মাগুরায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর ফাঁসি

মাগুরায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে গায়ে আগুন দিয়ে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পপতিবার দুপুরে মাগুরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক প্রণয় কুমার দাশ এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি অশিত কুমার বিশ্বাস শ্রীপুর উপজেলার খামারপাড়া গ্রামের নিত্যগোপাল বিশ্বাসের পুত্র। সে দীর্ঘদিন পলাতক রয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক মামলার বিষয়ে জানান, বরিশালের আগৈলঝরা উপজেলার প্রফুল্ল গাইনের মেয়ে প্রার্থনা রানী (২৮) স্বনির্ভর বাংলাদেশ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিয়ে ২০০৬ সালের দিকে মাগুরা শ্রীপুরে আসেন। কর্মস্থল শ্রীপুরের খামারপাড়া এলাকায় নিত্যগোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ভাড়া থাকার সময় নিত্যগোপাল বিশ্বাসের ছেলে অশিত বিশ্বাসের সাথে প্রেমের সম্পর্কে গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে তারা বিবাহ করে একসঙ্গে বসবাস করতে থাকে। কিন্তু শ্বশুর বাড়ির লোকদের সাথে বনিবনা না হওয়ায় তারা পার্শ্ববর্তী হরিন্দী গ্রামে আব্দুল মান্নানের বাড়ি ভাড়া করে বসবাস করতে থাকেন। তাদের ঘরে একটি কন্যা ও একটি পুত্রসন্তান জন্ম হয়। পেশায় স্বর্ণকার অশিত বিশ্বাস ও তার পরিবারের সদস্যরা প্রার্থনাকে বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা এনে দেওয়ার জন্য বারবার চাপ দিতে থাকে। পাশাপাশি তারা তাকে অব্যাহতভাবে নির্যাতন ও মারপিট করতে থাকে। বিভিন্ন সময় প্রার্থনা বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর দাবিকৃত মোটা অংকের যৌতুকের কিছু টাকা এনে দেন। আরো টাকার জন্য সর্বশেষ গত ২০০৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাতে অশিত বিশ্বাস ও তার মা নিভা রানী বিশ্বাস তাকে মারপিট করে ও গায়ে আগুন দিয়ে হত্যা করে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে।
পরদিন ২ ফেব্রুযারি ২০০৮ প্রার্থনার মামা বরিশালের আগৈলঝরা গ্রামের গণেশ চন্দ্র কর এর পুত্র গৌতম কর শ্রীপুর থানায় স্বামী অশিত বিশ্বাস ও তার মা নিভা রানীকে আসামি করে হত্যা ও নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদান করেন। পরে সাক্ষ্য-প্রমাণ গ্রহণ শেষে নারী শিশু নির্যাতন দমন আদালত অশিত বিশ্বাসকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির রায় ঘোষণা করেন ও তার মা নিভা রানীকে খালাস দেন।
মামলা চলাকালীন আসামি অশিত কিছুদিন হাজতবাস করে। পরে আদালত থেকে জামিন নিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। যে কারণে আসামির অনুপস্থিতিতেই বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন।
কোন মন্তব্য নেই