উত্তর কোরিয়ার হুমকির জবাবে ‘দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্র’ হিউনমু-৫ মোতায়েন করছে দক্ষিণ কোরিয়া
উত্তর কোরিয়ার হুমকির জবাবে ‘দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্র’ হিউনমু-৫ মোতায়েন করছে দক্ষিণ কোরিয়া
টাইমস এক্সপ্রেস ২৪ ডেস্ক:
উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক হুমকির জবাবে দক্ষিণ কোরিয়া তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হিউনমু-৫ মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে। এ বছরের শেষ নাগাদ মোতায়েন শুরু হবে এই ‘দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্র’, যা প্রায় ৩৬ টন ওজনের এবং আট টন ওয়ারহেড বহন করতে সক্ষম। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন গিউ-ব্যাক জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়ার হুমকির মুখে ‘ভয়াবহতার ভারসাম্য’ বজায় রাখতে যথেষ্ট সংখ্যক হিউনমু-৫ তৈরি করা হবে। পাশাপাশি তিনি আরও শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিরও ঘোষণা দিয়েছেন।
হিউনমু-৫ ক্ষেপণাস্ত্রটি একটি ‘বাঙ্কার বাস্টার’ ওয়ারহেড বহন করতে পারে, যা মাটির গভীরে থাকা ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার ধ্বংসে সক্ষম। ক্ষেপণাস্ত্রটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৬ মিটার এবং এটি মোবাইল প্ল্যাটফর্ম থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য সার্ফেস-টু-সার্ফেস অস্ত্র। ওয়ারহেডের ওজন অনুযায়ী এর পাল্লা ৬০০ কিলোমিটার থেকে ৫,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (NPT) স্বাক্ষরকারী দেশ হওয়ায় তাদের পারমাণবিক অস্ত্র নেই। ফলে হিউনমু-৫ একটি প্রচলিত (conventional) অস্ত্র।
সিউলের আসান ইনস্টিটিউট ফর পলিসি স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ ড. ইয়াং উক বলেন,
“আমাদের পারমাণবিক অস্ত্র নেই, তাই সবচেয়ে শক্তিশালী প্রচলিত অস্ত্রই আমাদের সেরা প্রতিরক্ষা।”
২০১০ সালে উত্তর কোরিয়ার ‘চেওনান’ যুদ্ধজাহাজ ডুবিয়ে দেয়া ও ইয়েওনপিওং দ্বীপে হামলার পর থেকেই এই ক্ষেপণাস্ত্রের ধারণা আসে। তবে ২০১৭ সালে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত এর উন্নয়ন থেমে ছিল।
বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া প্রতিরক্ষায় ব্যয় করছে উত্তর কোরিয়ার জিডিপির দেড়গুণ এবং বিশ্বের পঞ্চম সামরিক শক্তি হিসেবে অবস্থান করছে। ইউক্রেন যুদ্ধের পর দেশটির অস্ত্র রফতানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, হিউনমু-৫ মোতায়েন কোরীয় উপদ্বীপে ভারসাম্য তৈরি করতে পারবে কি না, নাকি নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করবে—তা সময়ই বলে দেবে।
তবে ড. ইয়াং উকের মতে,
“উত্তর কোরিয়া হয়তো প্রকাশ্যে একে তুচ্ছ বলবে, কিন্তু তাদের নেতৃত্বের ভেতরে ভয় কাজ করবে—এতে কোনো সন্দেহ নেই।”

কোন মন্তব্য নেই