ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ইরানি ড্রোন প্রদর্শন, পোলিশ দূতকে তলব করে তেহরানের কড়া প্রতিবাদ
ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ইরানি ড্রোন প্রদর্শন, পোলিশ দূতকে তলব করে তেহরানের কড়া প্রতিবাদ
সংবাদ:
তেহরান: ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আয়োজিত এক প্রদর্শনীতে ইরানি ড্রোন প্রদর্শনের ঘটনায় পোলিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অংশগ্রহণে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইরান। এই ঘটনার পর বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) তেহরানে নিযুক্ত পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মার্কিনভিত্তিক অ্যাডভোকেসি গ্রুপ ‘ইউনাইটেড অ্যাগেইনস্ট নিউক্লিয়ার ইরান’ (UANI) আয়োজিত ওই প্রদর্শনীতে ইউক্রেনে উদ্ধার হওয়া একটি ‘শাহেদ-১৩৬’ ড্রোন প্রদর্শন করা হয়। এই ড্রোনটি রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
গ্রুপটির দাবি, প্রদর্শনীর মূল উদ্দেশ্য ছিল ইউক্রেন যুদ্ধের ক্ষেত্রে তেহরানের সম্পৃক্ততা তুলে ধরা। লন্ডন সফরের সময় পোলিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাদোস্লাভ সিকোরস্কি সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সিকোরস্কি বলেন,
“পোল্যান্ডের আকাশসীমায় রাশিয়ান ড্রোন অনুপ্রবেশ ছিল কৌশলগতভাবে নির্বোধ ও অকার্যকর পদক্ষেপ, যা পশ্চিমাদের ঐক্য আরও দৃঢ় করেছে।”
তিনি আরও দাবি করেন, এসব ড্রোন রাশিয়া থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে এবং বেলারুশের সঙ্গে সমন্বয় করে পাঠানো হয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভূমধ্যসাগরীয় ও পূর্ব ইউরোপীয় বিভাগের মহাপরিচালক মাহমুদ হেইদারি পোলিশ রাষ্ট্রদূত মার্সিন উইলচেককে তলব করে তেহরানের পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদ জানান।
হেইদারি বলেন,
“ইরানের ড্রোন কর্মসূচি নিয়ে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”
ইরান সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়,
“ড্রোন প্রদর্শনের এই উদ্যোগ কূটনৈতিক রীতিনীতি লঙ্ঘন করেছে এবং ইউক্রেন সংঘাতে ইরানের ভূমিকা নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারের পুনরাবৃত্তি।”
ইরান দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে যে, তারা রাশিয়াকে সীমিত সংখ্যক ড্রোন বিক্রি করেছিল যুদ্ধ শুরুর আগেই, কিন্তু যুদ্ধের জন্য কোনো ড্রোন সরবরাহ করেনি।
অন্যদিকে, পশ্চিমা দেশগুলো ও ইউক্রেন বলছে, ইরানি নকশার ‘শাহেদ’ সিরিজের ড্রোন এখন রাশিয়ার ‘গেরান’ নাম নিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
জুলাইয়ে প্রকাশিত ফিন্যান্সিয়াল টাইমস–এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই পরিবর্তিত ড্রোনগুলোর টার্গেটে আঘাত হানার সাফল্যের হার তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
পোল্যান্ড সরকার এখনো তেহরানের এই তলবের বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। তবে জানা গেছে, দেশটি আগেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থিতিতে আয়োজিত এক রাজনৈতিক সম্মেলনে ইউক্রেনে উদ্ধার হওয়া অনুরূপ ড্রোন প্রদর্শনে সহযোগিতা করেছিল।

কোন মন্তব্য নেই