আরিচা-খয়েরচর নৌরুট চালু হলে বদলে যাবে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ চিত্র - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

আরিচা-খয়েরচর নৌরুট চালু হলে বদলে যাবে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ চিত্র

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

 আরিচা-খয়েরচর নৌরুট চালু হলে বদলে যাবে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ চিত্র


টাইমস এক্সপ্রেস ২৪

এক সময় দেশের সবচেয়ে ব্যস্ততম নৌরুট ছিল আরিচা-কাজিরহাট। কিন্তু পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুট চালুর পর দেড় যুগ ধরে বন্ধ থাকে ঐতিহ্যবাহী এই রুট। ২০২১ সালে পুনরায় চালু হলেও আগের সেই প্রাণচাঞ্চল্য আর ফেরেনি। এখন নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে আরিচা-খয়েরচর নৌরুট প্রকল্প, যা উত্তরাঞ্চলের জন্য সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিতে পারে।

প্রকল্পের প্রস্তাব অনুযায়ী, মানিকগঞ্জের আরিচা ঘাট থেকে পাবনার খয়েরচর (খাসেরচর) পর্যন্ত এই নৌরুট চালু হলে ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ অনেক সহজ হবে। বর্তমানে ঢাকার সঙ্গে পাবনার সড়ক দূরত্ব প্রায় ২৩৩ কিলোমিটার, যেখানে আরিচা-খয়েরচর নৌপথে এ দূরত্ব কমে দাঁড়াবে মাত্র ১৪৭ কিলোমিটার। এতে যাতায়াতের সময় কমবে, জ্বালানি খরচও অর্ধেকে নেমে আসবে।

১৯৬০-এর দশকে আরিচা ঘাট ছিল দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মূল প্রবেশদ্বার। প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার যানবাহন এবং ৫০ হাজার মানুষ এ ঘাট দিয়ে যাতায়াত করতেন। যমুনা সেতু চালু হওয়ার পর নাব্যতা কমে যাওয়ায় ২০০১ সালে ফেরিঘাট স্থানান্তর করা হয় পাটুরিয়াতে। এর ফলে আরিচা ঘাটের ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস নামে, বেকার হয়ে পড়ে শত শত শ্রমজীবী মানুষ।

তবে ২০২৪ সালের ৯ জুন বিআইডব্লিউটিএ উত্তরাঞ্চলের ১৬টি জেলার সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ সহজ করতে আরিচা-খয়েরচর নৌরুট প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠায়। প্রস্তাব অনুযায়ী, সেখানে ৪টি ফেরিঘাট, ১টি লঞ্চঘাট ও ১টি স্পিডবোট ঘাট স্থাপন, টার্মিনাল ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের পরিকল্পনা রয়েছে। বাজেট ধরা হয়েছে ১১০ কোটি টাকা।

পাবনার ব্যবসায়ী কাইয়ুম পোদ্দার বলেন, “আমাদের যাতায়াতে অনেক সময় লাগে। যদি খয়েরচরে ঘাট হয়, তাহলে ব্যবসার কাজে ঢাকায় যাতায়াত অনেক সহজ হবে।”

ট্রাকচালক জামাল মোল্লা বলেন, “আরিচা-কাজিরহাট ফেরি পার হতে অনেক সময় লাগে। খয়েরচর ঘাট চালু হলে সময় ও খরচ দুই-ই বাঁচবে।”

আরিচা এলাকার বাসিন্দা সুমন মিয়া বলেন, “একসময় ঘাট ছিল প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর। নতুন ঘাট হলে ব্যবসা-বাণিজ্য আবার ফিরে আসবে। এটি আমাদের স্বপ্ন।”

বিআইডব্লিউটিএর আরিচা অফিসের সহকারী প্রকৌশলী মো. রিসাদ আহমেদ জানান, “প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মানুষের যাতায়াত সহজ হবে এবং সময় বাঁচবে। এটি উত্তরাঞ্চলের জন্য একটি মাইলফলক হতে পারে।”

বিআইডব্লিউটিসির বাণিজ্য ব্যবস্থাপক আব্দুল সালাম বলেন, “আরিচা-খয়েরচর নৌরুট চালু হলে উত্তরাঞ্চলের প্রায় ১৬টি জেলার মানুষ সহজে ঢাকায় যাতায়াত করতে পারবে। পাশাপাশি যমুনা সেতু ও রেল সেতুর ওপর চাপও কমে যাবে।”

সামাজিক সংগঠন ‘জনস্বার্থে আমরা’র সভাপতি ইয়াসিনুর রহমান বলেন, “এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে শুধু নৌপথ নয়, দেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”

কোন মন্তব্য নেই