সাপ্তাহিক লেনদেনে কমেছে বাজার মূলধন ও পিই রেশিও

 

গত সপ্তাহজুড়ে বাজার উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস থেকে টানা তিন দিন সূচকের পতন হয়। সপ্তাহের শেষ দুই দিন সূচকের কিছুটা উত্থান হয়। ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিদায়ী সপ্তাহে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ডিএসই সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ১ দশমিক ০৩ শতাংশ কমেছে। গত সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ১৪ দশমিক ৬২ পয়েন্টে। আর সপ্তাহ শেষে ডিএসইর পিই রেশিও অবস্থান করছে ১৪ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে পিই রেশিও শূন্য দশমিক ১৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ০৩ শতাংশ কমেছে।

আগের সপ্তাহে পুঁজিবাজারে আড়াই হাজার কোটি টাকা ফিরলেও বিদায়ী সপ্তাহে পুঁজিবাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা কমেছে। অর্থাৎ সপ্তাহটিতে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার বাজার মূলধন হারিয়েছে পুঁজিবাজার থেকে। সপ্তাহটির বেশিরভাগ দিনই পতনের মধ্যে কেটেছে। এর কারণে সপ্তাহটিতে শেয়ারবাজারের সব সূচকই কমেছে। সূচকের সঙ্গে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর এবং লেনদেন হওয়া টাকার পরিমাণও কমেছে।

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৫ লাখ ২২ হাজার ৮৮১ কোটি ৮২ লাখ ৫৫ হাজার ৯৮৬ টাকায়। আর শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৫ লাখ ১৯ হাজার ৩১১ কোটি ৬৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯০১ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন তিন হাজার ৫৭০ কোটি ১৬ লাখ ২২ হাজার ৮৫ টাকা কমেছে।

বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) চার হাজার ৩০০ কোটি ০৪ লাখ ৫৯ হাজার ৫৬৩ টাকার লেনদেন হয়েছে। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল চার হাজার ৩৪১ কোটি ৯১ লাখ ৩৬ হাজার ৮৮০ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন ৪১ কোটি ৬৬ লাখ ৭৭ হাজার ৩২৫ টাকা বা শূন্য দশমিক ৯৬ শতাংশ কমেছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৪ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট বা ০ দশমিক ৮৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৪২৫ দশমিক ৭৪ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১০ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট বা ০ দশমিক ৭৪ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২৪ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ০৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৪০৩ দশমিক ২৬ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ৩২৭ দশমিক ৯৫ পয়েন্টে।

প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি ছিলÑশাইনপুকুর সিরামিকস, বেক্সিমকো লিমিটেড, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, জেএমআই হসপিটাল, আরএকে সিরামিক, মুন্নু ফেব্রিক্স, বিডিকম, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, সালভো কেমিক্যাল এবং বিডি ফাইন্যান্স।

ডিএসইতে দর পতনের শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রেনউইক ৯ দশমিক ০৪ শতাংশ, রূপালী ইন্স্যুরেন্সের ৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ, গ্রিন ডেলটা ইন্স্যুরেন্সের ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ, ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সের ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের ৮ দশমিক ৭১ শতাংশ, ফনিক্স ইন্স্যুরেন্সের ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের ৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ, পেপার প্রসেসিংয়ের ৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ, দেশ গার্মেন্টসের ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ দর কমেছে।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৮৯টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১১৭টির বা ৩০ দশমিক ০৮ শতাংশের, কমেছে ২৫১টির বা ৬৪ দশমিক ৫২ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টির বা ৫ দশমিক ৪০ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ২৪৮ কোটি ৯৬ লাখ ১৮ হাজার ০৪৮ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১২৯ কোটি ৬১ লাখ ১৩ হাজার ১৪২ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ১১৯ কোটি ৩৫ লাখ ০৪ হাজার ৯০৬ টাকা বেড়েছে।

সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩৪৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১২৫টির বা ৩৬.০২ শতাংশের দর বেড়েছে, ১৯৯টির বা ৫৭.৩৫ শতাংশের কমেছে এবং ২৩টির বা ৬.৬৩ শতাংশের দর অপরিবর্তিত রয়েছে।