এক বছরে বন্ধ ১৮৫ পোশাক কারখানা, বেকার লাখো শ্রমিক: হুমকিতে রপ্তানি খাত

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
এক বছরে বন্ধ ১৮৫ পোশাক কারখানা, বেকার লাখো শ্রমিক: হুমকিতে রপ্তানি খাত
নিজস্ব প্রতিবেদক | টাইমস এক্সপ্রেস ২৪
ঢাকা, ২৩ অক্টোবর ২০২৫:
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে নেমেছে বড় ধরনের সংকট। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, জ্বালানিসংকট, শ্রমিক আন্দোলন ও উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় গত এক বছরে ১৮৫টিরও বেশি গার্মেন্ট কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বেকার হয়েছেন লাখেরও বেশি শ্রমিক। শুধু গত এক মাসেই ২৪টির বেশি কারখানা বন্ধ হয়ে বেকার হয়েছেন ৬৫ হাজারের বেশি শ্রমিক।
অর্থনৈতিক চাপে আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে টানা দুই মাস পোশাক রপ্তানি কমেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই ধারা অব্যাহত থাকলে রপ্তানি খাত বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
সম্প্রতি পোশাক খাতের অন্যতম বড় প্রতিষ্ঠান প্যাসিফিক জিনস গ্রুপ একযোগে আটটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। শ্রমিকদের সংঘর্ষ ও অস্থিতিশীল কর্মপরিবেশের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি। বন্ধ হওয়া কারখানাগুলো হলো—প্যাসিফিক জিনস-১, প্যাসিফিক জিনস-২, প্যাসিফিক অ্যাটায়ারস, প্যাসিফিক অ্যাকসেসরিজ, প্যাসিফিক ওয়ারকওয়্যারস, ইউনিভারসেল জিনস, এইচটি ফ্যাশন ও জিনস ২০০০। এসব কারখানায় কর্মরত ছিলেন প্রায় ৩৫ হাজার শ্রমিক।
এর আগে নাসা গ্রুপের ১৬টি গার্মেন্ট কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়, ফলে আরও প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক বেকার হন। বন্ধ কারখানাগুলোর মধ্যে আশুলিয়ায় ১০টি, গাজীপুরে ২টি, চট্টগ্রাম ইপিজেডে ২টি ও কুমিল্লা ইপিজেডে ২টি কারখানা রয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার আত্মগোপনে গেলে এবং পরবর্তীতে গ্রেপ্তার হলে তার প্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা তৈরি হয়। শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাকি পড়তে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত একে একে কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যায়।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশন (বিজিবিএ) সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন পাভেল বলেন,
“গত এক বছরে ১৮৫টির বেশি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। গ্যাস ও বিদ্যুৎসংকটে উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে রপ্তানিতে। গত দুই মাসেই রপ্তানি কমেছে প্রায় ৫ থেকে ৬ শতাংশ।”
বিজিবিএর দাবি, সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কার্যকর হস্তক্ষেপ ছাড়া তৈরি পোশাক খাতের টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।
কোন মন্তব্য নেই