চীনের ‘ব্রেইন ক্যামেরা’: মানুষের মতো চিন্তা করে এমন প্রযুক্তি নিয়ে আতঙ্কে বিজ্ঞানীরা
চীনের ‘ব্রেইন ক্যামেরা’: মানুষের মতো চিন্তা করে এমন প্রযুক্তি নিয়ে আতঙ্কে বিজ্ঞানীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক | টাইমস এক্সপ্রেস ২৪
প্রযুক্তির নতুন বিস্ময় উন্মোচন করেছে চীন। এবার তারা তৈরি করেছে এমন এক ‘ব্রেইন ইন্সপায়ার্ড ভিশন চিপ’ (Brain-Inspired Vision Chip), যা শুধু ছবি তোলে না — বরং মানুষের মতো চিন্তা–ভাবনা ও সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতের রোবট, ড্রোন এবং স্বচালিত গাড়ির বিশ্বে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে। তবে একই সঙ্গে, এর বুদ্ধিমান আচরণ ও মানবসদৃশ প্রতিক্রিয়া বিজ্ঞানী মহলে নতুন এক উদ্বেগও তৈরি করেছে।
📸 মানুষের চোখ ও মস্তিষ্কের মতো কাজ করে ‘ব্রেইন ক্যামেরা’
চীনের বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এই বিশেষ চিপ মানুষের চোখ ও মস্তিষ্কের দৃষ্টিপ্রক্রিয়া অনুকরণ করে কাজ করে।
যেভাবে মানুষের চোখ কোনো দৃশ্য দেখে এবং মস্তিষ্ক সেটির অর্থ বোঝে, ঠিক তেমনি এই চিপও দৃশ্য বিশ্লেষণ করে নির্ধারণ করতে পারে—এটি গাছ, গাড়ি, মানুষ, রোবট নাকি অন্য কিছু।
এক সেকেন্ডে প্রায় ১০,০০০ ফ্রেম বিশ্লেষণ করতে পারে এই চিপ—অর্থাৎ চোখের পলক পড়ার আগেই বুঝে ফেলে সামনে কী ঘটছে।
🌙 কম আলোতেও কার্যকর, নিজেই নেয় সিদ্ধান্ত
বৃষ্টি, কুয়াশা বা অন্ধকার—কোনো কিছুই এই ‘বুদ্ধিমান ক্যামেরা’কে বাধা দিতে পারে না। কম আলোতেও এটি স্পষ্টভাবে বস্তু চিনতে সক্ষম।
চিপটি অপ্রয়োজনীয় তথ্য বাদ দিয়ে শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় ডেটা সংরক্ষণ করে, ফলে গতি ও নির্ভুলতা বজায় থাকে।
🚗 স্বচালিত গাড়ি, রোবট ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিপ্লব
বর্তমানে এই প্রযুক্তি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে স্বচালিত গাড়িতে। গাড়ির “চোখ” হিসেবে এটি রাস্তায় বাধা শনাক্ত করে এবং সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেয়—ব্রেক দেওয়া বা ঘুরে যাওয়ার প্রয়োজন আছে কিনা।
এছাড়া রোবট ও ড্রোনেও এটি ব্যবহৃত হচ্ছে, যাতে তারা নিজে থেকেই পথ চিনে চলতে ও বিপদ এড়াতে পারে।
শিল্প কারখানায় খারাপ পণ্য শনাক্ত করা এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে এক্স-রে বা এমআরআই ছবির সূক্ষ্ম ভুল ধরার ক্ষেত্রেও এই চিপ বিপ্লব ঘটাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
🧬 “চিন্তা করে এমন মেশিন”: ভবিষ্যতের নতুন বাস্তবতা
ত্সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল বলছে, এই প্রযুক্তি মেশিনকে এক ধরনের “সচেতনতা” (Awareness) প্রদান করছে।
তারা মনে করছেন, আগামী দিনের ক্যামেরা হয়তো কেবল ছবি তুলবেই না—বরং আমাদের সঙ্গে ভাবতেও পারবে।
গবেষকদের ভাষায়—“একদিন হয়তো এই ক্যামেরা বলবে, ‘একটু সরে দাঁড়াও, পেছনে গাড়ি আসছে।’”
কোন মন্তব্য নেই