মির্জাপুরে করোনা সংক্রমণে ডাক্তার ও নার্সদেরই সুরক্ষা নেই
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে করোনা আতঙ্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে যেমন বেড়েছে উদ্বেগ, তেমনি ডাক্তার ও নার্সদের মধ্যেও রয়েছে একই ধরনের উদ্বেগ। কারণ রোগীদের চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ডাক্তার ও নার্সরাই রয়েছেন অরক্ষিত। এখনো পর্যন্ত করোনা শনাক্ত করার কোনো কিট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেনি। ফলে করোনা শনাক্তের কোনো উপায় নেই। একই রোগ লক্ষণের সাথে মিলে যাওয়ায় প্রায় সব চিকিৎসকই সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশি নিয়ে রোগী এলেও আতঙ্কের মধ্যে থাকেন তারা।
কারণ হিসেবে বলছেন, এখনও হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য স্টাফদের কোনো পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) সরকারিভাবে সরবরাহ করা হয়নি। যদিও সংক্রমণ ঠেকাতে সবরকম প্রস্তুতি রয়েছে এমন দাবি করে আসছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকায় করোনার লক্ষণজ্বনিত রোগী চিকিৎসা নিতে আসলে চিকিৎসকরা সেবা না দিয়ে রোগীদের কৌশলে এড়িয়ে চলছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ খবরে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি কাজ করছে বলে জানা গেছে।
এদিকে কুমুদিনী হাসপাতালে জ্বর, কাশি, নাক, কান, গলা ব্যাথা ও চোখের সমস্যা জনিত রোগীদের চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ডাক্তার ও নার্সদের সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রদীপ কুমার রায় জানিয়েছেন। তাছাড়া হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
অন্যদিকে উপজেলার ৩৭টি প্রাইভেট ক্লিনিকের অধিকাংশ ক্লিনিকগুলোতে কতর্ব্যরত ডাক্তার, নার্স ও অন্য কর্মীদের সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ না করেই চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলার প্রাইভেট ক্লিনিক মালিক সমিতির সভাপতি মো. আনিসুর রহমান জানান, করোনা রোগী থেকে ডাক্তার, নার্স ও স্টাফদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে একাধিকবার সভা করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রত্যেক ক্লিনিকে আইসোলেশন কক্ষ খোলা হয়েছে। করোনা লক্ষণজনিত রোগীদের সুরক্ষা ড্রেস পরিহিত ডাক্তার ও নার্সরা আইসোলেশন কক্ষে চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। এ ছাড়া সমিতির পক্ষ থেকে মির্জাপুর পৌরসভার প্রায় ৩০টি মসজিদের সামনে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন বলে তিনি জানান।
মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাকসুদা খানম জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের কোনো কিট আসেনি। পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) না থাকায় তারাও সুরক্ষিত নন। সরকারিভাবে মাত্র পাঁচটি সুরক্ষা ড্রেস সরবরাহ করা হয়েছে। ওইসব ড্রেস দুইদিনের বেশি ব্যবহার করা যায় না। হাসপাতালে ৪ বেডের আইসোলেশন কক্ষ প্রস্তুত রয়েছে। সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশি রোগী এলে ডাক্তার ও নার্সরা আতঙ্কের মধ্যে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন বলে তিনি জানান।
কোন মন্তব্য নেই