টুইন টাওয়ারে হামলার ২৪ বছর: এক বছর ধরে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন হামলাকারীরা
টুইন টাওয়ারে হামলার ২৪ বছর: এক বছর ধরে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন হামলাকারীরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | টাইমস এক্সপ্রেস ২৪
প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সকাল ৮:০০
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। ভয়াবহ সেই দিনটি বদলে দিয়েছিল পুরো বিশ্বকে। আল-কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ১৯ জন হামলাকারী চারটি উড়োজাহাজ ছিনতাই করে আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি স্থানে। এর মধ্যে দুটি বিমান নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার বা টুইন টাওয়ারে আঘাত হানে, একটি ভার্জিনিয়ার পেন্টাগনে এবং আরেকটি বিধ্বস্ত হয় পেনসিলভানিয়ায়। ওই হামলায় প্রায় ৩ হাজার মানুষ প্রাণ হারান।
কীভাবে ঘটেছিল হামলা
সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে আমেরিকান এয়ারলাইনস ফ্লাইট ১১ আঘাত হানে নর্থ টাওয়ারে। ৯টা ৩ মিনিটে ইউনাইটেড এয়ারলাইনস ফ্লাইট ১৭৫ সাউথ টাওয়ারে আঘাত করলে গোটা বিশ্ব বুঝতে পারে—এটি একটি সুপরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা।
৯টা ৩৭ মিনিটে আরেকটি বিমান আঘাত হানে পেন্টাগনে। আর ফ্লাইট ৯৩ বিধ্বস্ত হয় পেনসিলভানিয়ার একটি মাঠে। হামলার পৌনে দুই ঘণ্টার মাথায় ধসে পড়ে টুইন টাওয়ার।
পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ
তদন্তে জানা যায়, হামলাকারীরা এক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থেকে ফ্লাইট প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। তারা মার্কিন সমাজে মিশে গিয়ে ব্যবসায়িক কাজে যুক্ত ছিলেন, যাতে কোনো সন্দেহ তৈরি না হয়। এ হামলার উদ্দেশ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য নীতি ও ইসরায়েলের প্রতি সমর্থনের প্রতিশোধ নেওয়া।
প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি
৯/১১ হামলায় ২ হাজার ৯৯৬ জন নিহত হন, যার মধ্যে ৩৪৩ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও ৬০ জন পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন। আহত হন ৬ হাজারের বেশি মানুষ।
বিষাক্ত ধুলা ও ধ্বংসাবশেষে অসংখ্য মানুষ ক্যানসার ও শ্বাসতন্ত্রের সমস্যায় আক্রান্ত হন। শুধু নিউইয়র্ক সিটির অবকাঠামোগত ক্ষতিই ছাড়িয়ে যায় ৬০ বিলিয়ন ডলার।
বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া
ঘটনার পর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ঘোষণা দেন তথাকথিত ‘ওয়ার অন টেরর’। আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের পতন ঘটানো হয়। পরবর্তী সময়ে ইরাক যুদ্ধও শুরু হয়।
একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র বিমানবন্দর ও সীমান্ত নিরাপত্তা কঠোর করে, চালু করে প্যাট্রিয়ট অ্যাক্ট। বিশ্বজুড়ে ৭০টির বেশি দেশ সন্ত্রাসবিরোধী আইন শক্তিশালী করে।
দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব
গ্রাউন্ড জিরো এখন শোক ও স্মৃতির প্রতীক। প্রতিবছর নিহতদের স্মরণে এখানে আয়োজিত হয় অনুষ্ঠান।
২০১১ সালে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে মার্কিন বাহিনী আল–কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করে। তবে সন্ত্রাসবাদের হুমকি বিশ্ব থেকে শেষ হয়নি।
২৪ বছর পরও ৯/১১ হামলার শিক্ষা একটাই—সন্ত্রাস মোকাবিলায় শুধু সামরিক শক্তি নয়; রাজনৈতিক সমাধান, বৈশ্বিক সহযোগিতা ও সামাজিক ন্যায়বিচারই হতে পারে টেকসই পথ।
কোন মন্তব্য নেই