চীনের সহায়তায় হারানো ভূখণ্ড পুনরুদ্ধারে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর অগ্রযাত্রা
চীনের সহায়তায় হারানো ভূখণ্ড পুনরুদ্ধারে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর অগ্রযাত্রা
অনলাইন ডেস্ক || টাইমস এক্সপ্রেস ২৪
মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সম্প্রতি হারানো ভূখণ্ড পুনরুদ্ধারে নতুন করে শক্তিশালী অভিযান শুরু করেছে। বিমান হামলার পাশাপাশি তারা এখন চীনের প্রযুক্তি ও রাজনৈতিক সহায়তার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করছে। ফলে চার বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধ দেশটিতে নতুন মোড় নিয়েছে।
গত বছর চীনের সীমান্তসংলগ্ন কিয়াকমে শহরটি দখল করেছিল তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ)। কিন্তু মাত্র তিন সপ্তাহের ব্যবধানে শহরটি ফের দখল নেয় জান্তা বাহিনী। এর মাধ্যমে চীন সীমান্ত পর্যন্ত সড়কপথের নিয়ন্ত্রণ আবার তাদের হাতে ফিরে এসেছে।
টিএনএলএ মুখপাত্র তার পার্ন লা বিবিসিকে বলেন, “এই বছর জান্তা বাহিনীর সৈন্যসংখ্যা, ভারী অস্ত্র এবং বিমান শক্তি—সবই বেড়েছে।”
জান্তা বাহিনীর সাফল্যের মূল কারণগুলো
১️ চীনা ড্রোন প্রযুক্তি: চীন থেকে হাজার হাজার ড্রোন সংগ্রহ করে জান্তা বাহিনী এখন আকাশপথে মারাত্মকভাবে শক্তিশালী।
২️ বিমান হামলা বৃদ্ধি: চীন ও রাশিয়ার যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে তারা টানা বোমা হামলা চালাচ্ছে। এতে এ বছরই অন্তত এক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে বলে ধারণা।
৩️ বাধ্যতামূলক সেনা নিয়োগ: নতুন করে ৬০ হাজার সৈন্য যুক্ত হয়েছে, যা যুদ্ধে সংখ্যাগত সুবিধা দিয়েছে।
বিশ্লেষক সু মন বলেন, “ড্রোন হামলার নির্ভুলতা বেড়েছে, বিরোধীরা এতে বিপুল ক্ষতির মুখে।”
অন্যদিকে, চীনের কঠোর সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের কারণে বিরোধী পক্ষের জন্য ড্রোন যন্ত্রাংশ সংগ্রহ করাও কঠিন হয়ে পড়েছে।
চীনের প্রত্যক্ষ ভূমিকা
চীন এখন মিয়ানমারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে ও ডিসেম্বরের নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে জান্তাকে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছে। সামরিক প্রধান মিন অং হ্লাইং ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের একাধিক বৈঠকে নির্বাচন পরিচালনায় অর্থ ও প্রযুক্তিগত সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
গবেষক মরগান মাইকেলস বলেন, “চীন কোনো রাষ্ট্রীয় পতন চায় না। তারা সীমান্তের স্থিতিশীলতা ও ভারত মহাসাগর পর্যন্ত প্রবেশাধিকার রক্ষায় জান্তাকে সমর্থন করছে।”
মানবিক ক্ষয়ক্ষতি ও ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা
জান্তা বাহিনী বর্তমানে বাণিজ্যিক ও কৌশলগত শহরগুলোতে মনোযোগ দিচ্ছে—বিশেষত যেখানে নির্বাচন হওয়ার কথা। শুধু শুষ্ক অঞ্চলেই প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সহিংসতা ও চীনের প্রত্যক্ষ সমর্থন মিয়ানমারের রাজনৈতিক সমাধানের পথকে আরও দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।

কোন মন্তব্য নেই