সাইবার হামলার অভিযোগে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ যুক্তরাষ্ট্রের
গত বছরের বিশাল সোলারউইন্ডস হ্যাক ও ২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচনে মস্কোর হস্তক্ষেপের অভিযোগ এনেছে হোয়াইট হাউজ। এ অভিযোগ অস্বীকার করে এবং ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞার সমুচিত জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে মস্কো।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত বৃহস্পতিবার এক নির্বাহী আদেশে রাশিয়ার বিরুদ্ধে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। গত কয়েক বছর ধরেই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে অবিশ্বাস ও অস্থিরতার মধ্যে নতুন এ নিষেধাজ্ঞার খবর এলো।
ক্রেমলিন সমালোচক আলেক্সেই নাভালনির ওপর বিষ প্রয়োগের অভিযোগে গত মাসে সাত রুশ কর্মকর্তা ও ডজনখানেক সরকারি প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করে যুক্তরাষ্ট্র। ওই বিষকাণ্ডে কোনো ধরনের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে রাশিয়া।
গত মঙ্গলবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন বাইডেন। ফোনালাপে জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষার অঙ্গীকার ব্যক্ত
করার পাশাপাশি পুতিনের সঙ্গে একটি বৈঠকেরও প্রস্তাব দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেখানে উভয় পক্ষ নিজ নিজ স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনার আশা ব্যক্ত করেন।
এদিকে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর বৃহস্পতিবার বাইডেন জানান, এটা রাশিয়ার আচরণের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছি, আমরা আরো কঠিন পদক্ষেপ নিতে পারতাম কিন্তু আমি এটা থেকে বিরত থেকেছি। রাশিয়ার সঙ্গে ক্রমাগত উত্তেজনা ও সংঘাত বৃদ্ধিতে উৎসাহী নয় যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি আরো জানান, মস্কোর সঙ্গে কার্যকর সংলাপ ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জারি রাখতে আগ্রহী ওয়াশিংটন।
নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউজ জানায়, রাশিয়া যদি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অস্থিতিশীল অপতত্পরতা চালায়, তাহলে তাদেরকে কৌশলগত আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির ভার বহন করতে হবে।
গত বছরের সাইবার হামলার পেছনে যে রুশ সরকারের হাত ছিল, এ বিষয়ে জোর দিয়ে বিবৃতিতে আরো বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোতে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যাহত করতে কাজ করে যাচ্ছে মস্কো। সোলারউইন্ডস সাইবার হামলার জন্য সুনির্দিষ্টভাবে রাশিয়ার বৈদেশিক গোয়েন্দা সেবা এসভিআরের প্রতি অভিযোগের তীর হোয়াইট হাউজের। ওই সাইবার হামলায় সরকারি ও বেসরকারি ১৮ হাজার কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সাইবার অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছিল। গত ডিসেম্বরে এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের তত্কালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, ওই সাইবার হামলার পেছনে রাশিয়ার হাত রয়েছে।
২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে প্রভাবিত করা এবং ভুয়া খবর ছড়ানোর অভিযোগে রাশিয়ার ৩২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর সর্বশেষ এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে। নির্বাহী আদেশে আরো বলা হচ্ছে, আগামী জুন থেকে রুবল-ডেনমিনেটেড বন্ড ক্রয় করতে পারবে না মার্কিন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।
ট্রাম্প প্রশাসনের খামখেয়ালিপূর্ণ সিদ্ধান্তের বিপরীতে কিছুটা ধীরেসুস্থে এগোতে চাচ্ছে বাইডেন প্রশাসন। মস্কোর অগ্রহণযোগ্য আচরণের জবাবে শুরুতে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে তারা। এর মাধ্যমে এ ইঙ্গিতও দিচ্ছে, ভবিষ্যতে প্রয়োজনে এর চেয়েও কঠিন পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত ওয়াশিংটন।
শুরুতে সোলারউইন্ডস সাইবার হামলার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেয়ার কথা থাকলেও এর সঙ্গে মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ চেষ্টার বিষয়টি যোগ করা হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই