পুঁজিবাজারে প্রচলিত ৫ ভুল ধারণা থেকে সাবধান - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

পুঁজিবাজারে প্রচলিত ৫ ভুল ধারণা থেকে সাবধান

 

জন এফ কেনেডির নাম অনেকেই শুনেছেন। যে সময়টার কথা বলা হচ্ছে তখনও তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হননি। মার্কিন এই প্রেসিডেন্টের বাবাকে নিয়েই এই মিথের বা ভুল ধারণার আলাপন। তবে এটি কল্পনার জগতের নয় – বাস্তব কাহিনীর জন্ম।



তার বাবা জোসেফ কেনেডি ছিলেন একজন বড় মাপের শেয়ার বিনিয়োগকারী। ওয়ালস্ট্রিট শেয়ার মার্কেট ধসের সময় যেখানে লাখো ব্যক্তি এমনকি বড় বড় ব্যাংকও রাম ধরা খেয়ে পথে বসে গিয়েছিল, সেখানে তিনি মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার মুনাফা করেছিলেন। গল্পটির মূল থিমও এখানে।



জানতে চান কিভাবে? শত বছরের পুরনো সেই গল্পটা এখনও মুখে মুখে ঘুরে ফিরে পুঁজিবাজারে। শেয়াবাজারের নবীন ও নবিশদের অনেককেই এটি বলে থাকেন অভিজ্ঞরা। শুধু দেশে নয়, বিদেশেও নবীনদের উপদেশ দিতে এ গল্প শোনানো হয়।



এত কথা না বলে চলেন গল্পে চলে যাই। নিউইয়র্ক পুঁজিবাজারে ১৯২৯ সালের বুম বুম অবস্থার সময়কালে একদিন ওয়াল স্ট্রিট ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন সিনিয়র কেনেডি। পথিমধ্যেই ঘটে ঘটনাটি। তিনি শুনতে পান রাস্তায় পাশে দাঁড়িয়ে জুতো রং করার অল্প বয়সী ছেলেরা সোজা বাংলায় বললে মুচিরা পুঁজিবাজারের আইটেম নিয়ে কথা বলছে। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে কিছু নবীশও। এ থেকে যা বোঝার তিনি বুঝে নিলেন। তখনও বাজার চাঙ্গা। বুঝলেন বিপদ আসন্ন। দেরি না করে বিনিয়োগ করা শেয়ার সব বিক্রি করে দিলেন কেনেডি।



এর কয়েক দিন পরই শুরু হয় সেই বুক কাঁপানো, এমনকি অনেকের জীবন কেড়ে নেওয়া সেই ধস। আর কেনেডি আগেভাগেই বুঝতে পারায় পকেটে পোড়েন কাড়ি কাড়ি ডলার।



ধসের প্রথম দিনেই মার্কেট থেকে হাওয়া হয়ে যায় সেই সময়ের ৫০০ কোটি ডলার। আর কেনেডির লাভ হয় মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার। তিনি বুঝেছিলেন, সমাজের সব শ্রেণীর ব্যক্তি যখন বুঝে বা না-বুঝে ঝাঁপিয়ে পড়েছে পুঁজিবাজারে তখন আশংকার সেই Bubble” তৈরি হয়। বাজার থেকে বের হতে শেয়ার বেচে দেওয়ার এটাই মোক্ষম সময়। আরও বাড়বে এমন লোভ না করে তিনি শেয়ার বিক্রি করে দেন বলেই পরে তাকে মাথায় হাত দিতে হয়নি।



তিনি “Market Pulse” বুঝতে পেরেছিলেন। যা অনেকেই সেই সময়ে পারেননি, এখনও যেমন অনেকেই লাভের অংশ তুলে না নিয়ে বসে থাকেন আরও শেয়ারদর বাড়ার আশায়। শেষমেশ দেখা যায়, লাভের গুড় পিপড়ায় খেয়ে নিচ্ছে। এ কারণেই কেনেডির “সুসাইনার” বালকদের সঙ্গে গল্পটি “শিক্ষামূলক” মিথের পর্যায়ে চলে গেছে।



জোসেফ কেনেডির যুগ পেরিয়ে এখন একুশ শতকের দেড় দশক শেষ হওয়ার পথে। বাংলাদেশেও এখন লাখো বিনিয়োগকারী শেয়ার নিয়ে কারবার করছেন। আধুনিক প্রযুক্তির এ যুগে মার্কেটের সঙ্গে নানাভাবে সম্পৃক্ততা বাড়ছে মানুষের। জেনে বুঝে যেমন অনেকেই এসেছেন, তেমনি না বোঝার দলটিও বেশ ভারি। তাইতো এখনও ভুলের রাজত্ব চলছে বাজার জুড়ে।



আজকে আমরা দেখব পুঁজিবাজার নিয়ে পাঁচটি মিথ (ভুল ধারণা)



১. জুয়া খেলার আরেক নাম শেয়ারে বিনিয়োগ :


এই একটি কারণে ইচ্ছে বা আগ্রহ থাকলেও অনেকেই পুঁজিবাজার থেকে দূরে থাকেন। কবে, কখন, কার থেকে এমন কিছু শুনেছেন সেটি বলতে না পারলেও পা মাড়াতে চান না পুঁজিবাজারের আশেপাশে। শেয়ার কেনাবেচার জগতকে মনে করেন জুয়ার ছলচাতুরি। অথচ বিষয়টি যে মোটেও সে রকম নয়, তা বুঝতেই চান না।



পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ যে চলে ব্যবস্থাপনার তত্ত্ব দিয়ে, হিসেব বিজ্ঞানের নিয়মে তা তাদের বোঝানো যায় না। এটির সঙ্গে যে গণিতের নিয়ম কানুন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে- তা তারা মানতেই চান না। এ কারণেই এমন ভ্রান্ত ধারণায় বিশ্বাসীদের অনেকে হয়ত নিজের ঘরে বালিশের নিচে টাকা গুঁজে রাখেন তবুও শেয়ার বিনিযোগ থেকে দূরে থাকেন।



শেয়ার বিনিয়োগ যে জুয়া খেলা থেকে ভিন্ন কিছু তা একটু খোলাশা করে বলি কেমন। একদম সোজা কথায় বলা যায়, একটি শেয়ার কেনা হলো একটি কোম্পানির মালিকানা কেনা। অর্থাৎ উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আপনি “ক” নামের একটি কোম্পানির একটি শেয়ার কিনলেন- মানে আপনি ওই কোম্পানির মালিকানার অংশ হয়ে গেলেন। শেয়ারটি সেকেন্ডারি বাজার কিংবা অন্য কোনো মাধ্যমেও কেনা বা সংগ্রহ করা যেতে পারে। ওই শেয়ারের মালিক হওয়ার অর্থ আপনি ওই কোম্পানির সম্পদের অধিকারী হলেন। একই সঙ্গে কোম্পানিটির মুনাফার একটি অংশ পাওয়ার দাবিদার হলেন।



আরেকটি উদাহরণ দেই কেমন। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের অনেকে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কোম্পানির মুনাফার বিষয়টি প্রতিনিয়ত মাপার চেষ্টা করেন। এ কারণে শেয়ারের দাম ওঠানামা করতে থাকে। এ ক্ষেত্রে আসল বিষয়টি হলো কোম্পানির ব্যবসা পরিস্থিতির বিভিন্ন বিষয় (আউটলুক) প্রতিনিয়ত বদলাতে থাকে, এ কারণে সামনের দিনগুলোতে আয়ের বিষয়টিও বদলাতে থাকে।


অভিজ্ঞদের মতে, কোনো কোম্পানির মূল্য পরিমাপ করা খুব সহজ বিষয় নয়। এটির সঙ্গে অনেকগুলো বিষয় জড়িত থাকায় স্বল্প মেয়াদকালে শেয়ারের মূল্য এদিক সেদিক (Random) ওঠানামা করে। শিক্ষাবিদ ও তাত্ত্বিকরা এটিকে “Random Walk Theory” হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।



যাই হোক, দীর্ঘ মেয়াদে একটি কোম্পানি কি পরিমান মুনাফা দিতে পারে তা বর্তমান মূল্য দিয়েও অনেকটা অনুমান করা যায়। স্বল্প সময়ে একটি কোম্পানি মুনাফা করা ছাড়াও টিকে থাকতে পারে। সামনের দিনের আয়ের প্রত্যাশার ওপর ভর করে তা এগিয়ে চলে। তবে একটি কোম্পানি চিরদিনের জন্য বিনিয়োগকারীদের বোকা বানাতে পারে না। প্রকৃতপক্ষে একটি কোম্পানির শেয়ার মূল্য ওই প্রতিষ্ঠানের আসল মূল্য প্রকাশ করবে বলে ধরে নেওয়া হয়।



অন্যদিকে জুয়া হলো শূন্যকেন্দ্রিক এক ধরনের খেলা। অনেকটা হাওয়ার ওপর বাজি ধরে খেলায় নামা। এতে সাধারণত পরাজিতদের অর্থ তুলে দেওয়া হয় জয়ীদের হাতে। এতে কোনো মূল্যমান বা সাদামাটাভাবে বললে সম্পদ যোগ হয় না। বিপরীতে বিনিয়োগের মাধ্যমে সার্বিক অথর্নীতিতে সম্পদ বৃদ্ধি পায়। এতে করে কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা তৈরি হয়। উৎপাদনমুখী এসব প্রতিষ্ঠান উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করে এবং পণ্যের গুণগত মান বাড়ায়। আর সম্মিলিতভাবে এসব প্রচেষ্টার ফলে আমাদের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পায়।



উদাহরণ হিসেবে টেক জায়ান্ট Apple-এর কথা বলা যায়। নিত্য নতুন প্রযুক্তি পণ্য এনে এটি সবাইকে চমকে দিচ্ছে। অবদান রাখছে প্রযুক্তির উৎকর্ষতায়, বদলে দিচ্ছে জীবনমান। একইভাবে নিজেদের শেয়ারহোল্ডারদের নিয়মিত মুনাফা দিচ্ছে কোম্পানিটি। এই কোম্পানির বাজারমূল্য এখন ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। শেয়ারহোল্ডারদের বিনিয়োগের কারণেই এমন অনেক কোম্পানি এগিয়ে যাচ্ছে।



একইভাবে চীনের প্রতিষ্ঠান alibaba.com-এর যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের কথাও বলা যায়। দেশেও এ রকম একাধিক কোম্পানি রয়েছে যেগুলো শেয়ারহোল্ডারদের বিনিয়োগে এখন আরও উন্নতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এ কারণে বলতে চাই বিনিয়োগকে শূণ্য কেন্দ্রিক অংকের খেলা জুয়ার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলবেন না।



২. পুঁজিবাজার ব্রোকার ও ধনীদের বিশেষ ক্লাব:



এক সময় লোকমুখে শুনে বা জনশ্রুতির কারণে অনেকেই এমন ভুল ধারণা করতেন। তাদের কাছে পুঁজিবাজার যেন সকলের জন্য নয়, গুটিকয়েক ব্যক্তির বাজার। শুধু এলিটরাই এ বাজারের যোগ্য। তবে এ বিষয়ে পরিচালিত সব গবেষণা ও জরিপ থেকে বেরিয়ে আসা সত্য হলো- এটি একটি ডাহা ভুল। ভিত্তিহীন ধারণাকে কেন্দ্র করে এটির ডালপালা ছড়িয়েছে। এর বেশি কিছু নয়।



বেশিরভাগ অনুমান নির্ভর পূর্বাভাস বা ভবিষ্যদ্বানী চূড়ান্তভাবে বারবার ভুল প্রমানিত হয়েছে। বর্তমান প্রযুক্তি যুগে বিশেষ করে ইন্টারনেট আর হাল আমলে হাতে হাতে স্মার্টফোনের বদৌলতে পুঁজিবাজার এখন সবার কাছে খোলা বইয়ের মতো। আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে পুঁজিবাজার তাই এখন সকলের জন্য উন্মুক্ত এক দুনিয়া। যে কেউ এখানকার বিষয়ে জানতে, বুঝতে ও বিনিয়োগ করতে পারে।



পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক যে কোনো তথ্য, উপাত্ত ও গবেষণার উপকরণগুলো (Tools) এখন সবার ব্যবহারের জন্য অবারিত। ইন্টারনেট ও ডিজিটাল মাধ্যমে পুঁজিবাজার কার্যক্রম পরিচালনার আগে সদূর অতীতে ব্রোকারেজ হাউজগুলো কিছুটা বাড়তি সুবিধা পেলেও, এখন দিন বদলেছে। শুধু বিদেশে নয়, দেশের পুঁজিবাজারের কোনো বিষয়ে জানতে এখন কয়েকটি ক্লিকই যথেষ্ট, কেননা- ইন্টারনেট আছে না।



৩. সব আইটেম শেষ পর্যন্ত আগের জায়গায় ফিরে যাবে:



ধর্মকেন্দ্রিক এক ঘটনা থেকে এ মিথের প্রচলন। এটির উৎপত্তি নিয়ে রয়েছে কিছুটা বিতর্কও। কেউ যেমন বলেন বাইবেলের কথা, অনেকেই আবার উদ্ধৃতি দেন ইহুদি ধর্মগ্রন্থের। আসল কথা হলো – স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে নেমে আসা স্বর্গীয় দূতের আবার স্বর্গে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি (Fallen Angel Will Go Back Up, Eventually) নিয়ে এ মিথ।



এটিকে পুঁজিবাজারের আইটেম মুভমেন্টের সঙ্গে অনেকে এক করে ফেলেছেন। মিথ বলেই হয়তো প্রচারও পেয়েছে বেশ। এমন ধারণায় বিশ্বাসীদের বক্তব্য হলো- প্রতিটি আইটেম যে সর্বোচ্চ জায়গা থেকে পড়া শুরু হয়েছিল, ঘুরে ফিরে শেষ পর্যন্ত আবার সেই সুউচ্চ অবস্থানে ফিরে যাবে।



আসলে সুযোগ সন্ধানীরাই সুযোগ নেওয়ার আশায় এমন কথা ছড়িয়েছে যুগের পর যুগ। ফলে এটি একটি মিথে পরিণত হয়েছে। এটি বলে মানুষের মধ্যে ভিন্ন ধর্মী আবেদন তৈরির কারণ যাই হোক না কেন, এটি বিশেষ করে নতুন ও নবিশ বিনিয়োগকারীদের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ একটি ভাবনা।



আমাদের মতে, এমন সংশয়ের মধ্যে কিছুতেই পড়বেন না। শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে মাথায় এমন ভাবনা তৈরি করে তালগোল পাকিয়ে ফেলবেন না। ভালো বিনিয়োগের জন্য এমন চিন্তাধারা খুবই ক্ষতিকর ও বিপদজনক বটে।



ভালো শেয়ার কেনার মানে হলো –উচ্চ মানের প্রতিষ্ঠিত ও নামকরা কোম্পানির শেয়ার কেনা, যেটি পুঁজিবাজারে এখন কম মূল্যে পাওয়া যাচ্ছে অথ্যাৎ আন্ডার ভ্যালু হয়ে রয়েছে।



৪. আকাশে ছোঁয়া আইটেম অবশ্যই আবার নিচে নামবে:



নিউটনের আপেলের সূত্র এখানে মানে পুঁজিবাজারে কাজে লাগবে না। পদার্থ বিজ্ঞানের তত্ত্ব এখানে খাটাতে গেলে বিপদে পড়তে হতে পারে। এ বিপদটা অবশ্যই আর্থিক- যা আপনার পুঁজি গিলে ফেলতে পারে। তাই এমন ভুঁইফোঁড় কিন্তু চালু কথায় আস্থা রাখা চলবে না। পুঁজিবাজারে এমন তত্ত্বের কোনো জায়গা নেই। এখানে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কোনো নিয়ম নেই যে, প্রতিটি শেয়ারকে তা আবার নিচে টেনে আনবে।



উদহারণ হিসেবে বলা যায়, যদি তাই হতো তাহলে হালের আমলের টেক জায়ান্ট Apple ও Google-এর শেয়ার মূল্য আবার ১০০ ডলারের ঘরে চলে আসতো। অথচ এ দুটি কোম্পানির শেয়ারের এখন হাজার ডলার অতিক্রম করা সময়ের ব্যাপার মাত্র। তেমনিভাবে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগ গুরু হিসেবে পরিচিত ওয়ারেন বাফেটের বার্কশায়ার হ্যাথওয়েজের শেয়ারদর ৭,৪৫৫ ডলার থেকে মাত্র পাঁচ বছরে ১৭,২৫০ ডলারে ওঠে।



আপনি কি মনে করেন এসব কোম্পানির শেয়ার আবার লেনদেন শুরুর দিকে যে সর্বনিম্ন দামে নেমে আসবে?



আমাদের মনে হয়-আপনার উত্তর নেতিবাচকই হবে? তাই যদি হয়- তাহলে এ ধরনের মিথে কান দেওয়া আর চিলে কান নিয়ে গেছে বলে তা নিয়ে মেতে থাকা একই কথা।



আমরা বলছি না যে, শেয়ার দর সংশোধন হবে না- বিষয়টি সেরকম নয়। শেয়ার দর উঠা-নামা করবেই। এটিই পুঁজিবাজারের চরিত্র। তবে পয়েন্টটি হলো শেয়ারদরের মাধ্যমে একটি কোম্পানির পারফরম্যান্স, সফলতা-ব্যর্থতার চিত্র ফুটে ওঠে।


আপনি এমন একটি চমৎকার কোম্পানির শেয়ার খুঁজে পেলেন, যা সর্বোকৃষ্ট ব্যবস্থাপকদের দ্বারা পরিচালিত হয়। প্রতি বছর সেটি ভালো মুনাফা করে। তবে সেই কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে আসার কোনো কারণ নেই।



৫. পুঁজিবাজার অভিজ্ঞ-অনভিজ্ঞদের জায়গা:



পুঁজিবাজার একটি বিশেষায়িত জায়গা। এখানে অনেক কিছু জেনে বুঝেই বিনিয়োগ করতে হয়। তাই সার্বিক বিষয়ে জানাশোনা না থাকলে- তা নিজের বিপদ ডেকে আনার জন্য যথেষ্ট।



সাধারণভাবে কিছু জানাশোনা থাকা, একদম কিছু না জানার চেয়ে অবশ্যই ভালো। তবে পুঁজিবাজারে ক্ষণিকের ভুলে অনেক বড় আর্থিক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই এখানে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে খুবই পরিষ্কার ধারণা থাকা প্রয়োজন।



আপনার অর্থ আপনি বালিশের নিচে রাখবেন, নাকি না বুঝেই একটি পচা কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করে বালিশের তলায় মুখ লুকাবেন-সেটি আপনার সিদ্ধান্ত।



তবে আমাদের পরামর্শ হলো- জানুন, বুঝুন, পরিষ্কার ধারণা নিন, এরপর বিনিয়োগ করুন।



বিরক্ত হবেন না। দীর্ঘ আলোচনার শেষে আরও একটি কথা বলতে চাই, অবশ্যই বিশ্লেষক ও অভিজ্ঞজনদের পরামর্শ মেনে, সেটি হলো পুরোপুরি বোঝার জন্য আপনার হাতে সময় না থাকলে, আপনার অর্থ বিনিয়োগে একজন পরামর্শক নিয়োগ করা মন্দ কিছু নয়।



আপনি না বুঝে বিনিয়োগ করে যতটুকু লোকসানে পড়বেন, সেই অর্থ দিয়ে পরামর্শক রাখুন- দেখবেন ক্ষতির চেয়ে লাভই হবে বেশি।



আর শেষ কথা হলো- টাকা কামানোর শর্টকাট পথ খুবই কম। তা না হলে সবাই ওয়ারেন বাফেট, বিল গেটস কিংবা কার্লোস স্লিম হয়ে যেতেন। তাই সফল বিনিয়োগের জন্য দরকার যেমন কঠোর পরিশ্রম, তেমনই দরকার ভালো জানা-শোনা।



চোখটা একটু বন্ধ করে ভাবুনতো একজন আধা শিক্ষিত সার্জনের ছুরির নিচে আপনার শরীর পেতে দিতে আপনার কেমন লাগবে? গা শিউরে উঠছে? পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও বিষয়টি তেমনই

কোন মন্তব্য নেই