বাইরের ধূমকেতুর দেখা মিলল সৌরজগতে
বাইরে থেকে পুরনো যাত্রী (pristine visitor) এক ধূমকেতু এসে পড়েছে সৌরজগতে। মঙ্গলবার পর্যবেক্ষণের পর এই খবর জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এর একাধিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বিজ্ঞানের ভাষায় pristine একটি মহাকাশ গবেষণার টার্ম। এমন কোনও ধূমকেতু যা কোনও নক্ষত্রের খুব কাছ দিয়ে যায়নি এবং তাপ বিকিরণ করে পরিবর্তিত হয়নি সেগুলি বর্ণনা করতেই এই টার্মের সাহায্য নেওয়া হয়।
২০১৯ সালে ইউক্রেনের জ্যোতির্বিজ্ঞানী গেনাডি বরিসভ 2I/Borisov আবিষ্কার করেন। তাঁর নামেই এই ধূমকেতুর নাম রাখা হয়। ক্রিমেয়ার MARGO পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে তিনি এই ধূমকেতু দেখতে পান। আমদের গ্রহমণ্ডলে এটি দ্বিতীয় আন্তঃকেন্দ্রিক বস্তু বা ইনস্টলার অবজেক্ট। প্রথমটি ওউমাউমুয়া নামে একটি গ্রহাণু। এই দুটি বস্তুর গতিবিধিই সূর্যের টান থেকে অনেকটাই আলগা। এর অর্থ তারা অন্য সৌরজগত থেকে মহাকাশের মধ্য দিয়ে আমাদের সৌরজগতে এসে পড়ে। একটি বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নালে আন্তর্জাতিক স্তরের বিজ্ঞানীরা বলেছেন, 2I/Borisov ধূমকেতুর নিউক্লিয়াসের চারপাশে থাকা নিউব্লাস এনভেলপ সাধারণ ধূমকেতুর চেয়ে বড় হয় ও এর পোলারাইজড আলো থাকে। এটিই প্রমাণ করে এই ধূমকেতু কোনো নক্ষত্রের ধার ঘেঁষে যায়নি।
কোনও নক্ষত্র ধূমকেতুর বরফের কণাগুলি ভেঙে বাষ্পীভূত করতে পারে। ধূলিকণা হিসেবে তা মুক্ত করতে পারে। ধূমকেতুর লেজের অপেক্ষাকৃত হালকা কণা তার পৃষ্ঠে পড়ে যায় ও শক্ত আবরণ তৈরি করে। ধূমমেতুর লেজ পর্যবেক্ষণ করেই বিজ্ঞানীরা জানতে পারেন সেটি কতটা অক্ষত। মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞান বিভাগের সহ-লেখক লাউডমিলা কোলোকোলোভা গ্যাসের মেঘ এবং ধূমকেতুটির কেন্দ্রকে ঘিরে থাকা কণার উল্লেখ করে ফলাফল ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর মতে, “যেহেতু আমরা জেটস এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্য ছাড়া খুব সমজাতীয় কোমা পর্যবেক্ষণ করেছি, আমরা অনুমান করছি যে ধূমকেতুটির কোনও শক্ত আবরণ নেই। তবে একটি সত্যিই খুব পুরনো বস্তু। তেজস্ত্রিয়তা ও চার্জড কণা থেকে এটি খুব বেশি মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। তবে এই ধবমকেতুর সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে আর মাত্র একটি ধূমকেতুর। সেটি হল হ্যালি-বপ ১৯৯৫ সালে সেটি আবিষ্কত হয়েছিল।”
কোন মন্তব্য নেই