নিজস্ব ডিসপ্লে নিয়ে আসছে অ্যাপল
২০২৪ সাল নাগাদ মোবাইল ডিভাইসে নিজস্ব ডিসপ্লে ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে অ্যাপল। স্যামসাং ও এলজির মতো প্রযুক্তি অংশীদারদের ওপর নির্ভরতা কমানোর পাশাপাশি নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহারের চেষ্টা হিসেবে এ উদ্যোগ নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া আগামী বছরের শেষ নাগাদ অ্যাপল ঘড়ির ডিসপ্লে পরিবর্তনের পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের। খবর ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে।
আইফোনসহ অন্যান্য ডিভাইসেও উন্নত সংস্করণের ওএলইডি ও মাইক্রোএলইডি প্রযুক্তি সংযোজনের পরিকল্পনাও রয়েছে এটির। তবে এ ধরনের পরিবর্তনগুলো মূলত অ্যাপলের বাইরের কোম্পানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে স্বদেশী যন্ত্রাংশ প্রতিস্থাপনের ব্যাপক প্রচেষ্টার অংশ, যা কোম্পানিকে এর পণ্যগুলোর নকশা ও সক্ষমতার ওপর আরো নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার সুযোগ তৈরি করে দেবে।
এরই মধ্যে এ প্রযুক্তি জায়ান্ট ইন-হাউজ ম্যাক কম্পিউটারে ব্যবহারকৃত ইন্টেল কর্প চিপগুলোকে অপসারণ করেছে। আইফোনের ক্ষেত্রেও একই কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে। যদিও অ্যাপলের ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক প্রতিনিধি এ বিষয়ের ওপর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত ডিসপ্লে নির্মাতা বলা হয় স্যামসাংকে, যারা মূলত টেলিভিশনের জন্য মাইক্রোএলইডির নিজস্ব সংস্করণও তৈরি করেছে। তবে ইন-হাউজ স্ক্রিন ব্যবহার করার মাধ্যমে অ্যাপল দীর্ঘমেয়াদে নিজস্ব ডিভাইসগুলোকে আরো ভালোভাবে কাস্টমাইজ করতে পারবে। পাশাপাশি সরবরাহ শৃঙ্খলে শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে সক্ষম হবে।
গতকাল ব্লুমবার্গে খবরটি প্রকাশের পর এলজির ডিসপ্লে শেয়ার কমেছে ৪ দশমিক ১ শতাংশ। এদিকে সিউলে সকালের লেনদেনের সময় স্যামসাং ইলেকট্রনিকসের বেশির ভাগ শেয়ারের লাভের পরিমাণ কমেছে।
অ্যাপলের প্রজেক্টের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ওয়েই চেন। অ্যাপল ওয়াচ আল্ট্রা ও হাই-এন্ড স্পোর্টস ওয়াচের আপডেটে মাইক্রোএলইডি ডিসপ্লে পরীক্ষার কাজও শুরু করা হয়েছে বলে জানা যায়। বর্তমান অ্যাপল ঘড়ির সঙ্গে যদি তুলনা করা হয়, তাহলে পরবর্তী প্রজন্মের ডিসপ্লেগুলো আরো উজ্জ্বল, প্রাণবন্ত রঙসহ আরো ভালোভাবে দেখার সক্ষমতা দেয়ার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এরই মধ্যে যারা এটি দেখেছে তাদের মতে, ডিসপ্লেগুলো কনটেন্টকে এমনভাবে দেখায়, মনে হয় এটি কাচের ওপরে আঁকা।
মাইক্রোএলইডি ডিসপ্লেগুলো হবে অ্যাপলের প্রথম স্ক্রিন, যা সম্পূর্ণভাবে নিজস্ব নকশা ও নিজস্ব প্রযুক্তি সংস্করণযুক্ত। বর্তমানে স্যামসাং ও এলজি ছাড়াও অ্যাপলের ডিসপ্লে স্ক্রিন সরবরাহকারীদের মধ্যে রয়েছে জাপান ডিসপ্লে ইনক, শার্প কর্প, বিওই টেকনোলজি গ্রুপসহ বিভিন্ন নির্মাতা।
তবে এ সম্পর্কেও স্যামসাং ও এলজির পক্ষ থেকে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানানো হয়। তবে ব্লুমবার্গ কর্তৃক সংকলিত তথ্য অনুসারে ডিসপ্লে স্ক্রিন সরবরাহ বাবদ অ্যাপলের কাছ থেকে আয়ের ৩৬ শতাংশ তুলে নেয় এ প্রতিষ্ঠান দুটি। এদিকে চলমান প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত কয়েক ব্যক্তি বলেছেন, অ্যাপলের ২০২৪ সালের লক্ষ্যমাত্রা সম্ভবত ২০২৫ সালে গড়াতে পারে।
এ প্রকল্পের জন্য এখন পর্যন্ত বিলিয়ন ডলার অর্থ ব্যয় করেছে অ্যাপল। অভ্যন্তরীণভাবে কোম্পানিটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর মধ্যে একটি হিসেবেও এটিকে বিবেচনা করা হচ্ছে। ২০২২ অর্থবছরে গবেষণা ও উন্নয়ন বাবদ প্রায় ২ হাজার ৬০০ কোটি ডলার ব্যয় করে তারা। কাছাকাছি সময়ে নতুন এ ডিসপ্লে স্ক্রিন হচ্ছে অ্যাপল ওয়াচের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের একটি। সংস্থাটি এ বছরের শেষের দিকে নতুন মডেল প্রবর্তন করার পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। যদিও তিন বছর ধরে ঘড়ির ভেতরে প্রধান প্রসেসর আপডেট করেনি অ্যাপল।

কোন মন্তব্য নেই