জাতিসংঘ আইসিজে: গাজায় ত্রাণে ইসরাইল বাধা দিতে পারবে না, ফিলিস্তিনিদের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করতে হবে

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
জাতিসংঘ আইসিজে: গাজায় ত্রাণে ইসরাইল বাধা দিতে পারবে না, ফিলিস্তিনিদের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করতে হবে
টাইমস এক্সপ্রেস ২৪
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) গাজায় ত্রাণ প্রবেশে ইসরাইল কোনো বাধা দিতে পারবে না এবং ফিলিস্তিনিদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করতে হবে বলে গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে। যদিও রায় আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক নয়, আইসিজে এটিকে “বড় ধরনের আইনি ও নৈতিক গুরুত্ব”পূর্ণ বলে উল্লেখ করেছে।
রায়ের পরই ইসরাইল তা প্রত্যাখ্যান করেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রায়ের গুরুত্ব তুলে ধরে আশা প্রকাশ করেছেন, ইসরাইল তা মানবে। আইসিজের সভাপতি ইউজি ইওয়াসাওয়া জানিয়েছে, জাতিসংঘ ও বিভিন্ন সংস্থার ত্রাণ কার্যক্রম সহজ করতে ইসরাইল বাধ্য।
আইসিজে স্পষ্ট করে জানিয়েছে, ইউএনআরডব্লিউএ (ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা) যুদ্ধের সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত নয়। ফলে ইসরাইল এই সংস্থার ত্রাণ কার্যক্রমে বাধা দিতে পারবে না।
ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রায় প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, “আইসিজের পরামর্শমূলক রায় আন্তর্জাতিক আইনের আড়ালে রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগের চেষ্টা।” তবে আদালত ইসরাইলের অভিযোগও প্রত্যাখ্যান করেছে।
রায়ের পর নরওয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করবে যাতে ইসরাইল গাজায় ত্রাণ প্রবেশে আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়।
ফিলিস্তিনের প্রতিনিধি আম্মার হিজাজি বলেছেন, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এখনই ইসরাইলের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে, যাতে রায় বাস্তবায়িত হয়।”
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, ১০ অক্টোবর থেকে গাজায় ৫৩০টি ট্রাক প্রবেশ করেছে, যার মধ্যে ৬,৭০০ টনের বেশি খাদ্য রয়েছে, যা প্রায় ৫ লাখ মানুষের দুই সপ্তাহের খাবারের যোগান দেয়। যদিও দৈনিক খাদ্য সরবরাহ লক্ষ্য ২ হাজার টনের তুলনায় কম, গড়ে ৭৫০ টন খাদ্য প্রবেশ করছে।
আইসিজে মনে করিয়ে দিয়েছে, ক্ষুধাকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার আন্তর্জাতিক আইনে নিষিদ্ধ। ইসরাইল একটি দখলদার শক্তি হিসেবে স্থানীয় জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণে বাধ্য এবং কোনোভাবেই ত্রাণে বাধা দিতে পারবে না।
এর আগে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে আইসিজে জানিয়েছিল, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলের দখল ‘অবৈধ’ এবং তা যত দ্রুত সম্ভব শেষ করতে হবে। এছাড়া, দক্ষিণ আফ্রিকা দায়ের করা আরেকটি মামলায় আইসিজে বিবেচনা করছে, যেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, গাজায় ইসরাইলের কর্মকাণ্ড ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘ গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে।
অপরদিকে, হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও হামাস নেতা মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
কোন মন্তব্য নেই