যশোরে লোডশেডিংয়ে বেড়েছে জ্বালানি তেলের ব্যবহার - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

যশোরে লোডশেডিংয়ে বেড়েছে জ্বালানি তেলের ব্যবহার


সরকারের ব্যয়সাশ্রয়ী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত ১৯ জুলাই সারা দেশের মতো যশোরেও শুরু হয়েছে সূচি ধরে ১ ঘণ্টা করে লোডশেডিং। তবে সরকারের তরফ থেকে ১ ঘণ্টা করে লোডশেডিংয়ের কথা বলা হলেও যশোরের বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। দফায় দফায় লোডশেডিং হচ্ছে। একাধিকবার লোডশেডিংয়ের কারণে কয়েক ঘণ্টা করে বিদ্যুিবহীন থাকতে হচ্ছে। এ কারণে বেড়েছে জ্বালানি তেলের ব্যবহার। বিসিকসহ শহরের সচ্ছল ব্যবসায়ীরা নিজস্ব ব্যবস্থায় জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন। এতে বেড়েছে পেট্রল ও ডিজেলের ব্যবহার। অনেকে কিনছেন আইপিএস।


এদিকে ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় শিডিউল লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে যশোর ওজোপাডিকোর। ঘাটতি ছিল ২৫ মেগাওয়াট, লোড ব্যবস্থাপনার জন্য কোনো কোনো এলাকায় একাধিকবার, কিছু এলাকায় ১ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ বন্ধ করতে হচ্ছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে কলকারখানার উৎপাদন ব্যবস্থা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা গরমে ক্লাসে মনোযোগ দিতে পারছে না। করোনার টিকা সংরক্ষণেও বিপত্তি দেখা দিচ্ছে।


করোনা-পরবর্তী চাহিদা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে এলএনজি, জ্বালানি তেলসহ সবকিছুর দাম আকাশচুম্বী। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। জ্বালানি তেল আমদানিতে সরকারের ভর্তুকি বেড়েছে। জ্বালানি তেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন আপাতত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে সরকার বিদ্যুতে রেশনিংয়ের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে সরকার যে পদ্ধতিতে লোডশেডিং করছে, তা কাজে আসবে না বলে মত দিয়েছে পেট্রল পাম্প মালিক সমিতি।


যশোর পেট্রল পাম্প মালিক সমিতির সহসভাপতি ও যাত্রিক পেট্রল পাম্পের মালিক আতিকুর রহমান টিকু বলেন, আমাদের পাম্পে প্রতিদিন ডিজেলের চাহিদা রয়েছে সাড়ে ৩ হাজার লিটার। আর পেট্রল-অকটেনের আড়াই হাজার লিটার। বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে বর্তমানে ডিজেল ও পেট্রলের বিক্রি বেড়েছে, যা খোঁজ পাচ্ছি সেটি হলো সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অফিসে এসব জ্বালানি ব্যবহারের জন্য নিয়ে যাচ্ছে।


যশোর পেট্রল পাম্প মালিক সমিতির নির্বাহী সদস্য হাসানুল কবির হাসান বলেন, সব পাম্পে জ্বালানি বিক্রি বেড়েছে। এভাবে লোডশেডিং হলে বিক্রি আরো বেড়ে যাবে।


শহরের এইচএমএম রোডের লেদার ফেয়ারের মালিক আমিনুল মজিদ তুষার জানান, লোডশেডিং হলে এ অঞ্চলের বেশির ভাগ ব্যবসায়ী জেনারেটর ব্যবহার করছেন। অনেকের নিজস্ব, আবার অনেকে ভাড়ায় জেনারেটর লাইন ব্যবহার করেছে। এতে আমাদের ব্যয় বাড়ছে। কেননা, ১ ঘণ্টায় দুই লিটার জ্বালানি পুড়ছে।


এইচএম ক্লথ স্টোরের মালিক রাফিউল আলম বাবু বলেন, এখানে বিভিন্ন খাতের হাজারো ব্যবসায়ী রয়েছেন। এর মধ্যে ছিট কাপড়ের ৪০টি দোকান আছে। যাদের সবাই লোডশেডিংয়ের সময় জেনারেটর ব্যবহার করছেন।


একই অবস্থা যশোর বিসিকে। রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান এমইউ সিইএ ফুডসের স্বত্বাধিকারী শ্যামল দাস বলেন, দেশের রফতানি খাতকে লোডশেডিংয়ের আওতামুক্ত রাখা উচিত। কেননা, লোডশেডিং হলে আমাদের জ্বালানি খরচ অনেক বেড়ে যায়। যেখানে আগে জেনারেটরে একদিনে ২০ লিটার ডিজেল প্রয়োজন হতো, লোডশেডিং শুরু হওয়ার কারণে এখন দিনে লাগছে ৬০ লিটার।


শহরের অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা শহরের আরএন রোড। এখানকার মোটরসাইকেল পার্টসের ব্যবসায়ী রিপন অটোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এজাজ উদ্দিন টিপু জানান, এখানকার বেশির ভাগ ব্যবসায়ীর নিজস্ব জেনারেটর বা আইপিএস রয়েছে। লোডশেডিং শুরু হলে সবাই নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চলার চেষ্টা করছেন। এতে জ্বালানি খরচ বাড়ছে সবার।


এ ব্যাপারে যশোর ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা নিয়মানুযায়ী লোডশেডিং করছি।

কোন মন্তব্য নেই