তম ব্যাচ), ইফতি মোশারফ হোসেন (বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), মনিরুজ্জামান মনির (পানিসম্পদ বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাজ, মাজেদুল ইসলাম (এমএমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মোজাহিদুল (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), তানভীর আহম্মেদ (এমই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), হোসেন মোহাম্মদ তোহা (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ) , জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), আকাশ (সিই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), শামীম বিল্লাহ (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), শাদাত (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), তানীম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মোর্শেদ (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মোয়াজ, মনতাসির আল জেমি (এমআই বিভাগ)। এদিকে ১৯ আসামীর মধ্যে ১০ জনকে পুলিশী সোপর্দে নিয়ে পাঁচদিন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। চকবাজার থানায় আবরারের বাবার করা মামলায় মঙ্গলবার গ্রেপ্তারদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিল পুলিশ। শুনানি নিয়ে ঢাকার মহানগর হাকিম সাদবির ইয়াছির আহসান চৌধুরী পাঁচদিন রিমান্ডের আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন মহানগর পুলিশের অপরাধ তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-কমিশনার জাফর হোসেন।



যাদেরকে পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে তারা হলেন- বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, দ্বিতীয় বর্ষ), সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, দ্বিতীয় বর্ষ), সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, চতুর্থ বর্ষ), তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, চতুর্থ বর্ষ), ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, চতুর্থ বর্ষ), উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল (বায়ো মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং, তৃতীয় বর্ষ), সদস্য মুনতাসির আল জেমি (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, দ্বিতীয় বর্ষ), মো. মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ (ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, তৃতীয় বর্ষ) এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির ও একই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না।

এদিকে আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আজ বেলা ১১ টার দিকে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহাকে রাজধানীর সবুজবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। অমিত সাহার ব্যাপারে হত্যাকান্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগ করে আসছে শিক্ষার্থীরা। এরপর মিজানুর রহমান নামের আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম শাখা থেকে জানানো হয়, মিজানুর রহমান বুয়েটের ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। ডিবি সূত্রে জানা গেছে, আবরার ফাহাদের সঙ্গে শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন মিজানুর রহমান। সেই কক্ষ থেকে আজ দুপুরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।মিজানুর রহমান নামের আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ৬ অক্টোবর আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে চক বাজার থানায় মামলা করেন তাঁর বাবা বরকত উল্লাহ। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি। এর মধ্যে ১২ জনের নাম মামলার এজাহারে রয়েছে।


কোন মন্তব্য নেই