ঝুঁকিপূর্ণ জাঙ্ক শেয়ারে অস্বাভাবিক উত্থান, কারসাজির আশঙ্কা

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) টানা ষষ্ঠ দিনে ডিএসই সূচক পতিত হয়েছে। তবে শীর্ষ ১০টি দর বৃদ্ধির তালিকায় চারটি জেড ক্যাটাগরির জাঙ্ক শেয়ার। জেড ক্যাটাগরিতে একটি কোম্পানি অন্তর্ভুক্ত হয় যখন সেটি টানা ছয় মাস বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ রাখে, দুই বছর ধরে ডিভিডেন্ড দেয় না, অথবা সময়মতো বার্ষিক সাধারণ সভা সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, জাঙ্ক শেয়ারের এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ইঙ্গিত দেয় যে, নতুন কমিশনের কঠোর নিয়ম সত্ত্বেও কারসাজিকারীরা এখনও সক্রিয়। তারা বলেন, "কারসাজি ছাড়া এই ধরনের শেয়ারের দাম বৃদ্ধি সম্ভব নয়।"
উদাহরণস্বরূপ, ইয়েকিন পলিমার-এর শেয়ারের দাম মাত্র তিন দিনে ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। কোম্পানিটি গত চার বছর ধরে লোকসানে আছে এবং ২০২০ সাল থেকে কোনো ডিভিডেন্ড দেয়নি। তারপরও মাত্র দুই মাসে এর শেয়ারের দাম ৫১ শতাংশ বেড়েছে। একই চিত্র দেখা যায় মিথুন নিটিং, জুট স্পিনার্স, রিজেন্ট টেক্সটাইল এবং সাফকো স্পিনিং-এ, যেখানে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেন, এই ধরনের জাঙ্ক শেয়ারে তেজিভাবে বিনিয়োগ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এর মূল্য বৃদ্ধির ভিত্তি শক্তিশালী আর্থিক ফলাফল বা উৎপাদনক্ষমতা নয়, বরং কারসাজি বা কৃত্রিম লেনদেনের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে। তাই বিনিয়োগকারীদের উচিত, বাজারে আকস্মিক উত্থান দেখলে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত না নেওয়া এবং ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ারে অতিরিক্ত বিনিয়োগ থেকে বিরত থাকা।
তারা আরও বলেন, দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক স্থিতিশীলতা ছাড়া জাঙ্ক শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধির সুযোগ সীমিত। বাজারে অস্বাভাবিক দর পরিবর্তন কেবল স্বল্পমেয়াদে লাভজনক মনে হতে পারে, তবে হঠাৎ পতনের ঝুঁকি সবসময় থাকে। বিনিয়োগকারীদের উচিত, শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানের শক্তিশালী আর্থিক প্রতিবেদন, ধারাবাহিক ডিভিডেন্ড ইতিহাস এবং কার্যকর উৎপাদন ক্ষমতার ওপর নজর দেওয়া।
কোন মন্তব্য নেই